বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের রেললাইন অবরোধ
Published: 6th, May 2025 GMT
স্নাতক কৃষিবিদদের পেশাগত বৈষম্য ও অধিকার হরণের অভিযোগ তুলে ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবিতে রেললাইনে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড়–সংলগ্ন রেললাইনে অবস্থান নেন তাঁরা। পরে বেলা একটার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
এ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আজ সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত কৃষি অনুষদের সব বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেন।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বিএডিসি ও অন্যান্য গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের দশম গ্রেডের (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/উপসহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা/সমমান) পদগুলো শুধু স্নাতক ডিগ্রিধারী কৃষিবিদদের জন্য উন্মুক্ত করা; ডিএই ও অন্যান্য কৃষিসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নবম গ্রেডসহ অন্যান্য গ্রেডে নিয়মিত পদোন্নতি ও পদ বৃদ্ধির নিশ্চয়তা; নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়ে কোটাব্যবস্থায় বিএডিসিতে নবম গ্রেডে পদোন্নতির সুযোগ বাতিল; দশম গ্রেডের পদগুলোকে গেজেটের আওতার বাইরে রেখে স্বতন্ত্র পদসোপান কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করা; কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের জন্য নতুন কোনো বিশেষায়িত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন না করে তাঁদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনেই সীমাবদ্ধ রাখা এবং শুধু স্নাতক ডিগ্রিধারী কৃষিবিদদের ‘কৃষিবিদ’ উপাধি ব্যবহারের বৈধতা দেওয়া।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষে কৃষিগুচ্ছ পরীক্ষায় একটি সিটের জন্য ২৪ পরীক্ষার্থী প্রতিযোগিতা করেছেন। যেখানে এত মেধার পরীক্ষা দিতে হয়, সেখানে ডিপ্লোমাধারীদের শখের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামা শোভনীয় নয়।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ডিপ্লোমাধারীরা দাবি করছেন, দশম গ্রেডে তাঁদের জন্য পদ সংরক্ষিত রাখা হোক। পদ সংরক্ষিত রাখা মানেই কোটা। অথচ আমরা কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, রক্ত দিয়েছি। এখন আর কোনো বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না।’
আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানান, কৃষিবিদেরা দেশের মানুষের খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করছেন। তাঁদের যৌক্তিক দাবি দ্রুত না মানলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। প্রয়োজনে ‘সারা বাংলা কৃষিবিদ ব্লকেড’ পালিত হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুকের বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রামের উপসহকারী পরিচালক নিজাম উদ্দিন বাদী হয়ে নিজ কার্যালয়ে এ মামলা করেন।
দুদক চট্টগ্রামের উপসহকারী পরিচালক নিজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৫ কোটি ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। এই টাকার বিপরীতে তাঁর কোনো দায়দেনা কিংবা ঋণ পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানে দুদক ফারুকের অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তদন্তে তাঁর আরও অবৈধ সম্পদ আছে কি না, তা বেরিয়ে আসবে।
দুদক সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদকের পদ পান ফারুক। ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের যে অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেটি ভেঙে ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর ফারুক চৌধুরীকে সভাপতি করে ৭১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। এরপর তাঁকে কর্ণফুলী উপজেলা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি করা হয়। ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর নৌকা প্রতীকে নবসৃষ্ট কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বনে যান তিনি। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের ২ নভেম্বর আবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ফারুক সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন ফারুক। দুদকের মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কাছে এত টাকার কোনো সম্পদ নেই। বিষয়টি আমি আইনগতভাবে মোকাবিলা করব।’