সড়ক নষ্টের কারণ অনুন্নত ড্রেনেজ ও নিম্নমানের কাজ
Published: 5th, July 2025 GMT
সমকাল: নির্মাণ বা সংস্কারের এক বছরের মধ্যে চট্টগ্রামের সড়কগুলো কেন ভেঙে যায়?
ড. আসিফুল হক: এর পেছনে বড় কারণগুলো হলো, অনুন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সড়ক নির্মাণে ডিজাইন ফল্ট, নির্ধারিত গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার না করা, নিম্নমানের নির্মাণকাজ ও যথাযথভাবে তদারকি না করা। এক কথায় যেসব পরিবেশের কারণে সড়ক নষ্ট হয় তার সবকিছু চট্টগ্রামে বিদ্যমান। বিটুমিনের সবচেয়ে বড় শত্রু পানি। অধিকাংশ সড়ক বিটুমিনের। বর্ষায় চট্টগ্রামের সড়কগুলো পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়। পরিকল্পিত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাও নেই। অল্প বৃষ্টিতেই সড়কের ওপর দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে কয়েকদিন পানি জমে থাকে। ফলে দ্রুত সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়ে। এছাড়া সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের কাজ করা হয়। যার কারণে সড়ক দ্রুত ভেঙে যায়। যথাযথ মান বজায় রেখে সড়ক নির্মাণ করা হলে ৫-১০ বছরেও সড়ক ভাঙার কথা নয়। সড়কে যখন কোনো গর্ত হয় তখন তাৎক্ষণিক সংস্কার করা হয় না। ফলে এটি বড়
হয়ে ক্রমান্বয়ে যানচলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অথচ নিয়মিত সংস্কারের জন্য সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অ্যাসফল্ট প্ল্যান রয়েছে। সড়ক ভাঙ্গার সঙ্গে সঙ্গে সংস্কার করা হলে খরচও কম হয়। সড়কও ভালো থাকে।
সমকাল: টেকসই সড়ক নির্মাণে কি উদ্যোগ নিতে পারে সিটি করপোরেশন?
ড.
সমকাল: টেকসই সড়ক নির্মাণে বিকল্প আধুনিক কোন পদ্ধতি রয়েছে কি না?
ড. আসিফুল হক: বিকল্প পদ্ধতিও সড়ক নির্মাণ করা যেতে পারে। রিজিড পেভমেন্ট (কংক্রিটের ঢালাই) পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারে। সড়কের ইন্টার সেকশনগুলোতে সবসময় সংস্কার করা যায় না। ইন্টার সেকশনগুলোতে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে। সড়কের এক লেইন রিজিড পেভমেন্ট করা হলে বর্ষায় ওই এক লেইন দিয়ে যানচলাচল করা নিশ্চিত করা গেলে সড়ক কম ভাঙ্গবে। রিজিড পেভমেন্ট পানিতে ডুবলেও ভাঙ্গে না। এছাড়া সড়ক নির্মাণে পলিমারাইজড বিটুমিন ব্যবহার করা যেতে পারে। এটা ব্যয়বহুল। তবে পরীক্ষামূলকভাবে কোন একটি সড়কে প্রয়োগ করা যেতে পারে। এটি সফল হলে নগরের সবগুলো সড়কে এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে পারে সিটি করপোরেশন।
সমকাল: সড়ক টেকসই করতে কাজের মান কতটা গুরুত্বপূর্ণ
ড. আসিফুল হক: কাজের মান বজায় না রাখলে যেকোন পদ্ধতিতে তৈরি সড়ক ভেঙ্গে যাবে। তথাকথিত মেরামত করে সড়ক ঠিক রাখা যাবে না। কাজের মানে আপোষ না করে তদারকি নিশ্চিত করা হলে সড়ক হবে দীর্ঘস্থায়ী ও মজবুত।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ট ম ন ব যবহ র কর র ব ট ম ন ব যবহ র সড়ক ন র ম ণ সড়ক র ট কসই সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রামে বৃষ্টি, সড়কে ভোগান্তি
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রামে আজ শনিবার সারা দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সারা দিনই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে, সাগর থাকবে উত্তাল। আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে। বৃষ্টিতে নগরের ভাঙা সড়কগুলো আরও বেহাল হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আজ সকাল ৯টার পর থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, সাগর উত্তাল থাকায় ৩ নম্বর সতর্কসংকেত থাকবে। দিনের প্রথম জোয়ার শুরু হয়েছে গতকাল রাত ২টা ২৭ মিনিটে। ভাটা হয় আজ সকাল ৮টা ৪২ মিনিটে। দ্বিতীয় ধাপে জোয়ার শুরু হবে বেলা ৩টা ৯ মিনিটে, আর ভাটা রাত ৯টা ৪ মিনিটে।
সকালের বৃষ্টিতে অফিসগামী মানুষের ভোগান্তি দেখা যায়। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয় নগরের ২ নম্বর গেট এলাকায়। নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় তাঁর অফিস। মিসবাহ বলেন, তাঁর বাসা রৌফাবাদের সমবায় আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর সড়কে। বৃষ্টির কারণে এলাকার মাটির সড়ক কাদাপানিতে একাকার হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরের অন্তত ৩০ থেকে ৩৫টি সড়ক এখন বেহাল। এর মধ্যে নগরের প্রধান সড়ক যেমন রয়েছে, তেমনি অলিগলির সড়কও রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নগরের স্ট্র্যান্ড রোড, হাটহাজারী সড়ক, ফকির মোহাম্মদ সড়ক, কবির আহমদ সওদাগর সড়ক, আকমল আলী সড়ক, প্রাণহরি দাস সড়ক, হালিশহর আবাসিক এলাকার একাধিক সড়ক, শুলকবহরের আবদুল হামিদ সড়ক, নূর আহমদ সড়ক, জুবিলী সড়ক, আমবাগান সড়ক, শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ সড়ক, সিডিএ অ্যাভিনিউ, কে বি আমান আলী সড়ক।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সড়ক ব্যবহারকারীরা অভিযোগ করেছেন, বছরের পর বছর ধরে সড়কগুলো ঠিকভাবে সংস্কার করা হয় না। মাঝেমধ্যে সংস্কার করা হলেও তা জোড়াতালির সংস্কার। বৃষ্টি কিংবা ভারী গাড়ি চলাচল করলে অল্প দিনের মধ্যে সড়কগুলো ভেঙে পুরোনো চেহারায় ফেরে। এই কারণে তাঁরা যাতায়াতে যেমন কষ্ট পাচ্ছেন, তেমনি ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে নগরের বেশ কিছু সড়কের অবস্থা খারাপ। সুয়ারেজ প্রকল্পের জন্য ওয়াসা এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সিডিএ বিভিন্ন সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করছে। এসব কারণে কয়েকটি সড়ক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এই মুহূর্তে বড় ধরনের সংস্কার করা যাচ্ছে না। আপাতত প্রাথমিকভাবে গাড়ি চলাচলের উপযোগী করে সংস্কার করে দেওয়া হচ্ছে।