2025-05-01@17:25:59 GMT
إجمالي نتائج البحث: 44
«জ ক ত ফরজ»:
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ফরজাদ হোসেন সজিব নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২টায় কারাগার থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সজিব কারাগারে যমুনা ভবনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে থাকতেন। তবে সজিবের স্বজনরা কারাগারে মারামারিতে আহত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, কারাগারে হঠাৎ বুকে ব্যথার কথা জানালে দ্রুত আসামি ফরজাদ হোসেনকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের জরু বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে দেওয়া মৃত্যু সনদে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, কারাগারে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি।...
কোরআন মজিদে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহর তরফ থেকে সে সকল মানুষের জন্য হজ ফরজ, যারা তা আদায়ের সামর্থ্য রাখে।’ (সুরা আল–ইমরান, আয়াত: ৯৭) হজ সম্পন্নকারীকে ‘হাজি’ বলা হয়।সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য ওমরাহ পালন করা সুন্নত। ওমরাহর ফরজ দুটি—ইহরাম ও তাওয়াফ। ওয়াজিব দুটি—সাফা ও মারওয়া সাঈ করা এবং মাথা মুণ্ডন করা বা চুল কাটা। হজের নিয়তকে ইহরাম বলা হয়। সম্পাদন পদ্ধতি অনুসারে হজ তিন প্রকার—১. ইফরাদ, ২. কিরান ও ৩. তামাত্তু।শুধু হজের ইহরামের নিয়ত করে তা সম্পন্ন করলে একে ‘ইফরাদ হজ’ (একক হজ) বলা হয়। ইফরাদ হজ পালনের জন্য ঢাকা থেকে শুধু হজের ইহরামের নিয়ত করে মক্কা শরিফে পৌঁছার পর তাওয়াফ ও সাঈ করে ইহরাম না ছেড়ে ১০ জিলহজ হজ সম্পন্ন হওয়ার পর ইহরাম ত্যাগ করতে হবে।হজ ও ওমরাহর জন্য একত্রে ইহরামের...
মানব জাতিকে সঠিক পথের দিশা দিতে যুগে যুগে যেসব নবী ও রাসুল আগমন করেছেন, তাদের মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ হলেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)। আমানতদারি ও বিশ্বস্ততার জন্য তিনি বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছিলেন। এ কারণে কাফির, মুশরিকরাও তাঁকে ‘আল আমিন’ বা ‘বিশ্বাসী’ বলে ডাকত। আমানতদার ব্যক্তি সব সমাজেই প্রশংসিত। ‘আমানত’ আরবি শব্দ। এর অর্থ গচ্ছিত রাখা, নিরাপদ রাখা। কারও কাছে কোনো অর্থসম্পদ, বস্তু গচ্ছিত রাখাকে আমানত বলা হয়। যিনি গচ্ছিত বস্তুকে বিশ্বস্ততার সঙ্গে সংরক্ষণ ও যথাযথভাবে হেফাজত করেন এবং মালিক চাওয়ামাত্র কোনো টালবাহানা ছাড়া ফেরত দেন, তাঁকে আল আমিন তথা বিশ্বস্ত আমানতদার বলা হয়। আমানতদারিকে আল্লাহতায়ালা মুমিনের অন্যতম গুণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। পবিত্র কোরআনের সুরা আল মু’মিনুনের ৮ আয়াতে এরশাদ হয়েছে: ‘এরা সেই লোক, যারা আমানতের প্রতি লক্ষ্য রাখে এবং স্বীয়...
হিল্লা বিয়ে করে মেলামেশার পর ফরজ গোসলের এক ফোটা পানির সাথে ৭০টি ফেরেস্তা থাকে এবং একটি শহীদের মর্যাদা পাওয়া যায়। এমন ফতোয়া নিয়ে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের সোমবাড়িয়া বাজার জামে মসজিদের ইমামকে নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইমাম মাওলানা আতিকুল্লাহ তার মসজিদের মোয়াজ্জেম হাফেজ শরীফ উদ্দিনকে এমন ফতোয়া দিয়ে হিল্লা বিয়ে করার জন্য ফুসলানো ও পরে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার থেকে এ বিষয়টি নিয়ে এখারায় গুঞ্জন শুরু হলে রোববার (৬ এপ্রিল) এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা ঝড় বইতে থাকে। এমন বির্তকিত ফতোয়া দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকায় ইমামের পক্ষে-বিপক্ষে দু’টি গ্রুপ মুখমোখি অব্স্থান নিয়েছে। যে কোন সময় সংঘাতে লিপ্ত হতে পারে এলাকাবাসী। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বন্দরের লক্ষনখোলা নাসিক...
আরবি মাসগুলোর মধ্যে শাওয়াল মাস বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। এ মাসের রয়েছে বহুবিধ তাৎপর্য। শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখে ঈদুল ফিতর বা রমজানের ঈদ। পয়লা শাওয়ালে সদকাতুল ফিতর বা ফিতরা আদায় করা এবং ঈদের ওয়াজিব নামাজ পড়া হয়। এই মাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে হজের, এর সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে ঈদের; এর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে রোজা ও রমজানের এবং এর সঙ্গে যোগ রয়েছে সদকা ও জাকাতের।আরবি চান্দ্রবর্ষের দশম মাস শাওয়াল। এটি হজের তিন মাস (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) এর প্রথম মাস। এ মাসের ৭ তারিখে তৃতীয় হিজরি সনে (২৩ মার্চ ৬২৫ খ্রিষ্টাব্দে) ওহুদ যুদ্ধ বিজয় হয়েছিল।শাওয়াল মাসের যেকোনো সময় এই ছয় রোজা আদায় করা যায়। ধারাবাহিকভাবে বা মাঝেমধ্যে বিরতি দিয়েও আদায় করা যায়। উল্লেখ্য, রমজান মাসে ফরজ রোজা ছাড়া অন্যান্য সব রোজার নিয়ত সাহ্রির সময়ের মধ্যেই...
প্রখ্যাত সাহাবি হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন রোজাদারের জন্য দুটি (প্রধান) আনন্দ আছে। একটি ইফতারের সময় অথবা ঈদুল ফিতরের দিন। অপরটি বেহেশতে আপন পরওয়ারদেগারের সাক্ষাৎ লাভের সময়। (তারগীব-১৪৪৯) এ কারণে ঈদের দিন মুমিনের কথা, কাজ, সাক্ষাৎ- সবক্ষেত্রেই আনন্দের প্রকাশ ঘটে থাকে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনটাই করতেন। হযরত আনাস রা. বলেন, বিশ্বনবি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন মদিনায় আসলেন; দেখলেন মদিনাবাসী নির্দিষ্ট দুটি দিনে আনন্দ করে। নবি সা. বললেন, এ দুটি কোন দিবস? তারা বললো, আমরা জাহেলি যুগে এ দিবস দুটিতে খেলাধুলা ও আনন্দ ফূর্তি করতাম। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সা. বললেন, আল্লাহ তাআলা তোমাদের সেই দিবস দুটিকে আরো উত্তম দুটি দিবসের মাধ্যমে পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তা হলো; ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর। (আবু দাউদ) ...
নতুন চাঁদকে আরবিতে বলে ‘হিলাল’। ‘হিলাল’ হচ্ছে এক থেকে তিন তারিখের চাঁদ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো, চাঁদ দেখে রোজা ছাড়ো, ইফতার করো বা ঈদ করো।’ যে সন্ধ্যায় আকাশে চাঁদ দেখা যায়, সে রাত হলো ‘চাঁদরাত’। আরবি চান্দ্র বছরের নবম মাস রমজান এবং দশম মাস শাওয়াল।রমজানের রোজার শেষে পয়লা শাওয়াল ঈদুল ফিতর বা রমজানের ঈদ। শাওয়ালের চাঁদরাত হলো ঈদের রাত। ইসলামে যে রাতগুলো ইবাদতের জন্য এবং ফজিলতে পরিপূর্ণ, সেসবের অন্যতম এই ঈদের রাত। চাঁদরাতের প্রথম সুন্নত ও ফরজে কিফায়া আমল হলো সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে চাঁদ দেখা। চাঁদ দেখলে বা চাঁদ দেখার সংবাদ নিশ্চিত হলে দোয়া পড়া সুন্নত (তিরমিজি ৩৪৫১)রমজানের ঈদের রাতে পুরুষদের মাগরিব, এশা ও ফজর নামাজ মসজিদে জামাতের সঙ্গে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। নারীরাও ফরজ নামাজ...
নতুন চাঁদকে আরবিতে বলে ‘হিলাল’। ‘হিলাল’ হচ্ছে এক থেকে তিন তারিখের চাঁদ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো, চাঁদ দেখে রোজা ছাড়ো, ইফতার করো বা ঈদ করো।’ যে সন্ধ্যায় আকাশে চাঁদ দেখা যায়, সে রাত হলো ‘চাঁদরাত’। আরবি চান্দ্র বছরের নবম মাস রমজান এবং দশম মাস শাওয়াল।রমজানের রোজার শেষে পয়লা শাওয়াল ঈদুল ফিতর বা রমজানের ঈদ। শাওয়ালের চাঁদরাত হলো ঈদের রাত। ইসলামে যে রাতগুলো ইবাদতের জন্য এবং ফজিলতে পরিপূর্ণ, সেসবের অন্যতম এই ঈদের রাত। চাঁদরাতের প্রথম সুন্নত ও ফরজে কিফায়া আমল হলো সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে চাঁদ দেখা। চাঁদ দেখলে বা চাঁদ দেখার সংবাদ নিশ্চিত হলে দোয়া পড়া সুন্নত (তিরমিজি ৩৪৫১)আরও পড়ুনসুরা জুমার সারকথা১৬ এপ্রিল ২০২৩রমজানের ঈদের রাতে পুরুষদের মাগরিব, এশা ও ফজর নামাজ মসজিদে জামাতের সঙ্গে পড়ার চেষ্টা...
রোজা রাখা সওয়াবের কাজ হলেও বেশ কয়েকটি দিন এমন আছে, যখন রোজা রাখাটা পুণ্যের নয় বরং পাপের কাজ। কারণ এই দিনগুলো আনন্দ উদ্যাপনের জন্য। এমন দিন মোট ৫টি।রোজা রাখা নিষিদ্ধ ৫দিন১. ঈদুল ফিতরের দিন, ২. ঈদুল আজহার দিন (জিলহজ মাসের দশ তারিখ), ৩. জিলহজ মাসের এগারো তারিখ, ৪. জিলহজ মাসের বারো তারিখ, ৫। জিলহজ মাসের তেরো তারিখ। শেষের ৩টি দিনকে বলা হয়, তাশরিকের দিন বা আইয়ামে তাশরিক। কেন নিষিদ্ধদুই ঈদের দিন রোজা রাখা নিষিদ্ধ। কারণ ঈদের দিন হলো আনন্দের দিন। এ-ব্যাপারে সকল আলেম ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন। আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ঈদুল ফিতর ও ইদুল আযহার দিন রোজা রাখতে বারণ করেছেন। (বুখারি, হাদিস: ১,৯৯২; মুসলিম, হাদিস: ৮২৭)তাশরিকের দিনগুলোতে রোজা রাখাও নিষিদ্ধ। অর্থাৎ, ঈদুল আজহার পরের তিনদিন (১১, ১২...
পবিত্র রমজান মুসলমানের জীবনে একটি অনন্য সময়। এ সময় মুসলিমরা সিয়াম সাধনার মাধ্যমে নিজের আত্মিক পরিশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করে। তারা দীর্ঘ এক মাস আল্লাহপ্রেমের সাধনা ও সকল প্রকার পাপ থেকে আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। রমজান মাসে নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁর ইবাদত ও সাধনা সম্পন্ন করার চষ্টো করে। তারপরও মানবীয় দুর্বলতা, পারিপার্শ্বিক কারণ ও জীবনের নানা ব্যস্ততার কারণে রোজাদারের নানা ধরনে ভুল-ত্রুটি হয়ে যায়। সদকাতুল ফিতরের মাধ্যমে সে ত্রুটি-বিচ্যুতির প্রতিবিধান হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) সাদকাতুল ফিতর রোজাকে বেহুদা ও অশ্লীল কথাবার্তা ও আচরণ থেকে পবিত্র করার উদ্দেশ্যে এবং মিসকিনদের খাদ্যের ব্যবস্থার জন্য ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি তা (ঈদুল ফিতরের) নামাজের পরে পরিশোধ করে তা অন্যান্য সাধারণ দান-খয়রাতের অনুরূপ হিসাবে গণ্য। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস...
শিশুদের ওপর রোজা ফরজ নয়। পালন করলে সওয়াব পাওয়া যাবে, ছেড়ে দিলে গুনাহ হবে না। (সালেহ আল-উসাইমিন, ফিকহুল ইবাদাত, ১৮৬)ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এক নারী তার শিশু সন্তানকে তুলে ধরে রাসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন, তার জন্য কি হজ আছে? রাসুল (সা.) বললেন, হ্যাঁ, এবং এজন্য সে সওয়াব পাবে। (মুসলিম, হাদিস: ১৩৩৬) কখন শিশুর ওপর রোজা ফরজনামাজের মতোই রোজার বিধান। রাসুল (সা.) বলেছেন, সাত বছর হলে তোমরা তোমাদের সন্তানদের নামাজের আদেশ দাও, দশ বছর হলে তাদের এ জন্য প্রহার কর এবং তাদের মধ্যকার বিছানা পৃথক করে দাও। (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৫; মুসনাদে আহমদ, ২/১৮৭)গ্রহণযোগ্য মত হলো, ফরজ হওয়ার মানদণ্ড হলো সাবালকত্ব। সাবালক হওয়ার আগে কারও ওপর রোজা ফরজ নয়। (লাজনায়ে দায়েমা লিল-ইফতা, ফাতাওয়া নাম্বার ১৭৮৭)আরও পড়ুনরমজানে ৬টি অভ্যাস১০ মার্চ ২০২৫শিশু...
আরবি ‘জাকাত’ শব্দের অর্থ পবিত্রতা, বৃদ্ধি ও উন্নতি। পারিভাষিক অর্থে, নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক কোনো মুসলিম কর্তৃক শরীয়ত নির্ধারিত অংশ দরিদ্র ও অভাবী মানুষের মধ্যে বিতরণ করাকে জাকাত বলে। জাকাতের মাধ্যমে সম্পদের প্রবৃদ্ধি ঘটে বলে জাকাতকে জাকাত নামকরণ করা হয়েছে। (হিদায়া, জাকাত অধ্যায়) যেসব সম্পদের জাকাত দিতে হয় ইসলামী শরিয়ত মানুষের জীবন ধারনের জন্য অপরিহার্য সম্পদের ওপর জাকাত আবশ্যক করেনি। তাই সব ধরনের সম্পদে জাকাত ফরজ নয়। শুধু সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা, পালিত পশু (নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী) এবং ব্যবসাপণ্যে জাকাত ফরজ। (সুনানে আবি দাউদ : ১/২৫৫; সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২২৫৮) আরো পড়ুন: জাকাতের গুরুত্ব ও বিধান রমজানে নেক আমল ও সমাজসংস্কার অলঙ্কার ছাড়া সোনা-রুপার অন্যান্য সামগ্রীর ওপরও জাকাত ফরজ। মৌলিক প্রয়োজন থেকে উদ্বৃত্ত টাকা-পয়সা নিসাব...
জাকাত ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের অন্যতম ফরজ বিধান এবং ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম আর্থিক উৎস। ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্রে জাকাতের ভূমিকা বহুমুখী। এটি শুধু আর্থিক ইবাদত নয়, বরং এর মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রকাশ করা হয়। জাকাত আদায়ের মাধ্যমে সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তা দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জাকাত এমন একটি বিধান যা পূর্ববর্তী আসমানি ধর্মেও ছিল। যেমন ঈসা (আ.) সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যেখানেই আমি থাকি না কেন, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যত দিন জীবিত থাকি তত দিন নামাজ ও জাকাত আদায় করতে।’ (সুরা মারইয়াম, আয়াত : ৩১) কোরআন ও হাদিসে জাকাত পবিত্র কোরআনের অসংখ্য জায়গায় আল্লাহ জাকাত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে...
যে মসজিদে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়, তাকে জুমার মসজিদ বলা হয়। ‘জুমা’ শব্দটি ‘জমা’ শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ একত্র হওয়া বা একত্র করা।কোরআন মজিদে সুরা জুমা নামে একটি সুরা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহকে মনে রেখে তাড়াতাড়ি করবে ও বেচাকেনা বন্ধ রাখবে। এই তোমাদের জন্য ভালো, যদি তোমরা বোঝো। নামাজ শেষ হলে তোমরা বাইরে ছড়িয়ে পড়বে ও আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে এবং আল্লাহকে বেশি করে ডাকবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯-১০)। জুমার তাৎপর্য তাফসিরবিদেরা বলেন, সুরা জুমার আগের সুরার নাম হলো সুরা ‘সফ’। সফ অর্থ কাতার বা সারি। জুমার নামাজ সারিবদ্ধভাবে আদায় করা হয়। এতে ঐক্য ও শৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, এতে এই ইঙ্গিত রয়েছে।সুরা...
রোজা হলো নৈতিক শক্তি, চারিত্রিক দৃঢ়তা ও শুদ্ধাচারের পরম শিক্ষা। পবিত্র রমজানে রোজা অবস্থায় দিনের বেলায় রোজাদার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সব ধরনের বৈধ পানাহার ও যৌনসম্ভোগ থেকে বিরত থাকেন।নির্জন–নিরালায় ও গোপন স্থানে অতি সংগোপনেও রোজাদার পানাহার তথা রোজার বিপরীত কোনো কাজ করেন না। সব কাজে সব সময় নেক আমলের জন্য কষ্টসহিষ্ণু ও পাপ বর্জনের জন্য মানসিক দৃঢ় মনোবল অর্জনই রোজার মূল শিক্ষা।যদি কেউ রোজা পালন করেন, কিন্তু গুনাহ ছাড়তে না পারেন, তবে তাঁর রোজার প্রকৃত সুফল তিনি পাবেন না।আল্লাহ পবিত্র ও সত্যময়। সত্যভাষণ, পবিত্র জীবন ও প্রেমিক মন আল্লাহর অতি প্রিয়। পবিত্র রমজান ইবাদত–বন্দেগি ও কৃচ্ছ্রসাধনের মাস। যাঁরা পবিত্র রমজান মাসেও নীতিনৈতিকতার ধার ধারেন না, অনৈতিক ও অসামাজিক ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে জড়িত, তাঁরা পবিত্র রমজানের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত। এমন কিছু মানুষ...
রমজান মাসে কোরআন নাজিল হওয়ার কথা কোরআনেই বিবৃত হয়েছে (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)। কিন্তু কেন রমজানকে কোরআন নাজিলের জন্য বেছে নেওয়া হলো, তার প্রকৃত কারণ আল্লাহ ছাড়া আর কে জানবেন? তবে কোরআনের বিভিন্ন আয়াত, হাদিসের ভাষ্য এবং সময়ের সাক্ষ্য থেকে বোঝা যায় বিশেষত তিনটি কারণে রমজানে কোরআন নাজিল করা হয়েছে। ১. রমজান আসমানি গ্রন্থ নাজিলের মাসরমজানে আসমানি গ্রন্থ নাজিল করা আল্লাহ তায়ালার সাধারণ একটি রীতি এবং সে-অনুসারে রমজানেই পূর্বেকার আসমানি গ্রন্থ নাজিল করেছেন। কোরআন নাজিল সেই রীতির একটি ধারাবাহিকতা। যেমন: রাসুল (সা.) বলেন, রমজান মাসের প্রথম দিন ইবরাহিম (আ.) সহিফা লাভ করেন, ৬ তারিখে মুসা (আ.)-এর কাছে ‘তাওরাত’ নাজিল হয়। দাউদ (আ.)-এর কাছে জাবুর নাজিল হয় এই মাসের ১২ তারিখে, আর ঈসা (আ.) ‘ইঞ্জিল’ প্রাপ্ত হন এবং কোরআন নাজিল হয় রমজানের...
ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের মধ্যে জাকাত একটি। এটি শুধু ধর্মীয় ইবাদতই নয়, বরং এটি সামাজিক ন্যায়বিচার, অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও দারিদ্র্য বিমোচনের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। জাকাত শব্দটি আরবি। এর অর্থ পবিত্রতা ও বৃদ্ধি। ইসলামে জাকাত হলো ধনীদের সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ গরিব-দুঃখীদের মধ্যে বণ্টন করা, যা সম্পদকে পবিত্র করে এবং সমাজে অর্থনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠা করে।জাকাতের ধারণা ইসলামের আগে থেকেই বিভিন্ন সমাজে বিদ্যমান ছিল। তবে ইসলামে এটি একটি সুসংগঠিত ও বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হিজরি দ্বিতীয় বর্ষে (৬২৪ খ্রিষ্টাব্দ) জাকাত ফরজ করা হয়। ইসলাম-পূর্ব সমাজে ধনী ও গরিবের মধ্যে বিশাল ব্যবধান ছিল। ধনীরা তাদের সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখত, আর গরিবরা চরম দারিদ্র্য ও অনাহারে জীবনযাপন করত। ইসলাম এই বৈষম্য দূর করতে জাকাতের বিধান চালু করে।আরও পড়ুনজাকাত কীভাবে দেবেন১২ আগস্ট ২০২৩ইসলামি পণ্ডিত...
রমজানে রোজা ফরজ হওয়ার আগে মুসলমানেরা আইয়ামে বিয ও আশুরার রোজা রাখতেন। তবে সেটি তাদের ওপর ফরজ ছিল না, ছিল সুন্নত। আইয়ামে বিয বা প্রতিমাসের মাঝখানের তিন দিন রোজা ইসলামপূর্ব সময়ের মতো করে রাখা হতো। মদিনায় হিজরতের পরে ইহুদিদের আশুরার রোজা পালন দেখে মহররম মাসে মুসলিমগণ তাদের চেয়েও একদিন বেশি রোজা রাখা শুরু করে। কিন্তু এসবই ছিল ঐচ্ছিক, রাখার জন্য বাধ্য-বাধকতা ছিল না। (শারহুন নাবাবি আলাল মুসলিম, হাদিস: ১১২৫)তবে রোজা এক বিধানে একযোগে ফরজ করা হয়নি, বরং ধীরে ধীরে পর্যায়ক্রমে ফরজ করা হয়।ইসলামি আকিদা-বিশ্বাস যখন মুসলমানদের অন্তরে দৃঢ়ভাবে গেঁথে গেল, নিয়মিত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে তা বৃদ্ধি পেতে পেতে ভালোবাসার পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাল এবং তাদের মধ্যে শরিয়তের হুকুম-আহকাম ও আল্লাহর নির্দেশ পালন করার এমন এক মন ও মেজাজ সৃষ্টি হয়ে গেল...
ফসলের জাকাত ‘উশর’ গরিবের পাওনা হক। এটি আদায় করা ফরজ ইবাদত। ‘উশর’ ফসল তোলার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিক আদায় করতে হয়, বছর অতিক্রান্ত হওয়া শর্ত নয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তিনি (আল্লাহ) এমন যে যিনি সৃজন করেছেন বাগান সুউচ্চ (মাচানে লতানো) ও অনুচ্চ (মাচানবিহীন) এবং খেজুরগাছ ও খেত; তার স্বাদ ভিন্ন ভিন্ন আর জলপাই ও ডালিম, সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য। তোমরা খাও তার ফল যখন ফল পরিপক্ব হয়; আর তার হক (উশর) প্রদান করো তা উত্তোলনের দিনে; আর (উশর প্রদান না করে) সীমা লঙ্ঘন করো না, নিশ্চয় আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১৪১)রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক জিনিসের জাকাত আছে, শরীরের জাকাত রোজা।’ (ইবনে মাজাহ: ১৭৪৫) ভূমিতে উৎপাদিত শস্য তথা ফল-ফসলেরও জাকাত রয়েছে। উশর মানে হলো এক-দশমাংশ। প্রাকৃতিক পানি...
ইসলামী শরিয়তের আলোকে রোজাদার মানুষকে ১০টি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়। যাদের প্রত্যেক শ্রেণীর বিধান অন্য শ্রেণী থেকে ভিন্ন। নিম্নে তুলে ধরা হলো : সুস্থ ও স্বাভাবিক রোজাদার : যেসব রোজাদার সার্বিক বিবেচনায় সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে, তাদের ওপর রোজা পালন করা ফরজ। ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে সুস্থ ও স্বাভাবিক তাদেরই বলা হবে যারা মুসলিম, সাবালক, সুস্থ জ্ঞানসম্পন্ন, মুকিম (নিজ আবাসে অবস্থানকারী), সামর্থ্যবান ও বাধামুক্ত। এই শ্রেণীর মানুষের প্রতি আল্লাহর নির্দেশ হলো, ‘রমজান মাস, যাতে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে রোজা পালন করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫) আর রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন: ‘যখন তোমরা রমজানের চাঁদ দেখবে, তখন রোজা পালন করবে।’...
‘নিয়ত’ অর্থ ইচ্ছা বা সংকল্প করা। নিয়ত করা রোজার একটি অন্যতম রোকন। সুতরাং নিয়ত করা জরুরি। প্রতিটি ফরজ ইবাদতের মতো রোজার জন্যও নিয়ত করা ফরজ এবং রোজা বিশুদ্ধ হওয়ার শর্ত। নিয়ত সম্পর্কে রোজা রাসুল (সা) বলেন, ‘নিশ্চয় সমস্ত আমল নিয়তের ওপরই নির্ভরশীল। ব্যক্তি যা নিয়ত করে তা-ই সে পায়।’ (বুখারি, হাদিস: ১) নিয়তের পদ্ধতিরোজা আদায়ে ইচ্ছুক ব্যক্তি রোজা শুরু করার সময় যেই রোজা পালনের ইচ্ছা করছে, তা তার অন্তরে উপস্থাপন করবে। যেমন: অন্তরে নির্ধারণ করবে যে, আমি রমজানের রোজা রাখছি অথবা কাজা রোজা আদায় করছি কিংবা মান্নত বা কাফ্ফারার রোজ পালন করছি। অথবা ‘আমি আগামীকাল রোজা রাখব’ কিংবা নফল রোজা হলে দিনের বেলা ‘আজ রোজা রাখব’—এভাবে নিয়ত করলেও যথেষ্ট হবে। রাসুল (স.) ও সাহাবিদের কারও থেকে ‘নাওয়াইতু আন আসুমা’ বা ‘নাওয়াইতু আন...
