বরিশালে হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের উচ্ছেদপ্রক্রিয়ায় স্থিতাবস্থা
Published: 23rd, September 2025 GMT
বরিশাল সিটি করপোরেশনের হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের উচ্ছেদপ্রক্রিয়ায় তিন মাসের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ আদেশ দেন।
‘উচ্ছেদ–আতঙ্কে হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা’ শিরোনামে ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোতে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটিসহ এ নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উৎপল বিশ্বাস, সৌমিত্র সরদার, বিপ্লব কুমার পোদ্দার ও হিন্দোল নন্দী সোমবার রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বিভাস চন্দ্র বিশ্বাস, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী অনুপ কুমার সাহা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জামিলা মমতাজ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
অন্যতম রিট আবেদনকারী উৎপল বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘বরিশাল সিটি করপোরেশনের হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের কলোনি থেকে উচ্ছেদ করা থেকে বিরত থাকতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে চার আইনজীবী রিটটি করেন। ১৭০ বছর ধরে তাঁরা ওখানে আছে। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দিয়ে উচ্ছেদপ্রক্রিয়ায় তিন মাসের জন্য স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন। ফলে যে যেভাবে আছে, সেভাবে থাকবে, অর্থাৎ আপাতত তাদের উচ্ছেদ করা যাবে না। হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের উচ্ছেদের প্রক্রিয়া কেন অবৈধ ঘোষণা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।’
প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্ছেদ-আতঙ্কে আছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের হরিজন সম্প্রদায়ের (সুইপার) একটি কলোনির বাসিন্দারা। নগরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাঠপট্টি এলাকার ওই কলোনিতে ৩৯টি সংখ্যালঘু হরিজন পরিবার বসবাস করে। সম্প্রতি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে, আগামী দুর্গাপূজার পর তাদের এই কলোনি ছেড়ে দিতে হবে। এতে উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন এই কলোনির বাসিন্দারা।
এই উচ্ছেদপ্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে নগর ভবনে গিয়ে কলোনির বাসিন্দারা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বাসিন্দাদের দাবি শতাধিক বছর ধরে তাঁরা নগরের কাঠপট্টি এলাকার এই কলোনিতে বসবাস করে নগরের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের দায়িত্ব পালন করছেন। এত বছরেও তাঁদের উচ্ছেদের চেষ্টা হয়নি। কিন্তু হঠাৎ তাঁদের নতুন জায়গায় যেতে বলা হয়েছে, যা তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রক র য় আইনজ ব বর শ ল
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরে আইনজীবী সমিতির ভবনে ককটেল বিস্ফোরণের প্রতিবাদে মানববন্ধন
ছবি: Shariatpur
ক্যাপশন: জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতি মানববন্ধন করেছে। আজ মঙ্গলবার। ছবি: প্রথম আলো
শরীয়তপুরের চিকন্দী আইনজীবী সমিতির ভবনের দেয়ালে ও আইনজীবী রুবায়েত আনোয়ারের চেম্বারের দরজায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতি এই মানববন্ধন করে।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, সদর উপজেলার চিকন্দী এলাকায় সদর ও জাজিরা সহকারী জজ আদালত। চিকন্দী এলাকার আদালতটি চৌকি কোর্ট হিসেবে পরিচিত। ব্রিটিশ আমল থেকে চিকন্দীতে আদালতটি পরিচালিত হয়ে আসছে। গত রোববার রাত দুইটার দিকে দুর্বৃত্তরা চিকন্দী আইনজীবী সমিতির ভবনের দেয়ালে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ওই সময় দুর্বৃত্তরা চিকন্দী বাজার সড়কের পাশে থাকা আইনজীবী রুবায়েত আনোয়ারের চেম্বারের দরজায় একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। রুবায়েত আনোয়ার বিএনপির চিকন্দী ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান, জজকোর্টের পিপি মনিরুজ্জামান দিপু, জজকোর্টের জিপি সাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।
রুবায়েত আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিকন্দী কোর্ট ও বাজার সড়কের পাশে আমার চেম্বার। চেম্বারে রাতে কোনো মানুষ থাকেন না। রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। আমার সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ নেই। কী উদ্দেশ্যে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা বুঝতে পারছি না। তবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এ ঘটনা ঘটাতে পারে।’
চিকন্দী আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা হঠাৎ কেন আইনজীবী সমিতি টার্গেট করেছে, তা বুঝতে পারছি না। ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে চিকন্দী ও শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। দ্রুততম সময়ে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছি। দুই আইনজীবী সমিতি বসে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেব।’