লালমনিরহাটের পাটগ্রামে আন্তর্জাতিক সীমানা আইন লঙ্ঘন করে দহগ্রাম সীমান্তে শূন্যরেখায় প্রায় ১ কিলোমিটারজুড়ে কাঁটাতারের বেড়ায় কাঁচের বোতল ঝুলিয়ে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এসময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বাধা দেয়। সেই বাধা উপেক্ষা করে তারা বোতল ঝুলিয়ে দেয়। 

আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার দহগ্রাম সীমান্তের সরকারপাড়ার (মুন্সিপাড়া) বাংলাদেশ-ভারত প্রধান পিলারের ডিএমপি ৮ নম্বরের উপপিলার ৩৮ থেকে ৪৬ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ বোতল ঝুলানো হয়। একই সঙ্গে সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বিএসএফ। সন্ধ্যার পর উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন লাইট ব্যবহার করে তদারিক শুরু করে। 

বিজিবি সূত্র ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ভারতের কোচবিহার রাজ্যের ৬ রাণীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের করুণ ক্যাম্পের বিএসএফের ১০-১২ সদস্য শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়ার কাছে আসেন। এ সময় তাঁরা ডিএমপি ৮ নম্বরের উপপিলার ৩৮ থেকে ৪৬ নম্বরের শূন্যরেখায় নির্মিত বেড়ার প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে কাঁচের খালি বোতল ঝুলিয়ে দেন। স্থানীয়রা দেখে বিজিবিকে খবর দেন। দহগ্রাম আঙ্গোরপোতা ক্যাম্পের টহল দলের বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বোতল ঝোলাতে বিএসএফকে নিষেধ করে। বিএসএফ নিষেধ না মেনে বোতল ঝুলিয়ে দেয়। 

এ বিষয়ে দহগ্রাম ইউনিয়নের বাসিন্দা এরশাদ হোসেন ( ৪৫) বলেন, ভারত জিরো লাইনে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে। আমাদের চলাচলেও সমস্যা হয়। আজ তারা বেড়ায় বোতল ঝুলিয়ে দিয়েছে। আমরা আতঙ্কে আছি। 

এ বিষয়ে রংপুর ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম আলদীন জানান, যদি কেউ রাতের আঁধারে বেড়া তুলে নিয়ে যায় সেজন্য তারা শূন্যরেখায় বেড়া দিয়ে নিজেই টেনশনে আছে। বেড়া রক্ষায় তারা বোতল ঝুলিয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এসএফ ব এসএফ

এছাড়াও পড়ুন:

সীমান্তে শেষবারের মতো বাংলাদেশি মায়ের মুখ দেখলেন ভারতীয় মেয়ে

বাংলাদেশি এক নারীর মৃত্যুর পর তাঁর ভারতীয় মেয়ের অনুরোধে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তের শূন্যরেখায় লাশ দেখার সুযোগ করে দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

বিজিবি জানায়, গতকাল সোমবার রাতে বার্ধক্যের কারণে মারা যান বাংলাদেশি তারা বানু (৮০)। খবর পেয়ে ভারতের মালদা জেলার দুইশতবিঘি গ্রামের বাসিন্দা মেয়ে মালেকা বেগম বিএসএফের মাধ্যমে লাশ দেখার আবেদন করেন বিজিবির কাছে। বিষয়টি জানার পর মানবিক বিবেচনায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৯ বিজিবি। আজ মঙ্গলবার সকালে শিবগঞ্জ সীমান্তের কিরণগঞ্জ সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকার সীমান্ত পিলার ১৭৯/৩–এস–এর শূন্যরেখায় বিজিবি ও বিএসএফের উপস্থিতিতে স্বজনদের লাশ দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।

শূন্যরেখায় মায়ের মুখ দেখে আবেগে ভেঙে পড়েন মেয়ে মালেকা বেগম। আত্মীয়েরা শেষবারের মতো লাশ দেখার এমন সুযোগ পেয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

তারা বানুর ছেলে কুরবান আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছোট বোনটাক শেষবারের মতো মায়ের মুখখান দেখাইতে পারনু। নাহিলে সারা জীবনের লাইগ্যা আফসোস থাইক্যা যাইতোক অরও, হামারও। বোনটার সাথে ভগ্নিপতি, দুই ভাগনি, ভাগনিজামাইসহ ১৫–১৬ জন আত্মীয় আইস্যাছিল। কাঁটাতারের বেড়ার আগে অবাধে যাওয়া–আসা ছিল। মাত্র তো দুই শ গজ দূরের গাঁ। এপারের অনেক মেয়ের যেমন ওপারে বিয়ে হয়েছে, তেমনি ওপারের অনেক মেয়ে এপারে আছে। হামি বিজিবি–বিএসএফের কাছে কৃতজ্ঞ।’

এর আগে গত শুক্রবার একই সীমান্তে ভারতীয় মৃত বোনের মুখ দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশি ভাই।

৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, বিজিবি সব সময় মানবিক প্রয়োজনে সহানুভূতিশীল ভূমিকা পালন করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  •  ১৩ মাস পর ভারত থেকে দেশে ফিরলেন ৬ জেলে
  • সীমান্তে শেষবারের মতো বাংলাদেশি মায়ের মুখ দেখলেন ভারতীয় মেয়ে