যশোরে তিন বছর পর করোনায় একজনের মৃত্যু
Published: 18th, June 2025 GMT
যশোরে তিন বছর পর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার সকালে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মৃত ব্যক্তির নাম শেখ আমির হোসেন। তিনি বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর গ্রামের শেখ মকছেদ আলীর ছেলে।
এ সম্পর্কে ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক বলেন, যশোরে দ্বিতীয় পর্যায়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে এ জেলায় ২০২২ সালের মাঝামাঝি করোনায় মৃত্যু হয়েছিল। প্রায় তিন বছর পর আবার মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।
এদিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে কোভিড পরীক্ষার কোনো কিট নেই। ফলে এই হাসপাতালে কোভিড পরীক্ষা হচ্ছে না। জেলায় র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। করোনা পরীক্ষার জন্য যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরটিপিসিআর ল্যাব নতুনভাবে চালু করা হয়নি।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে কিট না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হোসাইন সাফায়েত বলেন, ‘কয়েক বছর আগের করোনা পরীক্ষার কিছু কিট রয়েছে, যা মেয়াদোত্তীর্ণ। কিটের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে এই হাসপাতালের জন্য দুই হাজার কিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি। দুই–এক দিনের মধ্যে তা হাতে পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৬ জুন পেটের ব্যথা নিয়ে আমির হোসেন যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। শ্বাসকষ্ট হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হয় এবং শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
হোসাইন সাফায়েত বলেন, ‘পিত্তথলিতে পাথর নিয়ে এক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হন। পেটের ব্যথা তীব্র হতে থাকে, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। তখন বাইরের একটি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে করোনা পরীক্ষা করানো হলে ফল পজেটিভ আসে। এরপর তিনি মারা যান।’
হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালে বর্তমানে এক নারী করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে তিনটি কেবিন প্রস্তুত করে রাখা রয়েছে। যেখানে ছয় রোগী একসঙ্গে থাকতে পারবেন।
হোসাইন সাফায়েত আরও বলেন, এ বছর এখনো করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দুই থেকে একজন। যে কারণে তিনটি কেবিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী করোনা ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে উড়োজাহাজে সহযাত্রীর থাপ্পড়ের পর খোঁজও মিলছে না যাত্রীর: পরিবারের দাবি
ভারতে একটি উড়োজাহাজের ফ্লাইটে সহযাত্রীকে থাপ্পড় দিয়েছেন আরেক যাত্রী। এরপর থাপ্পড়ের শিকার ওই যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। নিখোঁজ ওই যাত্রীর নাম হুসেইন আহমেদ মজুমদার (৩২)।
ইন্ডিগো বিমানের একটি ফ্লাইটে মাঝ–আকাশে হোসেইন প্যানিক অ্যাটাকের (আতঙ্কিত) শিকার হওয়ার পর এক যাত্রী তাঁকে চড় মারেন। চড় দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম হাফিজুল রহমান বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
হুসেইন ইন্ডিগোর ফ্লাইটে মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুম্বাই থেকে কলকাতা হয়ে আসাম রাজ্যের শিলচর যাচ্ছিলেন। উড়োজাহাজে ওঠার পর তাঁর হঠাৎ আতঙ্কজনিত সমস্যা (প্যানিক অ্যাটাক) হয়। হঠাৎ ভয় পাওয়া এবং শারীরিক প্রতিক্রিয়া থেকে প্যানিক অ্যাটাক বোঝা যায়।
ঘটনার সময় উড়োজাহাজের দুই কেবিন ক্রু হুসেইনকে নামতে সাহায্য করছিলেন। ঠিক তখনই পাশের আসনে বসা এক যাত্রী হঠাৎ তাঁকে চড় মারেন। অন্য একজন যাত্রী এ ঘটনার ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, কেবিন ক্রুরা ওই যাত্রীকে শান্ত থাকতে বলেন এবং অন্য একজন যাত্রী প্রতিবাদ করে আক্রমণকারী ব্যক্তিকে বলছেন, ‘আপনি কেন তাঁকে মারলেন।’
কলকাতায় উড়োজাহাজ থেকে নামার পর নিরাপত্তাকর্মীরা হুসেইনকে চড় মারার ঘটনায় অভিযুক্ত হাফিজুল রহমানকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে হুসেইন আসামের শিলচরে না পৌঁছানোয় পরিবারের লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁরা জানান, হুসেইন বাড়িতে আসেননি, ফোনও করেননি। এমনকি তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
পরিবার সূত্রে জানায় যায়, হুসেইন মুম্বাইয়ের এক হোটেলে কাজ করতেন। এর আগেও বহুবার এই একই রুটে বাড়ি ফিরেছেন। গতকাল সকালে কিছু আত্মীয় শিলচর বিমানবন্দর থেকে হুসেইনকে নিতে গেলেও সেখানে তাঁকে পাননি। পরে ভাইরাল ভিডিও দেখে তাঁরা তাঁকে চিনে ফেলেন এবং ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি।
পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, ইন্ডিগো বা বিমানবন্দরের কোনো কর্তৃপক্ষই হুসেইনের বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। বিষয়টি তারা সিআইএসএফকেও জানিয়েছেন এবং কাছাড়ের উদারবন্দ থানায় তাঁর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন।
ইন্ডিগো এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উড়োজাহাজে ঝামেলা করায় ওই যাত্রীকে সিআইএসএফ ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তবে বিবৃতিতে চড় খাওয়া হুসেইনের বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।