অবশেষে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ১৩ দিনের সেই নবজাতকের মা শাহাজাদী ও নানি নার্গিস বেগম। সাথে মুক্ত জীবন ফিরে পেয়েছে সেই নবজাতকও।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে তাদের জামিন আবেদন করা হলে বিচারক মো. শরীফ হোসেন হায়দার তা মঞ্জুর করেন। কারাগারে জামিনের কাগজপত্র পৌঁছালে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।

আইনজীবী শেখ রফিকুজ্জামান বলেন, “সকালে আদালতের আদেশের অনুলিপি তুলে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করা হলে আদালত বিশেষ বিবেচনা এবং বিনা জামানতে তাদের জামিন দেন।”

খুলনা কারাগারের জেলার মোহাম্মাদ মুনীর হোসাইন জানান, জামিনের কপি আসার পর শাহাজাদীর মা নার্গিস বেগমকে কারাগার থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয়। এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন শাহাজাদীকেও মুক্ত করে দেওয়া হয়।

এর আগে, রবিবার হাসপাতালে পুলিশের হেফাজতে চিকিৎসাধীন শাহাজাদীকে ছাড়পত্র দেওয়া হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শাহীন কবির তাকে আদালতে হাজির করেন। কিন্তু শাহাজাদীর পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় জামিন শুনানি হয়নি। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

ওইদিন কারাগারে নবজাতক সন্তানকে নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন শাহাজাদী। রাতেই চিকিৎসকদের পরামর্শে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের প্রিজন সেলে পাঠায় কারা কর্তৃপক্ষ। সেখানে পৃথক কেবিনে রেখে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) শাহজাদীর পক্ষে জামিন আবেদন করা হলে জামিন দেয়নি নিম্ন আদালত।

মঙ্গলবার জামিন পেয়ে সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শাহজাদী। তবে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে কোনো খোঁজ না নেওয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর খুলনা মহানগরীর রূপসা এলাকার একটি হাসপাতালে বাগেরহাটের রামপালের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী শাহাজাদীর (৩৬) কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে কন্যা সন্তান। তাদের ঘরে আগে চার কন্যা সন্তান আছে। এবার ছেলে হবে- এমন প্রত্যাশা ছিল স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। ছেলে না হওয়ায় স্ত্রীকে হাসপাতালে ফেলে রেখে চলে যান সিরাজুল। এরপর আর খবর নেননি। 

পরিবারের চাপ ও হতাশার মধ্যে ১৫ সেপ্টেম্বর ঘটে অঘটন। একই হাসপাতাল থেকে আরেক প্রসূতির চার দিন বয়সী ছেলে নবজাতক চুরি হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও পুলিশের তৎপরতায় শাহাজাদীর মা নার্গিস বেগমের (৫৫) কাছ থেকে চুরি হওয়া নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। তখন আটক হন তিনি। 

এ ঘটনায় শাহজাদী ও তার মাকে আসামি করে মানবপাচার আইনে মামলা করা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নার্গিস বেগমকে কারাগারে পাঠানো হয়। শাহজাদী একটি কক্ষে পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। পুলিশের কাছে নার্গিস বেগম দাবি করেন, মেয়ের সংসার টিকিয়ে রাখতে তিনি এমনটা করেছিলেন।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প ট ম বর শ হজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

নিউজিল্যান্ডে সন্তানদের হত্যা করে স্যুটকেসে লুকিয়ে রাখার ঘটনায় মা দোষী সাব্যস্ত

নিউজিল্যান্ডে দুই সন্তানকে হত্যা করে তাদের মৃতদেহ স্যুটকেসে লুকিয়ে রাখার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এক নারী। প্রায় দুই সপ্তাহ বিচারকাজ চলার পর আজ মঙ্গলবার অকল্যান্ড হাইকোর্টে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন।

৪৪ বছর বয়সী ওই নারীর নাম হাকইয়ুং লি। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

