১৪ বছরের এক কিশোরীকে উদ্ধারে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন যশোর কোতোয়ালি থানা-পুলিশের তিন সদস্য। সোমবার বিকেলে উপজেলার বাকুলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

আহতরা হলেন- যশোর কোতোয়ালি থানার এএসআই তাপস কুমার পাল, কনস্টেবল রাবেয়া খাতুন ও ফারজানা খাতুন। এ ঘটনায় যশোর চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির এটিএসআই শওকত হোসেন ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৬০-৭০ জনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

জানা গেছে, কালীগঞ্জ পৌরসভার বাকুলিয়া গ্রামের সুজন হোসেন সম্প্রতি যশোরের এক কিশোরীকে নিয়ে এসে পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় মেয়ের পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার তাকে উদ্ধারে এসে মারধরের শিকার হন পুলিশের তিন সদস্য।

মামলা থেকে জানা গেছে, কিশোরীকে উদ্ধারে যশোরের পুলিশ সদস্যরা সোমবার কালীগঞ্জে আসেন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কালীগঞ্জ থানার সহযোগিতায় মেয়েটিকে উদ্ধারে তারা বাকুলিয়া গ্রামে যান। তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় বাড়ির লোকজনসহ স্থানীয়রা বাধা দেন ও গালাগাল শুরু করেন। একপর্যায়ে পুলিশের কাছ থেকে মেয়েটিকে ছিনিয়ে নিতে লাঠি ও কাঠের বাটাম দিয়ে তাদের বেধড়ক মারধর করে জখম করেন। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা আহত পুলিশ সদস্য ও মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে পুলিশ সদস্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

পুলিশ সদস্যদের মারধর ঠেকাতে গিয়ে আহত হন পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আছাদুজ্জামান আসাদের স্ত্রী মোছাম্মদ মাছুরা খাতুন। এ ঘটনায় রাতে কালীগঞ্জ থানায় মামলা হয়। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে বাকুলিয়া গ্রামের রাজু আহম্মেদ, মামুন ও আতিকুল ইসলাম মিন্টুসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেন।

আহত কনস্টেবল রাবেয়া খাতুনের ভাষ্য, তারা ঘটনাস্থল থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার প্রথমে ছয়-সাত জন পুরুষ এসে তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু না ছাড়ায় তাঁকে এবং সঙ্গে থাকা নারী কনস্টেবলকে মারধর শুরু করে। পরে তিন পুলিশ সদস্যকেই মারধর করেছে।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার চারজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: যশ র ঝ ন ইদহ আহত প ল শ সদস য ম রধর এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার দাবিতে রাবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ

ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার, ককটেল হামলাসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ঘটা সব ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শাখা ছাত্রদল।

রবিবার (৪ মে) দুপুর ১২টায় বুদ্ধিজীবী চত্বর সংলগ্ন রাবি শাখা ছাত্রদলের দলীয় টেন্টে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

শাখা ছাত্রদলের অভিযোগ, সম্প্রতি রেজিস্ট্রারের বাসভবনে ককটেল হামলা, আবাসিক হলে কোরআন পোড়ানোসহ একের পর এক ন্যাক্কারজনক ঘটনার মাধ্যমে রাবির আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের হামলাকারী চিহ্নিত, জুলাই-আগস্টে গণহত্যায় মদদদাতা শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় সংগঠনটি।

আরো পড়ুন:

রাবির ‘সি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ

রাবির অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন স্থগিত, প্রতিবাদে মানববন্ধন

এ সময় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক সর্দার জহিরুল ইসলাম বলেন, “ছাত্রদল সবসময় সত্য ও সংগ্রামের পক্ষে রয়েছে। রাবি ছাত্রদল সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে কার কেমন ভুমিকা ছিল, তা আমরা জানি। এখন সবাই আসছে ক্রেডিট নিতে। উপাচার্য স্যারকে বলবো, আসুন আমরা একসঙ্গে মিলেমিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ঠিক রাখি।”

আহ্বায়ক সুলতান আহমদ রাহী বলেন, “দীর্ঘ ১৫ বছর নির্যাতনের শিকার হয়েও সাধারণ মানুষের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বুকের রক্ত দিয়ে সংগ্রাম করেছি। আমাদের নেতাকর্মীদের রক্তের উপরে আজকের বাংলাদেশ টিকে রয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় টিকে রয়েছে। আমরা অপশক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজীর রাজনীতি থেকে মুক্তি চেয়েছিলাম। অথচ গতদিন দেখলাম টাকার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বহিরাগতদের নিয়ে এসে রাবি উপাচার্যকে আটকে রেখে তাদের অযৌক্তিক দাবি আদায় করা হলো।”

তিনি আরো বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে থাকে, কখন না জানি সেই বর্বর হামলাকারীরা তাদের রগ কাটে, কখন তাদের পিটিয়ে হত্যা করে। আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের শরীরে এক বিন্দু পরিমাণ রক্ত থাকাকালে কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে, তা কখনই হবে না।”

অবস্থান কর্মসূচি শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে জোহা চত্বরে এসে শেষ হয়। অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল শাখার নেতৃবৃন্দ, রাজশাহী মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দসহ, রাবি ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ প্রায় দুই শতাধিক কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কিশোরীকে উদ্ধারে এসে কাঠের বাটামের আঘাতে আহত ৩ পুলিশ
  • ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার দাবিতে রাবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