ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেলের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। নোবেলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) ইলা মনি। তিনি বলেন, মামলার বাদী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। নোবেলের জামিনে তাঁর আপত্তি নেই বলে আদালতকে তিনি লিখিতভাবে জানান। শুনানি নিয়ে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন।
১৯ জুন নোবেলকে বিয়ে করার অনুমতি দেন আদালত। পরে সেদিনই কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে তাঁদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এ সময় নোবেল ও সেই নারী এবং দুজনের পক্ষ থেকে চারজন সাক্ষী উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করলেন নোবেল২০ জুন ২০২৫ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে গত ২০ মে থেকে কারাগারে আছেন গায়ক নোবেল। সেদিন নোবেলের আইনজীবী আদালতের কাছে দাবি করেছিলেন, যে নারী ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন, তিনি তাঁর স্ত্রী। তিনি ধর্ষণ করেননি। ওই নারীকে স্ত্রী হিসেবে দাবি করলেও আদালতে কাবিননামা জমা দিতে পারেননি নোবেলের আইনজীবী জসীম উদ্দিন। ওই নারীকে সাত মাস ধরে একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয় নোবেলের বিরুদ্ধে।
ডেমরা থানার পুলিশ আদালতকে লিখিতভাবে জানিয়েছিল, সাত বছর আগে (২০১৮) ফেসবুকে নোবেলের সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। তিনি মোহাম্মদপুরের একটি ভাড়া বাসায় থেকে রাজধানীর একটি কলেজে স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষে পড়তেন। তাঁদের মধ্যে কথাবার্তা হতো। গত বছরের ১২ নভেম্বর ডেমরায় নোবেলের স্টুডিও দেখানোর জন্য ওই নারীকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত আটটার দিকে তিনি (নারী) বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নেন নোবেল। পরে মুঠোফোনটি ভেঙে ফেলেন। এরপর তাঁকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের সেই ভিডিও ধারণ করেন নোবেল। পরে ভয় দেখিয়ে সাত মাস ধরে ওই বাসায় তাঁকে আটকে রাখা হয়।
আরও পড়ুনধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করার অনুমতি পেলেন নোবেল১৮ জুন ২০২৫পুলিশ আদালতকে আরও জানিয়েছিল, ওই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তাঁর (নারী) মা-বাবা ঢাকায় আসেন। পরে ওই নারীকে নোবেলের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওই ন র ক
এছাড়াও পড়ুন:
নিউজিল্যান্ডে সন্তানদের হত্যা করে স্যুটকেসে লুকিয়ে রাখার ঘটনায় মা দোষী সাব্যস্ত
নিউজিল্যান্ডে দুই সন্তানকে হত্যা করে তাদের মৃতদেহ স্যুটকেসে লুকিয়ে রাখার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এক নারী। প্রায় দুই সপ্তাহ বিচারকাজ চলার পর আজ মঙ্গলবার অকল্যান্ড হাইকোর্টে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন।
৪৪ বছর বয়সী ওই নারীর নাম হাকইয়ুং লি। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
আদালতে লির আইনজীবীরা যুক্তি দেখিয়েছিলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় তাঁদের মক্কেল মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তাঁর স্বামীর ক্যানসারে মৃত্যু হওয়ার কয়েক মাস পর এ ঘটনা ঘটেছিল। তবে সরকারি কৌঁসুলি দাবি করেন, লির কর্মকাণ্ড পরিকল্পিত ছিল।
২০২২ সালে অকল্যান্ডের একটি পরিবার লির সন্তানদের মরদেহগুলো খুঁজে পায়। পরিবারটি অকল্যান্ডের নিলাম থেকে একটি পরিত্যক্ত গুদামের জিনিসপত্র কিনেছিল। সেখানকারই একটি স্যুটকেসে দেহাবশেষগুলো খুঁজে পায় তারা। ধারণা করা হয়, কয়েক বছর ধরে দেহাবশেষগুলো গুদামে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল।
লি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার উলসান থেকে গ্রেপ্তার হন। সে বছরের শেষদিকে তাঁকে নিউজিল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হয়।
মামলা চলাকালে আদালতে বলা হয়, লির সন্তানদের মৃতদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল যে তাদের হত্যা করা হয়েছে।
ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকের বরাতে কৌঁসুলিরা বলেছেন, ওই শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। তবে ঠিক কী পদ্ধতিতে করা হয়েছে, তা নিশ্চিত নয়। তাদের বিষণ্নতারোধী একটি ওষুধ দেওয়া হয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
কৌঁসুলিরা বলছেন, লি যথেষ্ট বুঝেশুনেই কাজ করেছেন। সন্তানদের মৃতদেহ লুকিয়ে রাখা, নিজের নাম পাল্টানো এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরে যাওয়ার মতো সিদ্ধান্তগুলো তিনি সুচিন্তিতভাবেই নিয়েছিলেন।আদালতে বলা হয়েছে, লি ২০১৭ সালের আগস্টে একটি ফার্মেসি থেকে ওই ওষুধ কেনার জন্য প্রেসক্রিপশন নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর স্বামী ইয়ান জোর ক্যানসার ধরা পড়ার পাঁচ মাস পরের ঘটনা এটি।
লির আইনজীবীর দাবি, স্বামীর মৃত্যুর পরে তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায় এবং তিনি মনে করতে শুরু করেন যে সবার একসঙ্গে মরে যাওয়াটাই ভালো। আর সে ভাবনা থেকেই তিনি নিজেকে ও সন্তানদের মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তিনি ওই ওষুধের ভুল ডোজ নেওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান। ঘুম ভাঙার পর তিনি দেখেন তাঁর সন্তানেরা মারা গেছে।
নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডের একটি পরিত্যক্ত গুদাম থেকে ২০২২ সালে লির সন্তানদের মরদেহ উদ্ধার হয়