আম্পায়ারের খেলা শেষের বাঁশি বাজতে বাকি ৩০ সেকেন্ড। ড্রকে ম্যাচের সম্ভাব্য ফল মনে করেছেন সবাই। ২০ সেকেন্ডের কিছু বেশি বাকি থাকতেই ফজলে রাব্বির হিট চলে যায় ইন্দোনেশিয়ার জালে। এতে উল্লাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ দল। স্বাগতিক ইন্দোনেশিয়াকে হতাশ করে দারুণ এক জয় পেল লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। 

আজ রোববার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত এএইচএফ কাপ হকির পুল ‘বি’তে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইন্দোনেশিয়াকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে মামুনুর রশিদের দল। প্রথম ম্যাচে কাজাখস্তানের বিপক্ষে ৫-১ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার থাইল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপের তৃতীয় ম্যাচ খেলবে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। 

রোববার ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি পুস্কর খিসা মিমো-আশরাফুল ইসলামদের জন্য ছিল আবেগের। বাংলাদেশেরই সাবেক কোচ গোপীনাথন কৃষ্ণমূর্তি ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার ডাগ আউটে। সাবেক কোচের মুখোমুখি হওয়া ফরহাদ শিতুল-রাকিবুল হাসানরা দারুণ পারফরম্যান্স দেখান। ম্যাচের ২৮ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে বাংলাদেশ। ২৫ মিনিটে ওবায়দুল জয়ের ফিল্ড গোলে লিড নেয় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। ২ মিনিট পর সোহানুর রহমান সবুজের পেনাল্টি কর্নারে ব্যবধান ২-০তে নিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর পিছিয়ে পড়া ইন্দোনেশিয়া দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। ৩০ মিনিটে আলফান্ডির ফিল্ড গোলে ব্যবধান কমায় তারা। ৩৪ মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান আকমল। ড্র হতে যাওয়া ম্যাচে শেষ চমক দেখান ফজলে রাব্বি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হক ইন দ ন শ য়

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ শর্তে ফিরল পোষ্য কোটা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১০টি শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ভর্তি উপকমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

উপাচার্যের দায়িত্বে নিযুক্ত সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন সভায় সভাপতিত্ব করেন। পরে রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। পরে রাত পৌনে আটটার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডের পাশে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ রাকসু নির্বাচনের বিভিন্ন প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। এ সময় তাঁরা ‘পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ প্রভৃতি স্লোগান দিচ্ছেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার (শুভ) বলেন, ‘নির্লজ্জ প্রশাসন পোষ্য কোটা আবার ফিরিয়ে এনেছে। আমরা এখানে রাকসু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা লক্ষ করছি। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।’

পোষ্য কোটা পুনর্বহালের ক্ষেত্রে ১০টি শর্ত দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেগুলো হলো শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঔরসজাত সন্তান এই ভর্তির সুযোগ পাবেন; ভর্তির প্রাথমিক আবেদনের জন্য বিজ্ঞাপিত যোগ্যতা ও শর্ত প্রযোজ্য হবে; মেধার ভিত্তিতে ভর্তির জন্য নির্ধারিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত হিসাবে এ প্রক্রিয়ায় ভর্তির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে; ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করে মেধা অনুসরণ করা হবে; ভর্তির আবেদন বিবেচনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্ধারিত শর্তাবলিসহ অবশ্যই ন্যূনতম পাস নম্বর থাকতে হবে; কোনো বিভাগে দুজনের অধিক ভর্তির সুযোগ থাকবে না; কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানকে তাঁর কর্মরত বিভাগে ভর্তি করানো যাবে না; এ সুবিধার আওতায় নিজেদের মধ্যে ‘অটো মাইগ্রেশন’ ছাড়া শিক্ষার্থীর বিভাগ পরিবর্তনের কোনো সুযোগ থাকবে না; ভর্তির ক্ষেত্রে এবং পরবর্তী সময়ে কোনো অভিভাবকের অনিয়মের আশ্রয় নেওয়ার বিষয় প্রমাণিত হলে ছাত্রত্ব বাতিলসহ সংশ্লিষ্ট অভিভাবকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে মর্মে অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করতে হবে এবং এ সুবিধার আওতায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী কোনোভাবেই আবাসিক হলে আসনের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন না।

এর আগে গত ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটা বাতিল ঘোষণা করেন উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো পোষ্য কোটা থাকবে না বলে তিনি জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, আমি ১ শতাংশ পোষ্য কোটা রাখারও পক্ষে নই। আমি অঙ্গীকার করছি, এই পোষ্য কোটা রাখা হবে না। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষেই এটি বাস্তবায়ন করা হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি বাতিল ঘোষণা করা হবে।’

এরপর পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে কয়েক দফা আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সর্বশেষ গতকাল বুধবার পোষ্য কোটা পুনর্বহালসহ তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। দাবি না মানলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