অনেকেই ওজন বাড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। তবে জাপানের একদল বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, শব্দতরঙ্গের সাহায্যে ওজন কমানো যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, শব্দতরঙ্গ অ্যাডিপোসাইট ডিফারেনশিয়েশন নামে একটি শারীরিক প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়। এ প্রক্রিয়ায় কোষ চর্বি জমা করে পরিপক্ব চর্বি কোষে পরিণত হয়। নতুন এই গবেষণা মানুষের ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। নতুন এ গবেষণার তথ্য কমিউনিকেশন বায়োলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞানীদের দাবি, অ্যাকুস্টিক শব্দতরঙ্গ কোষের আচরণ পরিবর্তন করতে পারে, যার মাধ্যমে শরীরে চর্বি বৃদ্ধি বন্ধ করা যেতে পারে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী মাসাহিরো কুমেটা বলেন, ‘কোষের কার্যকলাপের ওপরে শব্দের প্রভাব নিয়ে আমরা কাজ করছি। শব্দের কারণে কোষের কার্যকলাপে বেশ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। যেহেতু শব্দ যান্ত্রিক তরঙ্গ দিয়ে তৈরি। সেই তরঙ্গ বায়ু, পানি বা টিস্যুর মতো পদার্থের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করতে পারে। সেই বিষয়কে মাথায় রেখে অ্যাকুস্টিক তরঙ্গের মাধ্যমে বিশেষ একটি সিস্টেমের নকশা করা হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের পেশি কোষের ওপর শব্দতরঙ্গের পরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষার ফলাফল বেশ আশ্চর্যজনক ছিল। শব্দের সংস্পর্শে আসার মাত্র দুই ঘণ্টা পর ৪২টি জিন পরিবর্তন হয়ে যায়। ২৪ ঘণ্টা পরে সব মিলিয়ে ১৪৫টি জিন পরিবর্তিত হয়। ফলাফল বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখছেন, শব্দতরঙ্গ কোষের অ্যাডিপোসাইট কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।

শব্দতরঙ্গের ফ্রিকোয়েন্সি, তীব্রতা ও প্যাটার্নের ওপর নির্ভর করে কোষের আচরণ দেখা যায়। সার্বিকভাবে প্রতিক্রিয়া কোষের ধরনের ওপর ভিত্তি করেও পরিবর্তিত হয়েছে। যদিও গবেষণা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, বিজ্ঞানীরা বলছেন নতুন এই কৌশল ভবিষ্যতে নতুনভাবে ওজন কমানোর পথ বের করতে সহায়তা করতে পারে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে অ্যাকুস্টিক ওয়েভ থেরাপি ব্যথা ও নরম টিস্যুর আঘাত–সংক্রান্ত চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।

সূত্র: এনডিটিভি, দ্য সায়েন্টিস্ট ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

জবির ছাত্রী হলে ‘প্রভোস্টের ছাত্রী’ ত্রাস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র ছাত্রী হল নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলে ক্যান্টিনের খাবারে পোকা পাওয়া নিয়ে প্রতিবাদ করার জেরে এক শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে ‘প্রভোস্টের ছাত্রী’র বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ফাতেমা তুজ জোহরা ইমু বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি হল ডিবেটিং সোসাইটির নেত্রী। ভুক্তভোগী হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী উম্মে মাবুদা।

আরো পড়ুন:

৩ দাবিতে আবারো রাস্তায় রুয়েট শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব পরিবহন নিশ্চিতের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

জানা গেছে, গত ৩ নভেম্বর রাতে ক্যান্টিনে পরিবেশিত বরবটি-আলু ভাজিতে পোকা পাওয়া যায়। বিষয়টি সমাজকর্ম বিভাগের ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী উম্মে মাবুদা তার ফেসবুকে প্রমাণসহ পোস্ট করেন। পোস্টটি ভাইরাল হলে বহু শিক্ষার্থী এতে সহমত প্রকাশ করেন। পোস্টের পরপরই ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্ত ইমু ভুক্তভোগী মাবুদাকে একাধিকবার পোস্ট ডিলিট করতে চাপ দেন এবং প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করার কথা বলে বারবার তাগাদা দেন।

তবে ভুক্তভোগী মাবুদা ইন্টার্নশিপে থাকা অবস্থায় নির্ধারিত সময়ে দেখা করতে না পারায় গত ৬ নভেম্বর সকালে ইমু সরাসরি তার কক্ষে গিয়ে অপমানজনক ভাষায় কথা বলেন।

ভুক্তভোগী মাবুদা বলেন, “তিনি রুমে এসে চিৎকার করে বলেন— ‘পোস্টটা কেন দিলি? ভোটের প্রসঙ্গ কেন আনলি? এখনই গিয়ে পোস্ট ডিলিট কর, নতুন করে ক্ষমা চেয়ে পোস্ট দিবি।’ তিনি আমাকে ভয় দেখিয়েছেন যে আমার পোস্টে তার ভোট নষ্ট হবে।”

