ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থানে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের কারণে এই সময়ে ফিলিস্তিনের গাজায় বহু সাংবাদিককে সরাসরি নিশানা করে হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা বৈশ্বিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) এ তথ্য জানিয়েছে।

মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে শুক্রবার ২০২৫ সালের বিশ্ব গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচক প্রকাশ করেছে আরএসএফ। সংস্থাটি সেখানে জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ শুরুর দেড় বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে প্রথম ১৮ মাসেই ইসরায়েলি বাহিনী সেখানে দুই শতাধিক সাংবাদিককে হত্যা করেছে। এসব সাংবাদিকদের মধ্যে অন্তত ৪২ জনকে হত্যা করা হয়েছে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়।

প্যারিসভিত্তিক সংস্থাটি আরও বলেছে, গাজা উপত্যকায় আটকে পড়া সাংবাদিকেরা আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন। খাদ্য, পানিসহ সবকিছুরই চরম সংকটে রয়েছেন তাঁরা। এ ছাড়া দখলকৃত পশ্চিম তীরে সাংবাদিকেরা নিয়মিত ইসরায়েলি বাহিনী এবং সেখানে অবৈধভাবে বসতি স্থাপনকারীদের হাতে হয়রানি ও হামলার শিকার হচ্ছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে।

শুধু ইসরায়েলি বাহিনী নয়, গাজার সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ও ইসলামিক জিহাদও সেখানে সাংবাদিকদের কাজে বাধা দিচ্ছে বলে জানিয়েছে আরএসএফ। সংস্থাটি বলেছে, ইসরায়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে সাংবাদিকদের বাধা দিচ্ছে তারা। পাশাপাশি ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের করা সাইবার অপরাধ আইনও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

আরএসএফের করা এবারের গণমাধ্যম স্বাধীনতার সূচকে ফিলিস্তিনের অবস্থান ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৬৩তম। এই সূচকে ২০২৪ সালের তুলনায় ছয় ধাপ অবনমন ঘটেছে ফিলিস্তিনের। সংস্থাটি বলছে, এবার তালিকায় থাকা ১৮০টি দেশের মধ্যে ১১২টি দেশেই গণমাধ্যম স্বাধীনতায় অবনতি ঘটেছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে গড় নম্বর কমেছে ৫৫ পয়েন্ট, যা সূচকটি প্রকাশ করার পর থেকে সর্বনিম্ন।

গাজায় সাংবাদিক হত্যার বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) দ্বারস্থ হয়েছে আরএসএফ। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে গাজায় সাংবাদিকদের ওপর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে নেদারল্যান্ডসের হেগভিত্তিক এই আদালতে একাধিক অভিযোগ দাখিল করেছে সংস্থাটি।

তবে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় সাংবাদিক নিহতের পৃথক একটি হিসাব দিয়েছে ফিলিস্তিন সরকারের গণমাধ্যম ব্যুরো। সংস্থাটি বলেছে, গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় শুধু ২০২৪ সালেই দুই শতাধিক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব ধ নত ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব কারাগারে

ছেলের পরীক্ষার ফলাফল জালিয়াতির মামলায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন। 

হাইকোর্ট থেকে নেওয়া চার সপ্তাহের আগাম জামিনের মেয়াদ শেষে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন নারায়ণ চন্দ্র নাথ। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

চট্টগ্রাম কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. শাহীন বলেন, জাল-জালিয়াতি মামলায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আসামি নারায়ণ চন্দ্র নাথকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। সেই মোতাবেক তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

গত ২১ জানুয়ারি জালিয়াতির মাধ্যমে ছেলেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথসহ চারজনের বিরুদ্ধে নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নারায়ণের ছেলে নক্ষত্র দেবনাথ, শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খান ও সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতার। শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক এ কে এম সামছু উদ্দিন আজাদ বাদী হয়ে থানায় এ মামলা করেন। 

নারায়ণ শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সচিবের দায়িত্ব পালন কালে ২০২৩ সালে তার ছেলে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। পরে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। অভিযোগ ওঠার পর ২০২৪ সালের ৯ জুলাই তাকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড থেকে মাউশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক পদে পদায়ন করা হয়। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) শৃঙ্খলা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব শতরূপা তালুকদারের সই করা নির্দেশনায় বলা হয়, তদন্তে নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী মামলাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া ও নক্ষত্রের ফলাফল বাতিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তারপরই ২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২ কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়
  • ইরান বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে তুলসী গ্যাবার্ডের বিরোধ
  • জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণে তৈরি হবে ‘গণমিনার’
  • মার্জিন ঋণ-নেগেটিভ ইক্যুইটি-প্রভিশনের তথ্য চায় বিএসইসি
  • ঢাবির ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেট প্রকাশ, অবহেলিত গবেষণা ও স্বাস্থ্য খ
  • ঢাবিতে ১ হাজার ৩৫ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন, গবেষণায় মাত্র ২.০৮%
  • চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব কারাগারে
  • দাবি নিষ্পত্তিতে নির্ভরযোগ্য অবস্থানে ‘গার্ডিয়ান’  
  • ‘১০০ টাকার’ বাজেটের নতুনত্ব কোথায়
  • চট্টগ্রামে বিস্ফোরক মামলায় চিন্ময়কে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি