আশুলিয়ায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ ৬, ধসে পড়েছে দেয়াল
Published: 18th, June 2025 GMT
সাভারের আশুলিয়ায় গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়েছেন ছয় জন। এতে ধসে পড়েছে দ্বিতল ভবনটির এক পাশের দেয়াল। দগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ জুন) সকাল ৭টার দিকে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের মণ্ডল মার্কেট সংলগ্ন বাধিয়ারপাড় এলাকার একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আশুলিয়ার নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) হারুন অর রশিদ বলেন, “আমাদের হাসপাতালে দগ্ধ পাঁচ জনকে আনা হয়েছিল। এর মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চার জনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ভগ্নিপতির বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া যুবকের মরদেহ পড়েছিল রাস্তায়
কিট সংকটে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা বন্ধ
নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নেওয়া দগ্ধরা হলেন- জাহানারা (৪০), জুয়েল (২৪), শান্ত (২১), হাওয়া আক্তার (২৩) ও জহুরুল (২৬)। বিস্ফোরণে নাসির নামে আরো একজন দগ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জিরাবো মডেল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সায়েম মাসুম বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সিলিন্ডার লিকেজ হয়ে ঘরে জমে থাকা গ্যাস আগুনের সংস্পর্শে আসার কারণে বিস্ফোরণ হয়েছে। সিলিন্ডারটি অক্ষত অবস্থায় পেয়েছি আমরা।”
মিলি নামে বাড়িটির দ্বিতীয় তলার এক বাসিন্দা বলেন, “সকাল ৭টার দিকে রান্না করছিলাম। এসময় বিস্ফোরণের শব্দ পাই। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ঘরের ফ্রিজ থেকে শুরু করে সব এলোমেলো হয়ে যায়। ঘরের ফ্যান খুলে পড়ে। বারান্দায় গিয়ে দেখি নিচতলায় এই অবস্থা। পরে আমরা সবাই ছাদে চলে যাই। স্থানীয়রা আগুন নেভালে নিচে নেমে আসি।”
জেসমিন নামে বাড়িটির আরেক বাসিন্দা বলেন, “বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ঘরের জানালার গ্লাস ভেঙে পড়ে। কোনোভাবে আমরা বাড়িটি থেকে বেরিয়ে আসি।” এসময় তিনি, তার স্বামী ও ছেলে সামান্য আহত হয়েছেন বলেও জানান এই নারী।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, “মূলত লিকেজ থেকে জমে থাকা গ্যাসের বিস্ফোরণ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মোট ছয় জন দগ্ধ হওয়ার খবর আমরা পেয়েছি। দগ্ধদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস