নামাজ ইসলামের প্রধান ইবাদত। তবে শরিয়তের নির্দেশ অনুযায়ী দিনের কিছু নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ, সুন্নত বা নফল নামাজ আদায় করা নিষিদ্ধ। এই নিষিদ্ধ সময়গুলো নির্ধারিত হয়েছে সূর্যের অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে, যাতে মুসলিমরা সূর্যপূজারিদের সঙ্গে সাদৃশ্য থেকে দূরে থাকে এবং ইবাদতের শৃঙ্খলা বজায় রাখেন।
নামাজের নিষিদ্ধ সময়নবীজি (সা.
সূর্যোদয়ের সময়: সূর্যোদয়ের শুরু থেকে সূর্য সম্পূর্ণ উঠে যাওয়া পর্যন্ত (প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট) নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। নবীজি (সা.) বলেন, ‘সূর্যোদয়ের সময় নামাজ পোড়ো না, কারণ, তখন শয়তান সূর্যের সঙ্গে থাকে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩,২৭২)
আরও পড়ুননবীজি (সা.)-এর অন্তিম সময়২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও সূর্য মধ্যাকাশে থাকার সময় নামাজ পড়া নিষিদ্ধ।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮৩১সূর্য মধ্যাকাশে থাকার সময়: সূর্য যখন আকাশের মাঝখানে থাকে (জোহরের সময়ের ঠিক আগে, প্রায় ৫ থেকে ১০ মিনিট), তখন নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। এটি সূর্যের শীর্ষস্থানে থাকার সময়, যখন সূর্যপূজারিদের সঙ্গে সাদৃশ্য হতে পারে।
সূর্যাস্তের সময়: ‘সূর্যাস্তের শুরু থেকে সূর্য সম্পূর্ণ অস্ত যাওয়া পর্যন্ত নামাজ পড়া নিষিদ্ধ।’
উকবা ইবনে আমির আল-জুহানি বলেন, তিনটি সময় আছে যখন আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের নামাজ পড়তে এবং মৃতদের দাফন করতে নিষেধ করেছেন—যখন সূর্য উদিত হয়, যতক্ষণ না এটি সম্পূর্ণরূপে উদিত হয়; যখন দুপুরে সূর্য তার শীর্ষে থাকে, যতক্ষণ না এটি তার শীর্ষে চলে যায় এবং সূর্য যখন সূর্য অস্ত যায়, যতক্ষণ না এটি সম্পূর্ণ অস্ত যায়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮৩১)
ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত: ফজরের ফরজ নামাজের পর সূর্যোদয়ের আগপর্যন্ত কোনো নফল নামাজ পড়া যায় না, তবে ফজরের সুন্নত পড়া যায় যদি ফরজের আগে মিস হয়ে যায়।
আসরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত: আসরের ফরজ নামাজের পর কোনো নফল নামাজ পড়া যায় না, তবে আসরের সুন্নত পড়তে চাইলে পড়া যেতে পারে।
আরও পড়ুনযেকোনো সময় এই দোয়া করা যায়০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ সময ন ম জ র পর থ ক র সময
এছাড়াও পড়ুন:
মাঠ আছে, খেলার পরিবেশ নেই
রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও লালমাটিয়া এলাকায় বেশ কিছু খেলার মাঠ আছে। যেখানে গড়ে ওঠার কথা ছিল শিশু-কিশোরদের খেলার জায়গা, বয়স্ক ব্যক্তিদের হাঁটার পথ আর মানুষের বিনোদনের কেন্দ্র। সেসব আছে ঠিকই। কিন্তু তদারকির অভাবে অনেক মাঠে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা ও অস্থায়ী চা-সিগারেটের দোকান।
সম্প্রতি মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোড, টাউন হল মাঠ, সলিমুল্লাহ রোড, তাজমহল রোড, জাকির হোসেন রোড এবং লালমাটিয়ার মাঠগুলো ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেহাল চিত্র টাউন হলের শহীদ পার্ক খেলার মাঠের।
মাঠের প্রধান দুই প্রবেশপথ দখল করে নিয়েছে চা-সিগারেটের অস্থায়ী দোকান। অন্য আরেকটি প্রবেশপথ ঘিরে আসবাবের দোকান। সেদিকে সরু একটি রাস্তা দিয়ে মাঠে ঢোকা যায়। মাঠে নিয়মিত বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। মাঠের এক কোণে করা হয়েছে মূত্রত্যাগের খোলা ব্যবস্থা। দুর্গন্ধে হাঁটার উপযোগী পরিবেশ নেই এখানে। তাই আশপাশের লোকজন খুব একটা আসতে চান না। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ‘মোহাম্মদপুর শহীদ পার্ক ক্রীড়াচক্র’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে চলছে মাঠের তদারকি। লোহার বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা মাঠের এক কোণে শিশুদের খেলার জন্য কিছু রাইডের ব্যবস্থা আছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মাঠটির দখল মূলত স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির হাতে। তাঁরাই বর্তমানে মাঠের দেখভাল করছেন। সোহরাব হোসেন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানালেন, ৫ আগস্টের আগে এই মাঠে উত্তর সিটি করপোরেশনের কিছুটা তদারকি ছিল। কিন্তু পটপরিবর্তনের পর স্থানীয় বিভিন্ন প্রভাবশালী মাঠের দখল নিয়েছেন। চা-সিগারেটের দোকানও তাঁদের তত্ত্বাবধানে চলে। ভাড়ায় চলানো হয় বিভিন্ন টুর্নামেন্ট। ফলে মাঠের অধিকার হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
পাশে সলিমুল্লাহ রোডের মাঠটিতে প্রতি রোববার অস্থায়ী বাজার বসে। সপ্তাহের বাকি ছয় দিন এই মাঠ উন্মুক্ত থাকে। তবে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে তেমন কোনো উন্নয়নকাজ এই মাঠে দেখা যায়নি। নেই কোনো তত্ত্বাবধান। রোববারের অস্থায়ী বাজারে স্টল বসাতে প্রতি চার হাত জায়গার জন্য হকারদের চাঁদা গুনতে হয় ৫০০ টাকা করে। তবে এই টাকা কারা নেন, সে বিষয়ে ব্যবসায়ীরা কিছু বলতে চাননি।
তাজমহল রোডের মাঠটিতে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজনের অনুরোধে সিটি করপোরেশন কর্তৃক কিছু উন্নয়নকাজ করা হচ্ছে। উন্নয়নকাজে নিযুক্ত সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, প্রায় ৬২ লাখ টাকার উন্নয়নকাজ চলছে। এসবের মধ্যে রয়েছে মাঠের অভ্যন্তরে বাউন্ডারি ফ্রেম ফেন্সিং নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ, ওয়াশরুম এবং ফটক মেরামত। তবে এই মাঠেও তেমন কোনো তদারকি না থাকায় নিয়মিত মাদকাসক্তদের আনাগোনা থাকে।
মোহাম্মদপুর শহীদ পার্ক খেলার মাঠ