রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতির প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ পদ্ধতিতে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য থেকে শুরু করে ৭০ হাজার জনপ্রতিনিধির ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই প্রস্তাবে একমত হবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিষয়ে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়, তাহলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের সাথে আমরা একমত হব। তবে সেখানে ভোটারদের সাইজ (পরিসর) ইউপি মেম্বার পর্যন্ত যাবে, নাকি ইউপি চেয়ারম্যান পর্যন্ত সীমিত রাখা হবে, এটা নিয়ে আমরা আলোচনার পক্ষে।’

জামায়েতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, ‘আমরা অতীতে দেখেছি, সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে লোকাল গভর্নমেন্ট ইলেকশনেও তাঁরা (তাঁদের প্রতিনিধি) নির্বাচিত হন। সুতরাং এখানে ৭০ হাজার বা ৭০ লক্ষ লোকের মধ্যে কোনো ব্যবধান নাই। তাই আমরা বলেছি, কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে লোকাল গভর্নমেন্ট ইলেকশন (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) হতে হবে। যেখানে ফেয়ার (নিরপেক্ষ) ইলেকশনের মাধ্যমে মেম্বাররা ইলেকটেড (নির্বাচিত) হবেন।’

জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) বিষয়ে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলই নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেছে বলে দাবি করেছেন জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ‘এর অন্যান্য মডিউল ও ফাংশনাল বিষয় নিয়ে আলোচনা শেষ হয়নি। যেসব বিষয়ে দ্বিমত থাকবে, সে বিষয়গুলো নোটসহ গণভোটের জন্য দিয়ে দেওয়া উচিত হবে। জনগণই এসব ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’

অবশ্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে। আলোচনায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী ছাড়াও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ইসলামী আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ, সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ষ ট রপত প রস ত ব ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব : আলী রীয়াজ

আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে, আমরা জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব।’

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অসমাপ্ত আলোচনা শেষ করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় এ কথা বলেন আলী রীয়াজ। আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোড অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ আলোচনা শুরু হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়েছেন বিএনপি, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা। তবে অংশ নিতে দেখা যায়নি জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে আমরা জুলাই মাসের মধ্যেই জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব। সে ক্ষেত্রে আপনারা (রাজনৈতিক দলগুলো) যে সহযোগিতা দেখাচ্ছেন সে জন্য রাজনীতিক দলগুলোর প্রতি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। "

আলী রীয়াজ বলেন, "আমরা আশা করছি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে, আমাদের পক্ষে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। আমরা চেষ্টা করছি সমস্ত বিষয়গুলোতে যাতে আমরা সকলে একমত না হলেও সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন বিষয়ে মতে আসতে পারি।" তিনি বলেন, সব বিষয়ে আমরা হয়তো একমত হতে পারব না, কিন্তু তারপরেও আমরা জাতি এবং রাষ্ট্রের স্বার্থে যেন খানিকটা হলো ছাড় দিয়ে এক জায়গায় আসতে পারি। সবগুলি বিষয়ে শেষ করতে পারব এমন নিশ্চয়তা নেই।’

আজকের আলোচনায় সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, নারী প্রতিনিধিত্ব সহ বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।

এ ছাড়া দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ),প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া সহ বেশ কিছু বিষয় আলোচনার কথা রয়েছে। আগামী ১৭, ১৮ এবং ১৯ জুন তিন দিন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার কথা রয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত রয়েছেন আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, সফররাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার পক্ষে গণসংহতি আন্দোলন
  • দুই কমিশন নারী আসন নিয়ে চাপাচাপি করছে: ইসলামী আন্দোলন
  • দুটি বিষয় বাদে সংসদে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন এমপিরা
  • বাংলাদেশের ইতিহাসে আজকে একটা উল্লেখযোগ্য দিন: জোনায়েদ সাকি
  • সংস্কার নিয়ে আমাদের প্রস্তাবের বাইরে বহু প্রস্তাবে একমত হয়েছি: সালাউদ্দিন আহমদ
  • প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পদ্ধতি পরিবর্তনে দুটি দল ছাড়া অন্যরা একমত: আলী রীয়াজ
  • আসনের সংখ্যানুপাতে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পদ বিরোধী দল পাওয়ার বিষয়ে সবাই একমত: সালাউদ্দিন আহমদ
  • জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব : আলী রীয়াজ
  • ফেব্রুয়ারিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সংস্কারের তাগিদ