ঢাকার ধামরাইয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা মো. মিজানুর রহমান। বিষয়টি জানতে পেরে বাঁধা দিতে গেলে ধস্তাধস্তি হয় স্থানীয় যুবদল নেতা লিটন মাহমুদ মুরাদের সঙ্গে। একপর্যায়ে তাকে পরবর্তীতে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ওই যুবলীগ নেতা। 

পর দিন আগেই ওৎ পেতে থেকে লিটনকে আসতে দেখে তাকে হাতুড়িসহ দেশিয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া দেন মিজানুর তার ভাই ও ভাগ্নে। সেখান থেকে পালিয়ে একটি বসতবাড়িতে আশ্রয় নেন লিটন। এরপর স্থানীয়রা গিয়ে লিটনকে উদ্ধার করে। 

পরবর্তীতে খবর পেয়ে পুলিশ এলে তাদের সামনেই লিটনকে হত্যার হুমকি দিয়ে বলেন, “ওর হাত-পা ভাইঙ্গা তারপর জেলে যামু।” সেখানে থাকা পুলিশ তাকে আটক করে পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ধামরাইয়ের আফিকুল ইসলাম সাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। 

গত ২২ জুলাই ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নের তেলিগ্রাম এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় ধামরাই থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। 

অভিযুক্ত মিজানুর রহমান ধামরাই উপজেলার বালিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। পরবর্তীতে তিনি যুবলীগে যোগ দেন। ধামরাই উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলামের অনুসারী ছিলেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন যুবলীগের জ্যেষ্ঠ এক নেতাও। মিজানুরের ফেসবুক আইডিতেও আওয়ামী লীগের পক্ষে নানা পোস্ট দেখা যায়। 

ভুক্তভোগী লিটন মাহমুদ মুরাদ ধামরাই উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের তেলিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তিনি বালিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেকসহ দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) তেলিগ্রাম এলাকায় গিয়ে কথা হয় এলাকাবাসীর সঙ্গে। তারা জানান, ২০০৬ সালের দিকে ঘোষিত বালিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন মো.

মিজানুর রহমান। পরবর্তীতে তিনি যুবলীগে যোগ দেন। 

লিটন মাহমুদ মুরাদের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২১ জুলাই তেলিগ্রামের ব্রিজের পাশে একটি স্থানে মিজানুর রহমানসহ আরও ৮-১০ জন বৈঠক করেন। তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে একটি মিছিলের প্রস্তুতি নেন। বিষয়টি জানতে পেরে সেখান যান লিটনসহ আরও কয়েকজন। তারা মিজানুরদের বাঁধা দিতে গেলে একপর্যায়ে সেখানে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। 

পরে আশপাশের লোকজন এসে তাদের থামিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। তবে মিজানুর সেসময় লিটনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর পরের দিন বিকেলের দিকে তেলিগ্রাম স্ট্যান্ডের দিকে আসার সময় তিনি দেখতে পান আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা মিজানুর রহমান, তার ভাই মতিয়ার রহমান মুক্তার ও ভাগ্নে স্বপন হোসেন হাতুড়ি নিয়ে তার দিকে ধেয়ে আসছেন। 

আতঙ্কিত হয়ে তিনি দৌড়ে পার্শ্ববর্তী আক্কাস নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেন। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে। পরে তিনি ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের উপস্থিতিতেই মিজানুর রহমান লিটনকে হত্যার হুমকি দেন। একপর্যায়ে পুলিশ মিজানুরকে আটক করে। 

পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। পরে তারা মিজানুরের আওয়ামী লীগের মিছিলের প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন ও লিটনকে হাতুড়িসহ ধাওয়া দেওয়ার বিষয়টিও জানতে পারেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাকে ধামরাই থানায় আফিকুল ইসলাম সাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

লিটনকে হাতুড়িসহ ধাওয়া দেওয়ার ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী তেলিগ্রাম স্ট্যান্ডের মুদি দোকানি আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, “আমি দোকানে ছিলাম। হঠাৎ লিটনকে রাস্তায় আসতে দেখে হাতুড়ি হাতে নিয়ে তাকে মিজান তার ভাই ও ভাতিজা ধাওয়া দেয়। পুলিশ আসার পরও মিজানুর তাকে হুমকিধামকি দিচ্ছিল।”

