আসছে এআই দিয়ে তৈরি হওয়া ৩০ পর্বের সিরিজ
Published: 2nd, July 2025 GMT
কোরিয়ার বিনোদনজগতের প্রভাবশালী প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিজে ইএনএম এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করেছে অ্যানিমেশন সিরিজ। এই সিরিজের নাম ‘ক্যাট বিগি’। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হয়েছে, এআই তথ্যপ্রযুক্তি দিয়ে তৈরি এটাই তাদের প্রথম কোনো অ্যানিমেশন সিরিজ। গতকাল সোমবার নতুন এই সিরিজের কথা সামনে আসে।
‘প্যারাসাইট’ সিনেমা দিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। এবার তারা প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর উদ্যাপন করতে যাচ্ছে। এই উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানটি ‘কোরিয়ান কনটেন্ট মিটস এআই: হাউ এআই টেকনোলজি ইজ ট্রান্সফরমিং দ্য ফিউচার অব দ্য কনটেন্ট ইন্ডাস্ট্রি’ শিরোনামে আলোচনার আয়োজন করে।
কনটেন্ট তৈরিতে এআই কোনো বিপ্লব ঘটাতে পারে কি না, ভবিষ্যৎ এইআই নির্ভর কনটেন্ট কেমন হতে পারে, সেটাই এখন আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল। পরবর্তী সময়ে কীভাবে তারা এআই দিয়ে সিরিজটি তৈরি করেছে, সেটা প্রকাশ্যে আনে।
শর্ট ফর্ম অ্যানিমেশন সিরিজ ক্যাট বিগি। এই সিরিজের গল্পে দেখা যাবে, একটি বিড়ালের হঠাৎ করেই একটি বাচ্চার সঙ্গে পরিচয় হয়। পরবর্তী সময়ে সেই বিড়াল হয়ে যায় বাচ্চার বাবা। এই বাবা হওয়া নিয়েই ঘটতে থাকে নানা ঘটনা।
সিরিজটি তৈরি করতে ৬ জন বিশেষজ্ঞ সার্বক্ষণিক কাজ করেছেন। সিজে ইএনএম–এর এআই বিজনেস অ্যান্ড প্রোডাকশনের প্রধান বায়েক ইউং-জাং ভ্যারাইটিকে বলেন, ‘৫ মিনিটের একটি থ্রিডি অ্যানিমেশন তৈরির জন্য কখনো তিন থেকে চার মাস সময় পর্যন্ত লাগতে পারে। এই কাজে মূল চ্যালেঞ্জ ছিল অ্যানিমেশন চরিত্রের গতি নিয়ন্ত্রণ করা ও সেটা প্রকাশ করা।’
এদিকে গত ফেব্রুয়ারিতে লেখা থেকে ভিডিও তৈরির মডেল সোরা তৈরির ঘোষণা দেয় চ্যাটজিপিটির মূল প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই। ব্যবহারকারীদের লিখিত বর্ণনা থেকে কাল্পনিক দৃশ্য তৈরি করতে পারে সোরা মডেল। এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন চরিত্র ও আশপাশের দৃশ্যও নিখুঁতভাবে তৈরি করতে পারে মডেলটি।
পরবর্তী সময়ে ধারণা করা হয়, এআই দিয়ে সিনেমাও তৈরি করা যাবে। বিনোদন অঙ্গনে প্রযুক্তির এই নতুন সংযোজন ভবিষ্যতে জায়গা দখল করবে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রিবেকা চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজকেরা। তাঁরা প্রথমবারের মতো ঘোষণা দিয়ে এইআই দিয়ে নির্মিত সিনেমাকেও উৎসবে মূল্যায়ন করবেন।
সিরিজটি ৩০টি পর্ব দিয়ে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বের ব্যাপ্তি ২ মিনিট। সিরিজটি আন্তর্জাতিক দর্শকদের জন্য জুলাইতে ইউটিউবে মুক্তি পাবে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয় সিরিজটি শত ভাগ এআই জেনারেটেড। সিরিজের কাজটি সম্পূর্ণ করতে ৫ মাস সময় লেগেছে। এ সময়ে সিরিজের গল্প চরিত্রের জন্য আলাদা আলাদা ডিজাইন করতে হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নবান্নের পিঠায় সুবাসিত রাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কৃষি অনুষদ প্রাঙ্গণে লেগেছে নবান্নের হাওয়া। ‘হিম হিম শীতের বাতাস, উষ্ণতায় ছড়ায় পিঠা পুলির সুবাস’- প্রতিপাদ্যে প্রাণবন্ত নবান্ন ও ‘পিঠা উৎসব ১৪৩২’ এর আয়োজন করে এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচার এক্সটেনশন সমিতি।