কুষ্টিয়ায় যশোর বোর্ডের অধীনে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়েছিল। এরপর তড়িঘড়ি করে সেই প্রশ্ন প্রত্যাহার করে নির্ধারিত প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ ঘটনায় কেন্দ্রসচিব কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার শহরের মিলপাড়া এলাকার কুষ্টিয়া আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা জানাজানির পর জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন।

কেন্দ্রসচিব ও কুষ্টিয়া আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সালাহ উদ্দিন প্রথম আলোর কাছে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার দায় এড়ানো যায় না। দায় থেকেই যায়।’

পরীক্ষাকেন্দ্র সূত্র জানায়, আজ মানবিক বিভাগের যুক্তিবিদ্যা প্রথম পত্রের পরীক্ষা ছিল। সৃজনশীল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ৩০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক (এমসিকিউ) পরীক্ষার প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। কেন্দ্রে কয়েকটি কলেজের মানবিক বিভাগের ১২৬ জন পরীক্ষার্থী ছিলেন। ২টি কক্ষে ৫২ জনের মধ্যে যুক্তিবিদ্যা প্রথম পত্রের গ সেটের ১২১ কোডের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের পরিবর্তে দ্বিতীয় পত্রের গ সেটের ১২২ কোডের প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন দেখার পর বিষয়টি শিক্ষকদের জানান। এ সময় শিক্ষকেরা দ্রুত প্রশ্নগুলো ফেরত নিয়ে নেন। বিষয়টি কেন্দ্রসচিব জানার পর যুক্তিবিদ্যা প্রথম পত্রের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন বিতরণ করেন এবং যথাসময়ে পরীক্ষা শেষ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক বলেন, ঘটনাটি জেলা প্রশাসনকে জানালে একজন ম্যাজিস্ট্রেট কেন্দ্রে আসেন। পরে বিতরণ করা কক্ষের ভেতরে পড়ে থাকা যুক্তিবিদ্যা দ্বিতীয় পত্রের একটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন উদ্ধার করা হয়। ওই প্রশ্নের কোনো ছবি বা কপি বাইরে চলে গেছে কি না, নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। তিনি বলেন, ভুল প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলে কেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে পাঠানো হয়েছিল। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে আবার সঠিক প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়।

আরেক শিক্ষক বলেন, ট্রেজারিতে প্রশ্নের প্যাকেট করার সময় মহাবিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষক দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের অবহেলার কারণে ভুল প্যাকেট তৈরি করা হয়েছিল। এ ছাড়া বিষয় কোড অনুযায়ী প্রশ্নপত্র এনে অধ্যক্ষের সামনে কোড মিলিয়ে প্রশ্নপত্র খোলার নিয়ম। কিন্তু তা না করে প্যাকেট খুলে প্রশ্নপত্র সরাসরি কক্ষে কক্ষে পাঠানো হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পরীক্ষার্থী বলেন, বিতরণ করা নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রের বিষয় কোডের সঙ্গে তাঁদের আজকের বিষয় কোড না মেলায় কক্ষে থাকা শিক্ষকদের জানানো হয়। পরে দ্রুত প্রশ্নগুলো তুলে নেওয়া হয়। কিছুটা দেরিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল।

কেন্দ্রসচিব সালাহ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটে গেছে। এটা ট্রেজারিতে প্রশ্ন প্যাকেটবন্দী করার সময় ভুলবশত হয়েছিল। প্যাকেট খোলার সময় হয়তো কেউ খেয়াল করেননি। এর দায় কেন্দ্রসচিব হিসেবে এড়াতে পারি না। দায় থেকেই যায়।’

জেলা প্রশাসক মো.

তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছিল। ট্রেজারিতে প্রশ্ন প্যাকেটবন্দীর দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ভুল করেছিলেন। এমনকি পরীক্ষায় বিতরণ করার আগে সঠিক কোডের প্রশ্ন আছে কি না, সেটাও দেখার কথা ছিল। কিছুই করা হয়নি। এটা সম্পূর্ণ দায়িত্বহীনতা ও অসচেতন কর্মকাণ্ড।’ তিনি বলেন, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। বোর্ড থেকেও কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ন দ রসচ ব ব তরণ কর হয় ছ ল পর ক ষ এ ঘটন প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

এইচএসসির ফলাফল প্রকাশ, দেখুন ছবিতে

ছবি: দীপু মালাকার

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টাঙ্গাইলের দুই বোন এইচএসসিতে জিপিএ-৫, হতে চান ম্যাজিস্ট্রেট
  • ভিকারুননিসায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে
  • রাজশাহীতে পাসের হার ৫৯ দশমিক ৪০ শতাংশ 
  • এইচএসসিতে শতভাগ পাসের প্রতিষ্ঠান কমেছে হাজারের বেশি
  • এইচএসসিতে সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ
  • সিলেট বোর্ডে ১৯ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পাসের হার, কমেছে জিপিএ-৫
  • এইচএসসিতে শতভাগ জিপিএ-৫ পেল মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ
  • ২১ বছরে এইচএসসিতে সর্বনিম্ন পাস: শিক্ষায় ‘গলদ’ না অন্য কিছু
  • ফল খারাপের কারণ পর্যালোচনা করা হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা
  • এইচএসসির ফলাফল প্রকাশ, দেখুন ছবিতে