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আঞ্জুমান আরা পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। তিনি প্রাধ্যক্ষের বিভাগের ছাত্রী হওয়ায় গঠনতন্ত্র ভঙ্গ করে জোরপূর্বক ডিবেটিং সোসাইটির পদ দখল করেছেন এবং সেই পদ ব্যবহার করে হলে দীর্ঘদীন ধরেই প্রভাব বিস্তার করে আছেন। তিনি হলে এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ ও ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছেন।

ক্যান্টিনের খাবারের মান, রুম বণ্টন, এমনকি কোনো অভিযোগের বিষয়েও তার ‘শেষ কথা’ চলে। তিনি ছাত্রী হলের সবকিছুই প্রায় নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন হল প্রাধ্যক্ষের প্রশ্রয়ে। তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে হলে ছাত্রী তুলে আসন ভাগাভাগিরও অভিযোগও করেন শিক্ষার্থীরা।

হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, ইমু দীর্ঘদিন ধরে হলে ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে ডেকে অপমান করেন ইমু।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, “তিনি প্রাধ্যক্ষ ম্যাডামের বিভাগের ছাত্রী। এ কারণে যা খুশি করেন। অনেকে মুখ খুলতে পারে না।”

আরেকজন বলেন, “ডিবেটিং সোসাইটিতে তার নেতৃত্বই অবৈধ। নির্বাচন হয়নি, গঠনতন্ত্র মানা হয়নি। তিনি নিজেই দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন এবং সেই ক্ষমতা দেখিয়েই বাকি সব নিয়ন্ত্রণ করেন।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফাতেমাতুজ জোহরা ইমু বলেন, “হলের খাবারে মাঝে মাঝে পোকা পাওয়া যায়, এটা সত্যি। তবে ওই শিক্ষার্থী দুই জায়গায় ভিন্ন কথা বলেছে এবং ভোটের প্রসঙ্গ টেনেছে। আমি শুধু জানতে চেয়েছি কেন এমন পোস্ট দিল।” তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন ইমু।

তবে পোস্ট ও হুমকি বিষয়ে মাবুদার বলেন, “আমার পোস্টে কোনো ব্যক্তির নাম ছিল না। শুধু খাবারের মান নিয়ে বলেছি। ইমু আপু সেটাকে রাজনৈতিক ইস্যু বানালেন। এখন যদি ভোটের আগে এমন আচরণ হয়, ভোটে জিতে গেলে কী হবে—তা সহজেই বোঝা যায়।”

মাবুদার পোস্টে সহমত প্রকাশ করে অনেক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেছেন, বিষয়টি ‘বাজে রাজনীতি’ এবং ইমুর আচরণের কারণে হলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সন্ধী লেখেন, “পুরো প্রসঙ্গটাই খাবার নয়, ভোট। কেউ ভালো কিছু বলতে গেলেই তাকে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। এটা খুব নোংরা প্রবণতা।”

সার্বিক বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আঞ্জুমান আরা বলেন, “নির্বাচন সামনে রেখে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। যদি ইমু সত্যিই তাকে (মাবুদা) ক্ষমা চাইতে বলতে গিয়ে চাপ সৃষ্টি করে থাকে, তাহলে তাকেও ক্ষমা চাইতে হবে।”

তিনি বলেন, “খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ এসেছে, বরবটি-কলমিশাক নিষিদ্ধ করা ছিল। তবুও কেন আনা হলো সেটিও তদন্ত করা হবে। রবিবার (৯ নভেম্বর) বৈঠক ডাকা হয়েছে।”

অভিযুক্ত ইমুর বিষয়টি স্বীকার করে প্রাধ্যক্ষ বলেন, “আমি শুনেছি ইমু মাঝে মাঝে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এ বিষয়ে হলে কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। প্রয়োজন হলে কঠোর ব্যবস্থা নেব।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ওই মানুষটা আমার মুখ চেপে ধরেছিল...’, ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন নায়িকা
  • নারীর সম্মানহানি ও সাইবার বুলিংয়ের পেছনের রাজনীতি
  • জবির ছাত্রী হলে ‘প্রভোস্টের ছাত্রী’ ত্রাস
  • মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা: আয়োজক কর্মকর্তার অশোভন আচরণের যে জবাব দিলেন অংশগ্রহণকারীরা
  • এ সপ্তাহের রাশিফল (৮-১৪ নভেম্বর)
  • মুন্সীগঞ্জে ৬৩ সহকারী শিক্ষকের বেতন হঠাৎ বন্ধ