লিটনকে আশ্রয় দেওয়া আক্কাস আলীর স্ত্রী পঞ্চাশোর্ধ জোসনা বেগম বলেন, “লিটন দৌড়ায়া আসছে, তারে মিজানুর, তার ভাই ও ভাগ্নে হাতুড়ি দিয়ে মারতে আসছে। আমরা লিটনকে দরজা বন্ধ করে বাঁচাই। পরে আশপাশের লোকজন এসে তাকে নিয়া যায়।”

এদিকে এ ঘটনায় এখনও আতঙ্কগ্রস্ত ভুক্তভোগী যুবদল নেতা লিটন মাহমুদ মুরাদ। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের মিছিল ঠেকানোর কারণে যুবলীগ নেতা আমাকে হত্যার চেষ্টা করে। আমাকে হাতুড়ি নিয়ে ধাওয়া দেয়। পালিয়ে আমি রক্ষা পাই। আমি এখনও হুমকির মধ্যে আছি। আমি যুবলীগ নেতা মিজানুরের শাস্তির দাবি জানাই।” 

ছেলেকে হাতুড়ি দিয়ে ধাওয়া দেওয়ার ঘটনায় আতঙ্কিত লিটনের বাবা কফিল উদ্দিন বলেন, “আমার ছেলেকে যুবলীগ নেতা হত্যার চেষ্টা করলো। আমি এর বিচার চাই। জুলাই-আগস্টে তারা মানুষ হত্যা করছে। এখনও সেই চেষ্টা চালাচ্ছে।” 

ধামরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি মিজানুর লিটনকে হুমকি দিচ্ছেন। তাকে আটক করি। তারপর এলাকাবাসীর কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি, মিজানুর আওয়ামী লীগের পক্ষে মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেটি নিয়ে যুবদল নেতা লিটনের সঙ্গে তার বিরোধ হয়। সেদিন রাতে লিটনের বাড়িতে আগুন দেয় মিজানুর। আর পর দিন লিটনকে হাতুড়িসহ ধাওয়া দেয় মিজানুর, তার ভাই ও ভাতিজা। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। পুলিশের উপস্থিতি দেখে মিজানুরের সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। পরে মিজানুরকে আটক করা হয়।” 

ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, “মিজানুর রহমান একসময় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সাবেক সংসদ সদস্য এমএ মালেকের অনুসারী থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলামের সাথে রাজনীতি করতো। গত ১৫ বছর ফ্যাসিস্টের যত অপকর্ম, সেগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিল। সম্প্রতি আওয়ামী লীগ ঘোষিত হরতালের সময় সে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে। এতে স্থানীয় ছাত্রদল যুবদলের নেতাকর্মীরা তাকে বাধা দেয়। পরবর্তীতে ২২ জুলাই সে যুবদলের এক নেতাকে হাতুড়ি দিয়ে ধাওয়া দেয়।” 

তিনি আরো বলেন, “খবর পেয়ে কাওয়ালীপাড়া বাজার তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সেখানে গিয়ে তার হাতে হাতুড়ি দেখতে পায়। তাকে নিবৃত করার জন্য আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, সে ছাত্রলীগ, যুবলীগের প্রভাব ব্যবহার করে নানা অপকর্মে জড়িত ছিল। ৫ আগস্ট ২০২৪ এ থানা এলাকায় মারামারি ও গোলাগুলিতে সে উপস্থিত ছিল বলেও জানা যায়। পরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ধামরাইয়ে সাদ হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে সে কারাগারে রয়েছে। লিটনের করা অভিযোগটিও তদন্ত করা হচ্ছে।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, যুবলীগের ছত্রছায়ায় জালিয়াতি, হয়রানিসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল মিজানুর রহমান। 

স্থানীয় আতাউর রহমান বলেন, “মিজানুরের বোন জামাই আবুল নিজের জমি একটি ব্যাংকে রেখে ঋণগ্রহণ করে। পরে সেই তথ্য লুকিয়ে তিনি জমিটি একজনের কাছে বিক্রি করেন। ওই ব্যক্তি আগের দলিল চাইলে মিজানুর তাকে বলেন, দলিল আতাউরের কাছে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক বিচার বসে। সেখানেও মিজানুর দলিল আতাউরের কাছে রয়েছে দাবি করে তাকে হয়রানি করেন। পরে বিচার সংশ্লিষ্টরা দলিল উদ্ধার করতে গেলে সেটি বালিয়া কৃষি ব্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয়। সেখানে দলিল জমা রেখে আবুল হোসেন ঋণগ্রহণ করেন।”

