জুলাই ঘোষণাপত্র, সনদ ও বিচারের দাবিতে কাল জেলা-উপজেলায় এনসিপির কর্মসূচি
Published: 18th, June 2025 GMT
জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ ও জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে সারা দেশে দলের জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলোকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার কর্মসূচি পালন করার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই কর্মসূচি পালনের আগে নবগঠিত জেলা ও উপজেলা সমন্বয় কমিটিগুলোকে নিজ নিজ কার্যালয়ে প্রথম কার্যনির্বাহী সভা করার নির্দেশ দিয়েছেন এনসিপির আহ্বায়ক মো.
গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ নির্দেশের কথা জানিয়েছে এনসিপি। দলের পক্ষ থেকে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) এনসিপির নবগঠিত বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সমন্বয় কমিটিগুলোকে নিজ নিজ কার্যালয়ে প্রথম কার্যনির্বাহী সভা আয়োজন করার জন্য দলের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন নির্দেশনা দিয়েছেন। সভা শেষে জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ ও জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা সমন্বয় কমিটিগুলোকে কর্মসূচি পালন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।
এনসিপির এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ২২ জুন নির্বাচন কমিশনে নতুন দলের নিবন্ধনের শেষ দিন। নিবন্ধনের শর্ত পূরণের জন্য এনসিপি ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয়সংখ্যক জেলা-উপজেলা কমিটি করেছে, দলীয় কার্যালয়ও নেওয়া হচ্ছে।
কমিটিগুলো করার পর এখনো কোনো কর্মসূচি হয়নি। নিবন্ধনের আবেদনের আগে দলীয় কমিটি ও কার্যালয়গুলোকে সক্রিয় এবং চাঙা করার জন্য কার্যনির্বাহী সভা ও কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্মসূচিগুলো হবে মূলত সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত দেশের ৩৩ জেলা ও ১২৬ উপজেলায় সমন্বয় কমিটি করেছে এনসিপি। কমিটিগুলোর মাধ্যমে পরে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কম ট গ ল ক ও উপজ ল এনস প র য় কম ট র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)