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন বন্দর থানা উত্তরের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকালে বন্দর ২৭ নং ওয়ার্ড লালখার বাগ এলাকায় এ ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রেীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমদ বলেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ন হলো তাকাওয়া অর্জন করা যিনি আল্লাহকে বেশি ভয় পান আল্লাহ তাকেই বেশি পছন্দ করেন। এসময় তিনি আরো বলেন রমজান শুধু আমাদের জন্যই ফরজ হয়নি এটি আমাদের পূর্ববর্তী লোকদের জন্যও ফরজ ছিল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ সভাপতি মুন্সি আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ফয়সাল, বন্দর উত্তর থানা জামায়াতের আমীর মুফতি মাওলানা আতিকুর রহমান। বন্দর থানা উত্তর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি শহিদুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সেক্রেটারি মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের...
রমজান আত্মিক পরিশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিকতার মাস। মানুষের আত্মিক পরিশুদ্ধি লাভের পথে একটি অন্তরায় হলো সম্পদের মোহ। সম্পদের মোহ থেকে মানুষের ভেতর লোভ, হিংসা, সংঘাত, বিবাদ ও অবৈধ উপার্জনের প্রবণতা তৈরি করে। এ বিষয়ে সতর্ক করে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘দুনিয়ার মোহ সকল পাপের মূল।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ৫২১৩) পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি পরীক্ষা বিশেষ; আর আল্লাহ, তাঁরই কাছে রয়েছে মহাপুরস্কার।’ (সুরা তাগাবুন, আয়াত : ১৫) পবিত্র রমজান সম্পদের মোহ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মোক্ষম সুযোগ। ইসলাম রমজান শেষে সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব করেছে এবং রমজানজুড়ে নফল দান, সদকা ও জনকল্যাণমূলক কাজের প্রতি উৎসাহিত করেছে। প্রিয়নবী (সা.) ছিলেন অত্যন্ত দানশীল। তিনি কাউকে কখনো ফেরাতেন না। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর...
সাহরি খাওয়া রমজানে একটি পৃথক পুণ্যের কাজ। সাহরি রোজাদারকে সবল রাখে এবং রোজার কষ্ট তার জন্য হালকা করে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা দিনে শুয়ে রাতের নামাজের জন্য এবং সাহরি খেয়ে দিনে রোজা রাখার জন্য সাহায্য গ্রহণ কর।’ (ইবনে মাজাহ: ১২৩)সাহরির বিধান সম্পর্কে সমাজে নানা ধরনের ভুল ধারণা ছড়িয়ে আছে, যার ফলে এই সহজ পুণ্যের কাজটি অনেক সময় আমাদের কাছে কঠিন মনে হয়। তেমন কয়েকটি জরুরি বিধান স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। ১. যদি সাহরি খেতে বিলম্ব হয়ে যায় এবং প্রবল ধারণা হয় যে, সুবহে সাদিকের পরও কিছুটা পানাহার হয়ে গেছে—তবে এ অবস্থায় সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার ত্যাগ করা এবং পরে ওই রোজা কাজা করা ওয়াজিব। সন্দেহ হয়, এমন সময় সাহরি খাওয়া মাকরুহ। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি, ১/২০১) আরও পড়ুনযে কারণে রোজা ভেঙে যায়২৩ মার্চ ২০২৪২. ঘুমের...
রোজার মাসে তো বটেই, বছরজুড়ে এই অভ্যাসগুলো থাকা ভালো। এবারের রমজানে কী করবেন, তার একটা ধারণা দেওয়া হলো।১. প্রতিদিন কোরআন পড়া: রমজানের মাসজুড়েই অল্প অল্প করে কোরআন পড়তে হবে। যদি নিয়ত থাকে খতম দেওয়ার, তাহলে প্রতি ওয়াক্তে পাঁচ পৃষ্ঠা করে পড়া যায়। তাহলে প্রতিদিন ২৫ পৃষ্ঠা এবং মাস শেষ হওয়ার আগেই একটি খতম হয়ে যাবে।২. তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া: রোজার মাসে ঘুমাতে দেরি হয়। আবার সাহ্রির সময়ও দেখা যায় অনেকে আগে আগে ওঠেন। এ সময়টা কাজে লাগানো যায়। ফজরের আগমুহূর্তটা দোয়া কবুলের সময়। এ সময় তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া যায়। শুরুতে ২ রাকাত, ৪ রাকাত নামাজ দিয়েই শুরু করা যায়।৩. সুন্নত ও নফল নামাজে যত্নশীল হওয়া: প্রতি ওয়াক্তের ফরজ নামাজের আগে বা পরের বেশ কিছু সুন্নত নামাজ রয়েছে। সারা বছর বিভিন্ন ব্যস্ততা...
ইসলামের বিধানগুলো কেবল বাহ্যিক প্রথা, রীতি ও আনুষ্ঠানিকতার নাম নয়, বরং এর রয়েছে আধ্যাত্মিক ও অন্তর্নিহিত নানা তাৎপর্য। ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ রোজাও বহুবিদ আধ্যাত্মিক উপকার ও কল্যাণে পরিপূর্ণ। বুজুর্গ আলেমরা বলেন, রমজান হলো আল্লাহর রঙ্গে রঙ্গিন হওয়ার মাস। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর রং, রঙ্গের বিবেচনায় আল্লাহর চেয়ে উত্তম কে আছে। আর আমরা তাঁর ইবাদতকারী।’ [সুরা বাকারা, আয়াত : ১৩৮] উল্লিখিত আয়াতে আল্লাহর রং ধারণের পদ্ধতিও বলা হয়েছে। তা হলো, আল্লাহর ইবাদতে আত্মমগ্ন হওয়া। রমজান মাসে মহানবী (সা.)-এর জীবন-কর্ম লক্ষ্য আমাদের কাছে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর রঙ্গে রঙ্গিন হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়। হাদিসে এসেছে, ‘রমজানে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রং পরিবর্তন হয়ে যেত, তাঁর নামাজের পরিমাণ বৃদ্ধি পেত, তিনি দোয়ায় মিনতি করতেন এবং তাঁর ভেতর আল্লাহর ভয় প্রবল হতো।’ [শুআবুল ঈমান,...
আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের প্রধান সহায়ক নফল বা বাড়তি ইবাদত। খাস ইবাদতের জন্য দিন অপেক্ষা রাত উত্তম। প্রতি রাতেই তাহাজ্জুদের সময়ে আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে এসে বান্দাদের আরজি ও আবেদন–নিবেদন শোনেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন প্রিয় নবীজি (সা.)–এর উদ্দেশে বলেন, ‘এবং রাত্রির কিছু অংশ তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করো, এটি তোমার এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায় তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রশংসিত স্থানে মাকামে মাহমুদে অধিষ্ঠিত করবেন।’ (সুরা ইসরা, আয়াত: ৭৯) ‘হে কম্বলাবৃত! রাতে দণ্ডায়মান হও কিছু অংশ বাদ দিয়ে; অর্ধরাত্রি অথবা তদপেক্ষা কিছু কম অথবা তদপেক্ষা বেশি এবং কোরআন তিলাওয়াত করো সুবিন্যস্তভাবে ও স্পষ্টভাবে। আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি গুরুত্বপূর্ণ বাণী। নিশ্চয়ই ইবাদতের জন্য রাত্রিতে ওঠা প্রবৃত্তি দমনে সহায়ক এবং স্পষ্ট উচ্চারণের অনুকূল। নিশ্চয় দিবাভাগে রয়েছে তোমার দীর্ঘ কর্মব্যস্ততা। তুমি নিজ পালনকর্তার নাম স্মরণ...
পবিত্র রমজান হলো আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহের মাস। এই মাসে মহান আল্লাহ বান্দাদের প্রতি তার দয়া ও অনুগ্রহ অবারিত করেন। রমজান মাসে আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহের কথা সবাই জানে। কিন্তু, অনেকেই হয়তো ভুলে যান যে, এই মাসের মূল্যবান সময় যারা কাজে লাগাতে পারে না তাদের জন্যও রয়েছে কঠোর হুঁশিয়ারি। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) সেসব মানুষের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ করেছেন, যারা রমজান মাসে তাদের গুনাহ ক্ষমা করাতে পারেনি। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বদদোয়ার পর জিবরাইল (আ.) আমিন বলেছেন। সুতরাং এই বদদোয়া প্রতিফলিত হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকতে পারে না। তাই মুমিনের উচিত রমজানে জীবনের পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করা। আল্লাহর কাছে বেশি বেশি তাওবা ও ইস্তিগফার করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) পাপমুক্ত হওয়ার পথও বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর...
জাকাত ইসলামী জীবন বিধানের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম মৌলভিত্তি এবং অবশ্য পালনীয় আর্থিক ফরজ ইবাদত। ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মেরুদণ্ড হলো জাকাত। এটি আত্মার পরিশুদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন ও বেকার সমস্যার সমাধান করে সমাজে সাম্য ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে। জাকাত বছরের যে কোনো সময় আদায় করা যায়। তবে অনেকে অধিক সওয়াবের আশায় রমজানে জাকাত আদায় করে থাকেন। ‘জাকাত’ আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা, ক্রমবৃদ্ধি, প্রাচুর্য ইত্যাদি। ইসলামের পরিভাষায়– আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে শরিয়াতে নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদের নির্দিষ্ট অংশ কোরআনে বর্ণিত আট প্রকারের কোনো এক প্রকার লোক অথবা তাদের প্রত্যেকের মাঝে দান করে মালিক বানিয়ে দেওয়াকে ‘জাকাত’ বলা হয়। কোরআন মাজিদ ও হাদিসে নববিতে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জাকাতের বিধান ও প্রাসঙ্গিকতার বর্ণনা এসেছে। জাকাত শব্দটি কোরআনে ৩২ বার, সালাতের সূত্রে ২৬ বার, স্বতন্ত্রভাবে ৪ বার,...
পবিত্র কোরআন নাজিলের জন্যই রমজান মাসের ফজিলত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রমজান মাস, যে মাসে নাজিল করা হয়েছে আল–কোরআন, মানুষের জন্য হেদায়েত রূপে এবং পথনির্দেশনার প্রমাণ ও সত্য-মিথ্যা পার্থক্য নিরূপণকারী হিসেবে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২৮৫)। শবে কদরের ফজিলত কোরআন নাজিলের কারণেই। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় আমি কদরের রাতে কোরআন নাজিল করেছি।’ (সুরা-৯৭, আয়াত: ১) মক্কা–মদিনার ফজিলতও কোরআন নাজিলের কারণেই।কোরআনের সংস্পর্শেই স্বল্প মূল্যের গিলাফ ও সাধারণ রেহালের সম্মান। যে মানুষ যত কোরআনের ধারক–বাহক হবেন, তাঁর সম্মানও তত অধিক হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কোরআনওয়ালাই আল্লাহওয়ালা এবং আল্লাহর খাস পরিবারভুক্ত।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১২২৯২)। ‘যে অন্তরে কোরআন নেই, তা যেন পরিত্যক্ত বিরান বাড়ি।’ (তিরমিজি: ২৯১৩)। ‘হাশরে বিচারের দিনে কোরআন তোমার পক্ষে বা বিপক্ষে সাক্ষী হবে।’ (মুসলিম: ২২৩)কোরআন পাঠ ব্যতিরেকে প্রধান ইবাদত নামাজও আদায় হয় না।...
সাহ্রি রোজা ও রমজানের অতি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। সাহ্রি শব্দের অর্থ শেষরাতের খাবার। ইসলামি পরিভাষায় রোজা বা সাওম পালনের উদ্দেশ্যে ভোররাতে সুবহে সাদিকের পূর্বে যে আহার গ্রহণ করা হয়, তা হলো সাহ্রি। সাহ্রি একটি বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ সুন্নত। ইসলামি বিধান সহজ, সাবলীল, যৌক্তিক ও মানবিক। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ কোনো সত্তাকে তার সামর্থ্যের অধিক দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২৮৬)।পূর্ববর্তী উম্মতদের রোজায় সাহ্রির বিধান ছিল না। তখন নিয়ম ছিল, সন্ধ্যারাতে এশার ওয়াক্তের মধ্যে ঘুমানোর আগেই পানাহার শেষ করতে হতো। ইসলামের প্রাথমিক যুগেও ওই নিয়ম বিদ্যমান ছিল। সাহাবি হজরত কয়েস ইবনে সারমাহ আনসারি (রা.) সারা দিন পরিশ্রমের পর ইফতার করে আহারের পূর্বেই ঘুমিয়ে পড়েন এবং পরদিন রোজা রেখে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। বিষয়টি প্রিয় নবীজি (সা.)–এর সমীপে পেশ করা হলে সাহ্রির...
পবিত্র রমজান হলো আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহের মাস। এই মাসে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ অবারিত করেন। রমজান মাসে আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহের কথা সবাই জানে, তবে অনেকেই হয়ত ভুলে যান যে, এই মাসের মূল্যবান সময় যারা কাজে লাগাতে পারে না তাদের জন্যও রয়েছে কঠোর হুঁশিয়ারি। হাদিসে বলা হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) সেসব মানুষের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ করেছেন যারা রমজান মাসে তাদের গুনাহ ক্ষমা করাতে পারেনি। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বদদোয়ার পর জিবরাইল (আ.) আমিন বলেছেন। সুতরাং এই বদদোয়া প্রতিফলিত হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকতে পারে না। তাই মুমিনের উচিত রমজানে জীবনের পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত হওয়ার চষ্টো করা। আল্লাহর কাছে বেশি বেশি তাওবা ও ইস্তিগফার করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) পাপমুক্ত হওয়ার পথও বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, মহানবী...
১. স্বামী-স্ত্রী মিলিত হলে রোজা নষ্ট হয়। রোজা ফরজ হওয়ার প্রথম দিকে রমজানের রাতেও এর অনুমতি ছিল না। পরে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করে রাতে এর অনুমতি দেন। কোরআনে আছে, ‘রোজার রাত্রিতে তোমাদের জন্য স্ত্রী সহবাস বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পোশাক আর তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতেন যে তোমরা আত্মপ্রতারণা করছ। তাই তো তিনি তোমাদের ওপর দয়া করেছেন ও তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করতে পারো ও আল্লাহ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করেছেন, তা কামনা করো। আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ রাত্রির কৃষরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। তারপর রাত্রি পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো। আর যখন তোমরা মসজিদে ইতিকাফে (সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছুকালের জন্য ধ্যান) থাকো, তখন স্ত্রী...
রোজা ইসলামের অন্যতম ফরজ বিধান। মুমিনের আত্মিক ও দ্বীনি উন্নয়নে রোজার রয়েছে অপরিসীম উপকারিতা। কেননা রোজা আল্লাহভীতি ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর; যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩) উপকার ও কল্যাণের বিবেচনায় রোজা অতুলনী আমল। এ জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) নিয়ম করে সারা বছর রোজা রাখতেন। অন্যকেও তা পালনের নির্দেশ দিতেন। আবু উমামা (রা.) বলেন, ‘আমি একবার রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললাম, আমাকে এমন একটি ইবাদতের নির্দেশ দিন যা আমি আপনার নির্দেশক্রমে পালন করব। তিনি বললেন, তুমি রোজাকে আঁকড়ে ধরো যেহেতু এর কোনো বিকল্প নাই।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২২২০) রোজাদারের জন্য...
হিজরি চান্দ্রবর্ষের নবম মাস রমজান। সিয়াম সাধনার মাস রমজান। তাকওয়ার মাস রমজান। কোরআন নাজিলের মাস রমজান।আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রমজান মাস, এতে (এই মাসে) মানুষের দিশারি এবং সৎ পথের সুস্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে, তারা যেন এই মাসে সিয়াম ব্রত পালন করে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫) ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের (রোজার) বিধান দেওয়া হলো, যেমন সিয়ামের বিধান তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতদের দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৩)ইবাদতের বিশেষ মৌসুম রমজান মাস। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজান। এ মাসের প্রধান ইবাদত ‘সিয়াম’ বা রোজা পালন করা। সিয়াম বহুবচন, এর একবচন হলো ‘সওম’, যার অর্থ বিরত থাকা। ফারসি, উর্দু, হিন্দি ও বাংলায় সওম বা সিয়ামকে ‘রোজা’ বলা...
বছরের বিভিন্ন সময়ে রোজা রাখলেও কেবল রমজান মাসের রোজা পালন করা ফরজ। রোজা কেবল উম্মতে মুহাম্মাদ জন্য ফরজ নয়, বরং তা অতীত নবী-রাসুলদের উম্মতদের জন্যও ছিল। কিন্তু রোজার সময়, পদ্ধতি ও ধারা ভিন্ন ছিল। রোজা ফারসি শব্দ, অর্থ উপবাস থাকা। কোরআন-হাদিসে এটিকে সিয়াম বলে। রোজা শব্দটিই প্রচলিত। সাওম বা সিয়াম শব্দের অর্থ বিরত থাকা। শরিয়তের পরিভাষায়, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়া, পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকাকে সাওম, সিয়াম বা রোজা বলে। কোরআন যে আয়াতটির মাধ্যমে রোজা ফরজ হয়, সেটিতেই ইঙ্গিত রয়েছে যে পূর্ববর্তী জাতি-গোষ্ঠীর জন্য রোজা ফরজ ছিল। আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমাদের জন্য সিয়াম (রোজা) বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদের দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা সাবধান হয়ে চলতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)। আদম (আ.)-এর...
সাহ্রি রোজা রাখার জন্য সহায়ক, সাহ্রির সময় জাগ্রত হওয়া রোজার প্রতি আগ্রহের প্রকাশ। সাহ্রির সময় প্রশান্তির নিদ্রা পরিহার করে শয্যা ত্যাগ করা প্রকৃতই ইবাদত ও আনুগত্যের প্রতি অনুরাগ। এতে শেষ রাতে জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে এবং তাহাজ্জুত নামাজ আদায়ের সৌভাগ্য লাভ হয়। সাহ্রির সময় জাগ্রত হওয়া একপ্রকারের মুজাহাদা বা সাধনাও বটে। এ সময় আল্লাহর রহমত নাজিলের সময়, অগণিত আল্লাহপ্রেমিকের ফরিয়াদ ও দোয়া কবুলের সময়, আল্লাহর নৈকট্য লাভের সবচেয়ে উত্তম সময়। যাঁরা এ বরকতময় সময় জাগ্রত হয়ে আল্লাহর মহান দরবারে দোয়া করে থাকেন এবং ইস্তিগফার করেন, আল্লাহ তাঁদের স্বীয় ভালোবাসায় ধন্য করেন। এ ধরনের আল্লাহপ্রেমিকদের লক্ষ করে পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ঘোষণা করেন, ‘তারা (মুমিনগণ) রাত্রির শেষ অংশে আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করে থাকে।’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত:...
মুমিনের দুয়ারে হাজির হয়েছে দয়াময় আল্লাহতায়ালার রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের অশেষ ফল্গুধারায় অবগাহনের মাস পবিত্র মাহে রমজান। পশ্চিমাকাশে গতকাল ১৪৪৬ হিজরির রমজান মাসের চাঁদ উদয়ের পর তারাবি ও সাহ্রির মাধ্যমে শুরু হয়েছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের রোজার আনুষ্ঠানিকতা। আত্মশুদ্ধি, আত্ম-সংশোধন, আত্ম-উন্নয়ন ও ত্যাগ-তিতিক্ষার মহিমায় ভাস্বর এ মাসে মুমিন মুসলমান সবাই মহান আল্লাহর বিশেষ মেহমান। ইসলামের বিধানে মাহে রমজান বছরের বাকি এগারো মাসের চেয়ে অধিক মর্যাদাশীল ও বরকতপূর্ণ। এ মাসের বিশেষত্ব অনেক। এ মাসেই মানুষ ও জিন জাতির মুক্তির সনদ পুরো কোরআন মাজিদ লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে বাইতুল ইজ্জতে অবতীর্ণ হয় এবং রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সর্বপ্রথম এ মাসেই অহি অবতীর্ণ হয়। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘রমজান মাসই হলো সে মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত...
রমজানে রোজা বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য কিছু বিধান মেনে চলা আবশ্যক। বিশেষ করে রোজার নিয়ত, সাহরি ও ইফতার সংক্রান্ত বিধানগুলো না জানলে রোজার কষ্ট অর্থহীন হয়ে যেতে পারে। নিম্নে কয়েকটি জরুরি মাসয়ালা তুলে ধরা হলো : নিয়ত সংক্রান্ত মাসয়ালা ১. রমজানের রোজার নিয়ত রাত থেকে দুপুরের ঘণ্টা পূর্বে যে কোনো সময় করলে তা শুদ্ধ হয়ে যাবে। ফরজ রোজার নিয়ত রাতে করাই উত্তম। ২. সুবহে সাদিক থেকে দুপুরের একঘণ্টা পূর্বে এই নিয়ত শুদ্ধ হওয়ার শর্ত হলো সুবহে সাদিকের পর সর্বপ্রকার পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা। ৩. রমজান মাসে কোনো মুকিম (আবাসে অবস্থানকারী) কোনো রমজানের দিন যদি নফল রোজা বা অন্য কোনো ওয়াজিব রোজার নিয়ত করে তবে তার রমজানের রোজাই আদায় হবে। কেননা রমজান মাস শরিয়ত কর্তৃক ফরজ রোজার জন্য...
পবিত্র রমজান মাস মুমিনদের জন্য আনন্দের; রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। এই মাসে আল্লাহর রহমত ব্যাপকভাবে বর্ষিত হয়। জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। ফলে রোজা, নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দান-সদকা, ফিতরা, জাকাত, জিকির-আসকারের মতো যাবতীয় ইবাদত সহজে তাদিকার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন সম্ভব হয়। পবিত্র কোরআন মজিদে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রমজান মাস! যে মাসে মানুষের জন্য পথনির্দেশ, সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে, তারা যেন রোজা পালন করে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫)পবিত্র রমজান মাসে সিয়াম বা রোজা পালন ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম। প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত—এই সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ বা মাবুদ নাই,...
রমজান মাসে সপ্তম আকাশের লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে বায়তুল ইজ্জতে পবিত্র কোরআন একবারে নাজিল হয়। সেখান থেকে আবার রমজান মাসে অল্প অল্প করে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি নাজিল হতে শুরু করে। কোরআন নাজিলের দুটি স্তরই রমজান মাসকে ধন্য করেছে। শুধু আল কোরআনই নয়, বরং হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সহিফা, তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিলসহ সব ঐশীগ্রন্থ রমজান মাসে অবতীর্ণ হয়েছে বলে তাবরানি বর্ণিত একটি সহি হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে (সহি আল-জামে)। এ মাসে মানুষের হেদায়াত ও আলোকবর্তিকা যেমন নাজিল হয়েছে, তেমনি আল্লাহর রহমত হিসেবে এসেছে সিয়াম। তাই এ দুই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা উচিত। প্রতিবছর রমজান মাসে হজরত জিব্রাইল (আ.) মহানবী (সা.)কে পূর্ণ কোরআন পড়ে শোনাতেন এবং মহানবী (সা.)ও তাঁকে পূর্ণ কোরআন পড়ে শোনাতেন। জীবনের শেষ...
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, জাকাতের মাধ্যমে সমাজে ধনী-দরিদ্রের মধ্যকার বিরাজমান বৈষম্য দূর করা সম্ভব। এতে অর্থনৈতিক সমতার ক্ষেত্রেও প্রস্তুত হয়। আল্লাহর নির্দেশমতো যথাযথভাবে জাকাত দিলে সমাজের কোনো লোক অন্নহীন, বস্ত্রহীন, গৃহহীন থাকবে না। কেউ না খেয়ে থাকবে না। কেউ বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাবে না । বুধবার ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলের সুরমা হলে ‘মাস্তুল ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত জাকাত কনফারেন্স-২০২৫ অনুষ্ঠানে তিনি এসব বলেন। কাদের গনি চৌধুরী বলেন, জাকাতের অন্যতম গুরুত্ব হলো অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করা। সমাজের কেউ সম্পদের পাহাড় গড়বে, সুউচ্চ ইমারতে বসবাস করবে, বিলাসবহুল জীবনযাপন করবে, আর কেউ অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাবে, ডাস্টবিনে খাবার কুড়াবে, রাস্তায় রাস্তায় কাগজ খুঁজবে, সংসার চালাতে কিডনি কিংবা সন্তান বিক্রি করবে এমন বিধান ইসলামে নেই। সব শ্রেণির নাগরিকের মধ্যে অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার...
যে মসজিদে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়, তাকে জুমার মসজিদ বলা হয়। ‘জুমা’ শব্দটি ‘জমা’ শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ একত্র হওয়া বা একত্র করা।কোরআন মজিদে সুরা জুমা নামে একটি সুরা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহকে মনে রেখে তাড়াতাড়ি করবে ও বেচাকেনা বন্ধ রাখবে। এই তোমাদের জন্য ভালো, যদি তোমরা বোঝো। নামাজ শেষ হলে তোমরা বাইরে ছড়িয়ে পড়বে ও আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে এবং আল্লাহকে বেশি করে ডাকবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯-১০)। জুমার তাৎপর্য তাফসিরবিদেরা বলেন, সুরা জুমার আগের সুরার নাম হলো সুরা ‘সফ’। সফ অর্থ কাতার বা সারি। জুমার নামাজ সারিবদ্ধভাবে আদায় করা হয়। এতে ঐক্য ও শৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, এতে এই ইঙ্গিত রয়েছে।সুরা...
পবিত্র কোরআনে বিশেষভাবে নামাজ ও পবিত্র কোরআন পড়ার আগে অজু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুসলমানদের মধ্যে শারীরিক পবিত্রতা লাভের জন্য গোসলের পরে অজুর স্থান। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনের সুরা মায়িদায় বলা হয়েছে অজুর নিয়ম।আল্লাহ বলেছেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াও তখন তোমাদের মুখ হাত কনুই পর্যন্ত ধোবে ও তোমাদের মাথায় হাত বুলিয়ে নেবে, আর গিট পর্যন্ত ধোবে। যদি তোমরা অপবিত্র থাকো তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। যদি তোমরা অসুস্থ থাকো বা সফরে থাকো বা তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে। আসো কিংবা স্ত্রীর সঙ্গে সংগত হও, আর পানি না পাও, তবে তাইয়াম্মুম করবে। পরিষ্কার মাটি দিয়ে এবং তা মুখে ও হাতে বুলিয়ে নেবে। আল্লাহ্ তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না এবং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান ও তোমাদের ওপর তাঁর অনুগ্রহ সম্পূর্ণ...