আদালতে লির আইনজীবীরা যুক্তি দেখিয়েছিলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় তাঁদের মক্কেল মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তাঁর স্বামীর ক্যানসারে মৃত্যু হওয়ার কয়েক মাস পর এ ঘটনা ঘটেছিল। তবে সরকারি কৌঁসুলি দাবি করেন, লির কর্মকাণ্ড পরিকল্পিত ছিল।

২০২২ সালে অকল্যান্ডের একটি পরিবার লির সন্তানদের মরদেহগুলো খুঁজে পায়। পরিবারটি অকল্যান্ডের নিলাম থেকে একটি পরিত্যক্ত গুদামের জিনিসপত্র কিনেছিল। সেখানকারই একটি স্যুটকেসে দেহাবশেষগুলো খুঁজে পায় তারা। ধারণা করা হয়, কয়েক বছর ধরে দেহাবশেষগুলো গুদামে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল।

লি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার উলসান থেকে গ্রেপ্তার হন। সে বছরের শেষদিকে তাঁকে নিউজিল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হয়।

মামলা চলাকালে আদালতে বলা হয়, লির সন্তানদের মৃতদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল যে তাদের হত্যা করা হয়েছে।

ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকের বরাতে কৌঁসুলিরা বলেছেন, ওই শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। তবে ঠিক কী পদ্ধতিতে করা হয়েছে, তা নিশ্চিত নয়। তাদের বিষণ্নতারোধী একটি ওষুধ দেওয়া হয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

কৌঁসুলিরা বলছেন, লি যথেষ্ট বুঝেশুনেই কাজ করেছেন। সন্তানদের মৃতদেহ লুকিয়ে রাখা, নিজের নাম পাল্টানো এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরে যাওয়ার মতো সিদ্ধান্তগুলো তিনি সুচিন্তিতভাবেই নিয়েছিলেন।

আদালতে বলা হয়েছে, লি ২০১৭ সালের আগস্টে একটি ফার্মেসি থেকে ওই ওষুধ কেনার জন্য প্রেসক্রিপশন নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর স্বামী ইয়ান জোর ক্যানসার ধরা পড়ার পাঁচ মাস পরের ঘটনা এটি।

লির আইনজীবীর দাবি, স্বামীর মৃত্যুর পরে তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায় এবং তিনি মনে করতে শুরু করেন যে সবার একসঙ্গে মরে যাওয়াটাই ভালো। আর সে ভাবনা থেকেই তিনি নিজেকে ও সন্তানদের মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তিনি ওই ওষুধের ভুল ডোজ নেওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান। ঘুম ভাঙার পর তিনি দেখেন তাঁর সন্তানেরা মারা গেছে।

নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডের একটি পরিত্যক্ত গুদাম থেকে ২০২২ সালে লির সন্তানদের মরদেহ উদ্ধার হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বরিশালে হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের উচ্ছেদপ্রক্রিয়ায় স্থিতাবস্থা
  • আমেরিকার আইনে ডিম ছোড়া কি অপরাধ, বাংলাদেশে শাস্তি কী
  • জামিনে মুক্তির পর কাঁদলেন মা শাহাজাদী, বাদীর কাছে চাইলেন ক্ষমা
  • নিউজিল্যান্ডে সন্তানদের হত্যা করে স্যুটকেসে লুকিয়ে রাখার ঘটনায় মা দোষী সাব্যস্ত
  • মা-মেয়ে হত্যার বিচার দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মোমবাতি প্রজ্বালন
  • খুলনায় কারাগার থেকে সেই প্রসূতি ও নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি, জামিন নামঞ্জুর
  • আমিনুলের চিঠি হাইকোর্টে স্থগিত, দেড় ঘণ্টা পর আবার বহাল
  • আইনজীবীর জেরায় জুনায়েদ বললেন, জুলাই আন্দোলনে ষড়যন্ত্রকারী ছিলাম, সত্য নয়
  • ৯ বছর পর কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন, পুরোনো নেতৃত্বেই আস্থা কাউন্সিলরদের