ঢাকা/আরিফ/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ছ ল র প রস ত ত ম জ ন র রহম ন য বল গ ন ত য বদল ন ত একপর য য় পরবর ত ত য বল গ র হ ত ড় সহ ল ইসল ম খবর প য় ল টন র হত য র ন ল টন আগস ট আওয় ম ব ষয়ট ল টনক

এছাড়াও পড়ুন:

হজরত আদম (আ.) এবং পৃথিবীতে তাঁর প্রথম আবাস

আমাদের এই পৃথিবীতে মানবজাতির ইতিহাস শুরু হয়েছিল নবী হজরত আদম (আ.)-এর মাধ্যমে। আল্লাহ তায়ালা যখন ফেরেশতাদের উদ্দেশে ঘোষণা করলেন, ‘আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে যাচ্ছি,’ তখনই মূলত সূচনা ঘটে মানব ইতিহাসের। ফেরেশতারা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘আপনি কি এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে সেখানে ঝগড়া-ফাসাদ ও রক্তপাত ঘটাবে?’

আল্লাহ তায়ালা তখন বলেন, ‘আমি যা জানি তোমরা তা জানো না।’ (সুরা বাকারা, ৩০-৩৪)

কোরআনে উল্লেখ আছে, আল্লাহ তাঁকে সৃষ্টি করেছেন ‘শুষ্ক কাদামাটি থেকে, যা রূপান্তরিত হয়েছিল কালচে শুকনো মাটিতে।’ (সুরা হিজর, ২৬)

আল্লাহ নিজ হাতে আদম (আ.)-এর অবয়ব তৈরি করেন, তাতে প্রাণ ফুঁকে দেন এবং ফেরেশতাদের আদেশ করেন তাকে সেজদা করতে।

আল্লাহ নিজ হাতে আদম (আ.)-এর অবয়ব তৈরি করেন, তাতে প্রাণ ফুঁকে দেন এবং ফেরেশতাদের আদেশ করেন তাকে সেজদা করতে। সকল ফেরেশতা তাকে সেজদা করলেও শয়তান অহংকারের কারণে তা অস্বীকার করে এবং চিরকালীন অভিশপ্ত হয়ে যায়। এই অহংকার-অবাধ্যতার প্রতিচ্ছবি পরবর্তীকালে মানবজীবনের পরীক্ষার অংশ হয়ে যায়। (সুরা হিজর-এর ব্যাখ্যা, তাফসিরে তাবারি)

জান্নাতে আদম (আ.) শান্তি ও আনন্দে জীবনযাপন করছিলেন। আল্লাহ তাঁর জন্য সঙ্গী হিসেবে সৃষ্টি করলেন হাওয়া (আ.)-কে। উভয়েই জান্নাতের ফলভরা বাগানে নির্ভাবনায় ছিলেন, যতক্ষণ না শয়তান তাঁদের প্রতারণায় ফেলে দেয়। শয়তান আল্লাহর নিষেধ করা গাছের ফল খেতে প্রলুব্ধ করে। ফলে তাদের জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়।

আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সবাই নামো পৃথিবীতে, একে অপরের শত্রু হিসেবে। সেখানে তোমাদের জন্য থাকবে বাসস্থান ও জীবিকা কিছু সময়ের জন্য।’ (সুরা আ’রাফ, আয়াত: ২৪)

আরও পড়ুনআদম (আ.)–কে যে দোয়া শিখিয়ে দেন আল্লাহ ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিভিন্ন তাফসির গ্রন্থের ভাষ্যমতে, আদম (আ.) অবতরণ করেন পৃথিবীর দক্ষিণ প্রান্তে, বর্তমান শ্রীলঙ্কার সেরেন্দিব বা আদম ’স পিক নামক এক পাহাড়ে। ইবনে আব্বাস রা.-এর সূত্রে ইমাম তাবারি ও ইবনে কাসিরের বর্ণনা অনুযায়ী, আদম (আ.)-এর পায়ের ছাপ সেই পাহাড়ের চূড়ায় দীর্ঘকাল ধরে মুসলিম, বৌদ্ধ ও হিন্দু ঐতিহ্যে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে হাওয়া (আ.) অবতরণ করেন আরবের জেদ্দা শহরে, যার নামের অর্থই ‘দাদি’। ইসলামি ইতিহাসবিদ ইমাম সুয়ুতি উল্লেখ করেন, বহুদিন পর তাঁদের পুনর্মিলন ঘটে মক্কার নিকটে আরাফাতের ময়দানে। সে কারণেই এ স্থানটির নাম ‘আরাফাত’, যার অর্থ ‘পরিচিত হওয়া’। (ইমাম তাবারি, তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক; ইমাম ইবনে কাসির, কাসাসুল আম্বিয়া; ইমাম সুয়ুতি, আদ-দুররুল মানসুর)

