জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ ও জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে সারা দেশে দলের জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলোকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার কর্মসূচি পালন করার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই কর্মসূচি পালনের আগে নবগঠিত জেলা ও উপজেলা সমন্বয় কমিটিগুলোকে নিজ নিজ কার্যালয়ে প্রথম কার্যনির্বাহী সভা করার নির্দেশ দিয়েছেন এনসিপির আহ্বায়ক মো.

নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ নির্দেশের কথা জানিয়েছে এনসিপি। দলের পক্ষ থেকে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।

এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) এনসিপির নবগঠিত বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সমন্বয় কমিটিগুলোকে নিজ নিজ কার্যালয়ে প্রথম কার্যনির্বাহী সভা আয়োজন করার জন্য দলের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন নির্দেশনা দিয়েছেন। সভা শেষে জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ ও জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা সমন্বয় কমিটিগুলোকে কর্মসূচি পালন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।

এনসিপির এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ২২ জুন নির্বাচন কমিশনে নতুন দলের নিবন্ধনের শেষ দিন। নিবন্ধনের শর্ত পূরণের জন্য এনসিপি ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয়সংখ্যক জেলা-উপজেলা কমিটি করেছে, দলীয় কার্যালয়ও নেওয়া হচ্ছে।

কমিটিগুলো করার পর এখনো কোনো কর্মসূচি হয়নি। নিবন্ধনের আবেদনের আগে দলীয় কমিটি ও কার্যালয়গুলোকে সক্রিয় এবং চাঙা করার জন্য কার্যনির্বাহী সভা ও কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্মসূচিগুলো হবে মূলত সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি।

উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত দেশের ৩৩ জেলা ও ১২৬ উপজেলায় সমন্বয় কমিটি করেছে এনসিপি। কমিটিগুলোর মাধ্যমে পরে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কম ট গ ল ক ও উপজ ল এনস প র য় কম ট র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের

ছাত্র আন্দোলনের ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।

সোমবার (১৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবির কথা জানায় সংগঠনটি।

সংগঠনটির মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা দিবস আছে, বিজয় দিবস আছে, কিন্তু আমাদের মুক্তি ঘটেনি। তাই ঐতিকহাসিক ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে। এ ছাড়াও জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার আগে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।”

আরো পড়ুন:

বেগম রোকেয়া পদকের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান

নিরাপদ খাদ্য দিবস শনিবার: ‘নিরাপদ খাদ্য উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি কমায়’

তিনি বলেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মৌলিক সংস্কার এবং ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না করে দেশে যদি নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘গাদ্দার’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এই সনদে ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের নিরিখে বৈষম্যবিরোধী ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা উপধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সাংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত এবং লিঙ্গের ন্যায্য শরিকানা নিশ্চিত করতে হবে। যেখানে বলা হবে- আমরা বাংলাদেশের জনগণ এই ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান সম্পল্প করেছি।”

সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চ ১৩টি প্রস্তাবনা তুলে ধরে, যা জুলাই সনদের কার্যকর প্রয়োগ ও জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে।

প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করা সব শহীদকে রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ সন্তান ঘোষণা করতে হবে;  যেসব জুলাই যোদ্ধার স্থায়ী অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; ফ্যাসিবাদী আমলে সংঘটিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটারবিহীন অবৈধ নির্বাচন বাতিল করে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

এছাড়া ফ্যাসিবাদী আমলের সকল মন্ত্রী, এমপি ও দোষী আমলাসহ রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের বিচারের আওতায় এনে অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ জব্দ করে তা শহীদ ও আহতদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে; দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা রক্ষায় ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে দেশি-বিদেশি অপশক্তি চিহ্নিত করতে হবে; রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কার করতে হবে যাতে ফ্যাসিবাদ আর স্বৈরতান্ত্রিকতা কখনও ফিরে না আসে; ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে।

বাকি দাবিগুলো হলো- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী কল্যাণ রাষ্ট্রের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে; সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত ও লিঙ্গের ন্যায্য অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই সনদের ভাষাগত দুর্ব্যবহার পরিহার করে জনসাধারণের জন্য সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে এবং সনদ চূড়ান্ত করার পূর্বে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

আগামী ২৫ জুনের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করা না হলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে ‘লাল মার্চ’ করার ঘোষণাও দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজা ইস্যুতে বিবিসির কপটতা বিশ্বব্যবস্থারই প্রতিফলন 
  • ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের
  • সিদ্ধিরগঞ্জ থানা জাসাস’র ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন