কেডিএর প্লট ভাগবাটোয়ারার তদন্ত-বিচার কিছুই হয়নি
Published: 23rd, May 2025 GMT
খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) ময়ূরী আবাসিক প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ বেশ পুরোনো। ২০২০ ও ’২২ সালে দুই দফায় কোনো বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই আবাসিক প্রকল্পের কোটি টাকা মূল্যের ৪৭টি প্লট আওয়ামী লীগ নেতা, মন্ত্রী, এমপি ও তৎকালীন সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ভাগ করে নেন। এসব প্লটে অনিয়ম বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। হয়নি কোনো তদন্ত বা বিচার। তবে নিয়ম না মানায় সাংবাদিক ফারজানা রূপা এবং সাবেক এমপি গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণার প্লট বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে কেডিএ।
কেডিএ থেকে জানা গেছে, গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ময়ূরী আবাসিক প্রকল্পের প্লট বিক্রির আবেদন শুরু হয় ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট; চলে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। আবেদন জমা পড়ে ২ হাজার ৩৬০টি। ২০১৬ সালে প্লট বরাদ্দ দেওয়া শুরু হয়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত কয়েক ধাপে মোট ৬২৯ প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সূত্রটি জানায়, ২০২০ সালে প্রকল্পের অবকাঠামোর কাজ শেষ হলে বেশ কিছু প্লট ফাঁকা পাওয়া যায়। নিয়ম অনুযায়ী, আবেদনকারীদের মধ্য থেকে ওই প্লট বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হয়নি। ওই বছর ৩২টি প্লট আওয়ামী লীগ নেতা ও কেডিএ কর্মকর্তারা ভাগ করে নেন। বিষয়টি নিয়ে যেন কেউ আপত্তি না তোলেন, এ জন্য তৎকালীন গণপূর্তমন্ত্রীর এপিএস, উপসচিব, দুদক সচিবসহ সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদেরও প্লট দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখেন কেডিএর তৎকালীন পরিচালক ড.
পরে ২০২২ সালে আরেক দফা প্লট ভাগাভাগি হয়। ওই সময় সাবেক এমপি আকতারুজ্জামান বাবু, সাবেক এমপি রুনু রেজা ও তাঁর ৩ স্বজন, কেডিএর বর্তমান সচিব মো. বদিউজ্জামান, পূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপসচিব নায়লা আহমেদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানাসহ কয়েকজন প্লট পান।
২০১৫ সালের ১৮ আগস্টের কেডিএর ৫৩২তম বোর্ড সভায় প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীদের প্লট বরাদ্দ নীতিমালা অনুমোদিত হয়। ওই নীতিমালায় বলা হয়, প্রেষণে আসা কর্মকর্তাদের চাকরির মেয়াদ এক বছর পূর্ণ হলে তারা কর্মকর্তা কোটায় আবেদন করতে পারবেন। পরে ছয় মাসের মধ্যেই এ নিয়ম বদলে ফেলেন তৎকালীন কর্মকর্তারা। ২০১৬ সালের ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় প্রেষণে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে ‘চাকরিকাল এক বছর পূর্ণ’ হলের স্থলে ‘চাকরিরত অবস্থায় থাকলে’ সংযোজন করা হয়। এর মাধ্যমে কেডিএতে প্রেষণে এলেই প্লট নিশ্চিত হয়।
কেডিএর বৈষয়িক বিভাগের বেশির ভাগ কর্মকর্তা নতুন যোগ দিয়েছেন। পুরোনো প্লট ভাগবাটোয়ারা বিষয়ে তারা কেউই কোনো তথ্য দিতে পারেননি। কেডিএর সিনিয়র বৈষয়িক কর্মকর্তা আবদুল্লাহ কবি সাদ জানান, প্লট নিয়ে কোনো তদন্তের বিষয়ে কোনো চিঠি পাইনি। অডিটে ফারজানা রূপার আয় সনদ জাল এবং গ্লোরিয়া ঝর্ণা নির্ধারিত সময়ে টাকা পরিশোধ না করায় তাদের প্লট দুটি বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, অবিলম্বে তদন্ত করে অনিয়মের মাধ্যমে নেওয়া প্লট বাতিল ও জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব ক এমপ কর মকর ত র রহম ন তৎক ল ন প রকল প ক ড এর তদন ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ও সচিবকে না পেয়ে কক্ষে তালা দিলেন সেবাপ্রার্থীরা
ছবি: প্রথম আলো