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দিনের শুরুতে সকাল ৯টায় ধান কেটে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। নতুন ধান ঘরে তুলেই নবান্ন উদযাপনের যে বৈচিত্র্যময় গ্রামীণ ঐতিহ্য, তারই এক দৃষ্টিনন্দন প্রতিফলন দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ চত্বরে। এরপরই শুরু হয় পিঠার বর্ণিল আয়োজন, যেখানে জড়ো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য মানুষ।
আরো পড়ুন:
রাবিতে শিবিরের নবীনবরণে ডাকসুসহ ৩ ছাত্র সংসদের ভিপি
রাবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আটক
প্রতি বছরের মতো এবারো উৎসবমুখর পরিবেশে পিঠা খাওয়া, নাচ-গান, আনন্দ-উল্লাসে পুরো অনুষদ প্রাঙ্গণ সরগরম হয়ে ওঠে। অনুষদের সামনে থেকে বের হওয়া বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উৎসবকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলে।
এবারের পিঠা উৎসবে ছিল শিক্ষার্থীদের তৈরি প্রায় দেড় শতাধিক পদের পিঠা। বিভিন্ন স্টলে সাজানো ছিল দুধপুলি, চন্দ্রপুলি, নারকেল পুলি, তেলপিঠা, নকশী পিঠা, দুধচিতই, শামুক পিঠা, জামাই পিঠা, পাটি সাপটা, গোলাপ ফুল, সুজির বড়া, মালাই বিহার, ডাবের পুডিং, রূপালি পিঠা, বুটের বরফি, মোহনভোগ, ডিম সুন্দরী, মাছের পিঠা, গাজরের হালুয়া, খিরপুলি, এভাবে দীর্ঘ তালিকা।
এত বৈচিত্র্যময় পিঠার সমাহার যেন একদিনের জন্য কৃষি অনুষদকে পরিণত করেছিল শীতের গ্রামীণ স্বাদবাজারে।
১০ টাকা থেকে শুরু হওয়া বিভিন্ন দামের এসব পিঠা কিনতে উৎসবে আসা শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পিঠার স্বাদ যেমন আনন্দ দিয়েছে, তেমনি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল আয়োজন মুগ্ধ করেছে সবাইকে।
এগ্রোনোমি অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের শিক্ষার্থী জেরিন জেবা বলেন, “নবান্ন উৎসব আমাদের বিভাগের একটি ঐতিহ্য। নতুন ধান উঠলে ঘরে পিঠা তৈরি করার যে সংস্কৃতি, আমরা সেটাকেই ধারণ করি। এই উৎসব আমাদের সাংস্কৃতিক শেকড়ের সঙ্গে যুক্ত রাখে।”
আরেক শিক্ষার্থী ধ্রুব বলেন, “নবান্ন উৎসব আমাদের বিভাগের একটা ঐতিহ্য। ঐতিহ্যকে ধারণ করে আমাদের বিভাগের প্রতি বছর এ আয়োজন করে থাকে। এ আয়োজনের সব থেকে ভালো লাগার জায়গা হলো পিঠা উৎসব। আমরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করছি, বিক্রি করছি। এর মাধ্যমে নবান্নের উৎসবকে আরো বেশি আমেজময় করে তুলেছে।”
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “নবান্ন আমাদের কৃষি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। শিক্ষার্থীদের এমন প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ দেখে আমরা উৎসাহ পাই।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী