হিলিতে অবৈধ মজুতকৃত ৫ কোটি টাকার চাল-ডাল ও ধান জব্দ
Published: 28th, June 2025 GMT
ভারত থেকে আমদানিকৃত চাল, ডাল ও দেশি ধান অবৈধভাবে মজুত করার অপরাধে দিনাজপুরের হাকিমপুরে (হিলি) মেসার্স মাইক্রো গ্রেইন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ও প্রতিষ্ঠানটির খাদ্যগুদামের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে গুদাম থেকে ৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকার চাল-ডাল ও ধান।
শুক্রবার (২৭ জুন) হাকিমপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো.
আসামিরা হলেন, হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাইক্রো গ্রেইন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবদুল হাকিম মণ্ডল ও প্রতিষ্ঠানটির খাদ্যগুদামের ম্যানেজার হুমায়ুন কবির।
হাকিম মন্ডল জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর মহল্লার বাসিন্দা এবং হুমায়ুন কবির হাকিমপুর পৌরসভার উত্তর বাসুদেবপুর মহল্লার বাসিন্দা
মামলা থেকে জানা যায়, গত বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. সোহেল আহমেদ হাকিম মন্ডলের তিনটি গুদামে অবৈধ মজুতের কথা জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত রায়ের নেতৃত্বে অভিযান চালান।
এসময় গুদামে মেয়াদোত্তীর্ণ ভারত থেকে আমদানিকৃত ৫ হাজার ২৫৮ বস্তায় ১৪৯ দশমিক ৭৭৬ মেট্রিকটন সেদ্ধ চাল, ৬৭০টি বস্তায় ৩২ দশমিক ৮৩০ মেট্রিকটন মসুর ডাল এবং ১৮ হাজার ১৯৪টি বস্তায় ১ হাজার ১৫৫ দশমিক ৭৭৯ মেট্রিকটন ধান জব্দ করা হয়। যার মূল্য প্রায় ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৭ হাজার ২৪৮ টাকা টাকা।
এ ব্যাপারে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন ২০২৩ এর ৪ ধারায় হাকিমপুর থানায় মামলা করেন এই খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হক বলেন, ‘‘অবৈধভাবে চাল-ডাল ও ধান মজুত করার অপরাধে হাকিম মন্ডলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. সোহেল আহমেদ। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’’
ঢাকা/মোসলেম/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মৃত্যুর তিন দিন আগে বাসারকে কী বলেছিলেন মনু মিয়া
একজন মানুষ, যিনি জীবনের অর্ধশত বছর ব্যয় করেছেন অন্যের ‘শেষ ঠিকানার’ মাটি তৈরি করতে। তিনি নিজেও এবার পাড়ি দিলেন সেই অজানা ঠিকানায়। কিশোরগঞ্জের ইটনার সেই মানুষটির নাম মনু মিয়া। বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
বিনা পারিশ্রমিকে কবর খুঁড়তেন, কেবলই মানবতার টানে। তিন হাজারেরও বেশি কবর খুঁড়েছেন। কোনো টাকা না নিয়ে। তাই আশপাশের গ্রামে তাকে সবাই জানতেন ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে।
গত মাসে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন মনু মিয়া। তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় চিকিৎসার জন্য। সে সময় হাসপাতালে তার পাশে ছায়ার মতো ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা খায়রুল বাসার। শুধু পাশে ছিলেন না, মনু মিয়ার জন্য ছুটে গিয়েছিলেন হাসপাতালেও।
শনিবার (২৮ জুন) সকালে ফেসবুকে মনু মিয়ার সঙ্গে তোলা দুটি ছবি পোস্ট করে আবেগভরা স্মৃতিচারণ করেন খায়রুল বাসার। লিখেছেন, ‘মনু কাকা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। এতদিন তিনি ঢাকায় ছিলেন। ৩ দিন আগে উনি বাড়ি ফিরেছেন। বলছিলেন, আগের চেয়ে বেশ সুস্থ আছেন। ওনার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার ইচ্ছা আল্লাহ কবুল করেছেন।সুস্থ থেকেই উনি আল্লাহর ডাকে সাড়া দিতে চেয়েছিলেন, সেই দোয়াও চাইতেন।’
তিনি আরো লিখেছেন, ‘উনার মহৎ কর্মের ফলস্বরূপ আল্লাহ নিশ্চয়ই উনাকে ওনার স্বপ্নের ঘোড়া উপহার দেবেন। আল্লাহ উনাকে জান্নাতবাসী করুন। সবাই মনু কাকার জন্য দোয়া করবেন।’
মনু মিয়ার জীবনের আরেকটি বড় গল্প ছিল তার সেই প্রিয় ঘোড়া, যা কিনেছিলেন নিজের জমি বিক্রি করে। কবর খুঁড়তে দ্রুত ছুটে যেতে হলে তো যন্ত্রপাতি আর নিজেকে নিয়েই ছোটেন, আর তাতে সবচেয়ে ভরসা ছিল ঘোড়াটি। অথচ ঠিক যখন মনু মিয়া ঢাকায় হাসপাতালে, ঠিক তখনই কেউ বা কারা হত্যা করে তার সেই বিশ্বস্ত সঙ্গীকে। খবরটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে, আর তা চোখে পড়ে অভিনেতা খায়রুল বাসারের।
বাসার তখন ঘোষণা দেন, তিনি মনু মিয়াকে একটি নতুন ঘোড়া কিনে দেবেন। কিন্তু মনু মিয়া তার কাছে ঘোড়া চাননি-চেয়েছিলেন শুধু দোয়া। বলেছিলেন, ‘আমার জন্য দোয়া কইরেন বাবা, আল্লাহ যেন ভালো কইরা বাড়ি ফিরাই।’
সেই দোয়া কবুল হয়েছিল—তিন দিন আগেই বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। আর এবার চিরদিনের জন্য ফিরে গেলেন আরো এক ঠিকানায়-যার জন্য তিনি এত বছর অন্যদের পথ করে দিয়েছেন।
ঢাকা/রাহাত/সাইফ