পৃথিবীতে এসে আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) মানবজীবনের প্রথম অধ্যায় রচনা করেন। আল্লাহ তাদের কৃষিকাজ, পোশাক তৈরির জ্ঞান এবং পারস্পরিক সহাবস্থানের শিক্ষা দেন। ইবনে কাসির (রহ.) বর্ণনা করেন, আদম (আ.) ছিলেন প্রথম নবী ও প্রথম শিক্ষক যিনি তার সন্তানদের আল্লাহর একত্ববাদ ও ন্যায়পরায়ণতার শিক্ষা দিতেন।

মানবজাতির প্রথম সংঘাতও ঘটে তাদের সন্তান কাবিল ও হাবিলের মাধ্যমে। এই ঘটনাই মানবসমাজে ন্যায়বিচার ও অনুশোচনার প্রাথমিক শিক্ষা হিসেবে গৃহীত হয়। (সুরা মায়িদাহ, ২৭–৩১; তাফসিরে ইবনে কাসির; ইমাম নববি, শারহে মুসলিম)

আরও পড়ুনআদম-হাওয়া (আ.)-এর বিয়ে ও সন্তান১৭ নভেম্বর ২০২৪মানবজাতির প্রথম সংঘাতও ঘটে তাদের সন্তান কাবিল ও হাবিলের মাধ্যমে। এই ঘটনাই মানবসমাজে ন্যায়বিচার ও অনুশোচনার প্রাথমিক শিক্ষা হিসেবে গৃহীত হয়।

কোনো কোনো তাফসিরকার উল্লেখ করেছেন, আদম (আ.) পরবর্তীতে মক্কা অঞ্চলে চলে আসেন এবং সেখানে প্রথম ইবাদতের ঘর বাইতুল্লাহ নির্মাণ করেন। ইমাম ইবনে কাসির ও ইমাম কুরতুবির মতে, এই ঘরটি পৃথিবীর প্রথম ইবাদত কেন্দ্র, যা পরে নবী ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.) পুননির্মাণ করেন। (ইবনে কাসির, কিসাসুল আম্বিয়া; কুরতুবি, তাফসিরে সুরা আল-বাকারা)

ইসলামি বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী যদিও পৃথিবীতে আদম (আ.)-এর পদচিহ্ন সম্পর্কিত স্থানগুলোর নির্দিষ্ট কোনো ভিত্তি নেই, তবু শ্রীলঙ্কার আদম’স পিক এখনো বহু মুসলমানের কাছে পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত। অন্যান্য ধর্মের মানুষও এ স্থানকে পবিত্রজ্ঞান করে থাকে।

জেদ্দায় হাওয়া (আ.)-এর সমাধিস্থল হিসেবে পরিচিত স্থানের ঐতিহ্য ইসলামি ঐতিহাসিক সূত্রে বিদ্যমান, যদিও আধুনিক কালে তা চিহ্নিত নয়। আরাফাত ময়দান আজও হজের অন্যতম কেন্দ্র; যেখানে লক্ষ লক্ষ মুসলমান আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-এর পুনর্মিলনের স্মৃতিতে দাঁড়িয়ে তাওবা করে, ক্ষমা প্রার্থনা করে।

আরও পড়ুনহজরত আদম (আ.) বিশ্বের প্রথম নবী০৭ জানুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সোনারগাঁয়ে ভূমি অফিসে গ্রাহক হয়রানী, দেড় মাস ধরে বন্ধ নামজারী
  • জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা
  • হাইকোর্টের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকার অপসারিত
  • হজরত আদম (আ.) এবং পৃথিবীতে তাঁর প্রথম আবাস
  • ডেমোক্র্যাটদের জয়, অর্থনৈতিক সমস্যা—ট্রাম্পের রিপাবলিকানদের জন্য বড় ধাক্কা
  • সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি, পদ ১০ হাজার ২১৯, প্রথম ধাপে ৬ বিভাগে
  • হাসিনার বিচারের রায় হচ্ছে আগামী সপ্তাহে: মাহফুজ