আসিফ মাহমুদের সাবেক এপিএসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও এনআইডি বন্ধে দুদকের আবেদন
Published: 24th, May 2025 GMT
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনের বিদেশে যাওয়া ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ শনিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
দুদকের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তদবির, টেন্ডার–বাণিজ্যসহ অনিয়মের মাধ্যমে শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার দুদক কার্যালয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে অভিযোগের বিষয়ে আরও যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন হওয়ায় তাঁর বিদেশ যাওয়া এবং এনআইডি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করা হয়েছে।
দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, মোয়াজ্জেম হোসেনের ব্যাংক হিসাব, সম্পত্তি ও অন্যান্য লেনদেনের বিষয়ে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার।
আরও পড়ুনসাবেক এপিএস মোয়াজ্জেমের বিষয়ে দুদককে তদন্তের অনুরোধ করেছি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ২৫ এপ্রিল ২০২৫আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। ১৪ আগস্ট একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোয়াজ্জেম হোসেনকে নিজের এপিএস হিসেবে নিয়োগ দেন তিনি। ২১ এপ্রিল মোয়াজ্জেমকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানানো হয়।
আরও পড়ুনস্বাস্থ্য উপদেষ্টার সাবেক ও বর্তমান পিও দুদকে হাজির হননি২০ মে ২০২৫অবশ্য পরদিন সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পদত্যাগের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর আগে ও পরে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে তদবির–বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তোলেন কেউ কেউ।
আরও পড়ুনদুই উপদেষ্টার সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও এনসিপি নেতাকে ডেকেছে দুদক১৫ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘দুই বছর ধরে ঘুরছি, তবু এনআইডি ঠিক হলো না’
দুই বছর ধরে জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) মা–বাবার নাম সংশোধনের জন্য চট্টগ্রামের নির্বাচন কার্যালয়ে ঘুরছেন মো. সাইফুল ইসলাম। কিন্তু এত দিনের চেষ্টার পরও মেলেনি সমাধান।
নগরের উত্তর কাট্টলীতে বসবাসকারী সাইফুল পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। জীবিকার তাগিদে যখন যা পান, তা-ই করেন। কয়েক বছর ধরে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সে লক্ষ্যে পাসপোর্ট করতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর এনআইডিতে বাবা ও মায়ের নাম ভুল। এরপর পাসপোর্ট কার্যালয়ের পরামর্শে এনআইডি সংশোধনের জন্য প্রায় দুই বছর আগে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আবেদন করেন তিনি।
গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয় প্রাঙ্গণে কথা হয় সাইফুলের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। প্রথম আলোকে সাইফুল বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র করার সময় বাবার ডাকনাম কবির আহম্মদ আর মায়ের নাম বুলুয়ারা বেগম দিয়েছিলাম। কিন্তু বাবার আসল নাম এস এম তৈয়বুর রহমান ও মায়ের নাম বুলু আক্তার। এ কারণে সংশোধনের আবেদন করেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।’
সাইফুল জানান, জাতীয়তা সনদ, প্রত্যয়নপত্র, মা-বাবার এনআইডির অনুলিপি, ভাইয়ের এনআইডি, এমনকি মা-বাবার নিকাহনামাও জমা দিয়েছেন। তবু ফল মেলেনি।সাইফুল জানান, জাতীয়তা সনদ, প্রত্যয়নপত্র, মা–বাবার এনআইডির অনুলিপি, ভাইয়ের এনআইডি, এমনকি মা–বাবার নিকাহনামাও জমা দিয়েছেন। তবু ফল মেলেনি। তিনি বলেন, ‘দুই বছর ধরে ঘুরছি। কত কাগজ দিলাম, কত লোক ধরলাম। এখন পর্যন্ত কিছু হলো না। ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে।’
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ে অনেকেই ভিড় করেন প্রতিদিন