দুই দিনের ডেনিম এক্সপো শুরু হচ্ছে সোমবার
Published: 6th, May 2025 GMT
দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর ১৮তম আসর শুরু হচ্ছে আগামী সোমবার। রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে।
২০১৪ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর আয়োজন করে আসছে বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই)। তাদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেনিম উৎপাদনে সর্বশেষ উদ্ভাবন, টেকসই প্রযুক্তি ও বৈচিত্র্যময় পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি বাংলাদেশের সক্ষমতা এবারের প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হবে।
ডেনিম প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উদ্ভাবিত ও উৎপাদিত বস্ত্র, তৈরি পোশাক, সুতা, যন্ত্র, উৎপাদনে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও উপকরণ প্রদর্শন করবে। এতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ডেনিমপ্রেমী, উৎপাদনকারী, ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, ফ্যাশন ডিজাইনার, ডেনিম শিল্পের টেকসই ব্যবস্থার নিয়ে কাজ করেন, এমন বিশেষজ্ঞরা আসবেন। প্রদর্শনীর পাশাপাশি শিক্ষামূলক কর্মশালা ও প্রযুক্তিনির্ভর সেমিনার হবে।
এবারের প্রদর্শনীতে আমেরিকান অ্যান্ড ইফার্ড বাংলাদেশ, আর্গন ডেনিমস, আসুটেক্স, আজগার্ড নাইন, বেস্ট টেক্স কেমিক্যালস লিমিটেড, ব্ল্যাক পিওনি টেক্সটাইল, ব্লুসাইন টেকনোলজিস এজি, চ্যাংঝৌ জিংফা টেক্সটাইল, চ্যাংঝৌ কাইলান টেক্সটাইল কোম্পানি, চেরি বাটন, ক্লোরিস বায়োকেম ল্যাবরেটরি এলএলসি, সিলিক্যান্ট, কালার সেন্টার এসএ, ড্যানিস, ডেনিম সলিউশনস, ডেনিম এক্সপার্ট, ডায়মন্ড ডেনিম (স্যাফায়ার গ্রুপ), ফোশান দা শিং শুন টেক্সটাইল, ফোশান ফয়সন টেক্সটাইল, জিবিওএস অটোমেট ইনকরপোরেটেড, গুয়াংজু এইচ অ্যান্ড এইচ টেক্সটাইল, সিম গ্রুপ, সোকো, দ্য ফ্ল্যাক্স কোম্পানি এসএএস, দ্য উলমার্ক, ইউনিভার্সাল ডেনিমস, এক্সডিডি টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে।
আয়োজকেরা জানান, এবার ডেনিম এক্সপোর অন্যতম আকর্ষণ হবে ট্রেন্ড জোন। যেখানে পরিবেশবান্ধব উপকরণ ও ভবিষ্যৎমুখী ডেনিমের নকশা প্রদর্শিত হবে। পরিবেশবান্ধব ইনডিগো ডাই থেকে শুরু করে বৈচিত্র্যপূর্ণ নকশা থাকবে, যা বৈশ্বিক ফ্যাশন ট্রেন্ড সম্পর্কে জানতে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো কেবল দেশীয় প্রতিভার প্রদর্শনী নয়, এটি এখন একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্ল্যাটফর্ম। বিশ্বের নামীদামি ব্র্যান্ডগুলো এখানে এসে বাংলাদেশ ও বিভিন্ন দেশের ডেনিম উৎপাদকদের সঙ্গে কাজ করছে। এর ফলে সৃষ্টি হচ্ছে উদ্ভাবন, সৃজনশীলতা ও প্রযুক্তির অসাধারণ সমন্বয় যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে রোগীর ভিড়, মুখে নেই মাস্ক
গত বুধবার সকাল ৮টা। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীর জটলা। সবাই চিকিৎসকের জন্য অপেক্ষা করছেন। কারও মুখে মাস্ক নেই। আবার যে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে এবং চিকিৎসকরা যে সবাইকে মাস্ক পরে বাইরে বেরুতে বলেছেন, সে ব্যাপারে তাদের কোনো ধারণা নেই।
লক্ষ্মীপুর জেলায় ইতোমধ্যে ছয়জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও ওই রোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেই কর্তৃপক্ষের। নমুনা পরীক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেই কিটের। আক্রান্তরা জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা হলেও সবার নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখান থেকে ছয়জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। আক্রান্তরা বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন ছয়জন আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতালে পৃথক কর্নার, নমুনা পরীক্ষা কিংবা প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিরও কোনো উদ্যোগ নেই। জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং সীমিত তদারকির কারণে ঝুঁকিতে রয়েছেন জেলার সাধারণ মানুষ। আক্রান্ত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাঁর শরীরে জ্বর ছিল না, তবে প্রচণ্ড কাশি ছিল। আরও ছিল বুক ব্যথা, মাথা ব্যথা ও গলা ব্যথা। এসব উপসর্গের কারণে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি শনাক্ত হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা পরীক্ষার জন্য কিট বা প্রয়োজনীয় উপকরণ গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পৌঁছায়নি। ফলে জেলাভিত্তিক নমুনা পরীক্ষা বা চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. অরূপ পাল বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত করোনা পরীক্ষার জন্য কিটসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। রোগীরা মূলত ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত হচ্ছেন।’
এদিকে, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে কিছু সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হলেও তা খুবই সীমিত। দুইদিন মাইকিং করা হয়েছে, এরপর আর কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা চোখে পড়েনি। জনসচেতনতা তৈরিতে ঘাটতি রয়েছে, মানুষজনের মধ্যে এখনও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না।
জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে যেহেতু নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা ঢাকা থেকে হচ্ছে, তাই স্থানীয় পর্যায়ে শনাক্তে কিছুটা সময় লাগছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই শরীর ব্যথা নিয়ে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তার নমুনা পাঠানো হয় ঢাকায় এবং সেখান থেকেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বাকি আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও একইভাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’