চট্টগ্রামের হালদা নদীর পাড়ে তামাক চাষ সম্পূর্ণরূপে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

তিন বলেন, “তামাক চাষের কারণে মাটি, পানি ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।” তামাক চাষিদের বিকল্প জীবিকায় উৎসাহিত করতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন উপদেষ্টা।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার মোবারকখীল হ্যাচারি প্রাঙ্গণে হালদা নদী পরিদর্শন এবং স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

ভেড়ামারার পদ্মায় তীব্র ভাঙন, আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ

‘অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করতে স্থলবন্দর ব্যবস্থাপনায় পেশাদারিত্ব প্রয়োজন’

ফরিদা আখতার বলেন, “হালদা নদী দেশের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ। এটি এশিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র। এই নদীতে কার্প জাতীয় মাছ প্রাকৃতিকভাবে ডিম ছাড়ে। এই নদীর স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হলে জাতীয় মৎস্যসম্পদ হুমকির মুখে পড়বে।”

তিনি বলেন, “নদীর নাব্যতা সংকটে কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন বিঘ্নিত হচ্ছে। এই সংকট উত্তরণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করে যাবে।” 

উপদেষ্টা বলেন, “হ্যাচারির সংখ্যা বাড়ানো হলে পোনা উৎপাদন বাড়বে, যা দেশের মৎস্যসম্পদে ইতিবাচক অবদান রাখবে।”

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ‘হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’-এর পরিচালক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড.

মো. জিয়াউদ্দিন সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, চট্টগ্রাম মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. হেমায়েত হোসেন, যুগ্ম-সচিব ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা নদী গবেষক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া, রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ম. নাসিম হায়দার, চট্টগ্রাম নৌ পুলিশ সুপার এএফএম নিজাম উদ্দিন। 

মতবিনিময় সভায় ডিম সংগ্রহকারী, মৎস্যজীবী, স্থানীয় সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। বক্তব্য রাখেন ডিম সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন সওদাগর, মো. ইলিয়াস, রাউজান প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নেজাম উদ্দিন রানা।

এর আগে, উপদেষ্টা ফরিদা আখতার হালদা নদীতে হ্যাচারিতে উৎপাদিত রুই, কাতলা ও মৃগেল পোনা অবমুক্ত করেন এবং সভা শেষে নদী রক্ষায় প্রযুক্তির অংশ হিসেবে ড্রোন ক্যামেরার উদ্বোধন করেন।

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নদ উপদ ষ ট উপদ ষ ট মৎস য আখত র

এছাড়াও পড়ুন:

অস্বাভাবিকভাবে ইলিশের দাম বাড়ানো যাবে না: মৎস্য উপদেষ্টা

ইলিশের দাম যেন কোনো অবস্থাতেই অস্বাভাবিকভাবে না বাড়ে, সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ইলিশের মূল্য ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘ইলিশসহ সকল ধরণের মাছের সরবরাহ ও মূল্য শৃঙ্খলে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের লক্ষ্যে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ফরিদা আখতার বলেন, ইলিশসহ অন্যান্য মাছের দাম সরাসরি ঘোষণা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বরং বাজারে দাম বৃদ্ধির পেছনের কারণগুলো চিহ্নিত করতে পারলে, তাতে কার্যকরভাবে হস্তক্ষেপ করা যায়। ইলিশের আহরণ, মজুদ ও বিপণন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। সরকার নিয়মিত অভিযান চালিয়ে অবৈধ উপায়ে মাছ ধরা ও নিষিদ্ধ জাল ব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। বহু ক্ষেত্রেই আইন অমান্যকারী জেলেদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে। অবৈধ জাল উৎপাদনকারী কারখানাগুলোর বিরুদ্ধেও সরকারের বিভিন্ন বাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে।

উপদেষ্টা বলেন, নাব্যতা কমে যাওয়ার ফলে ইলিশের প্রাকৃতিক চলাচল ও প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এটি উদ্বেগজনক। এ সংকট নিরসনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।

সভায় বক্তারা ইলিশের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়ন, প্রজনন মৌসুমে সুরক্ষা, নদীর নাব্যতা রক্ষা এবং অবৈধ উপায়ে আহরণ রোধে সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অস্বাভাবিকভাবে ইলিশের দাম বাড়ানো যাবে না: মৎস্য উপদেষ্টা