ছায়া নয় যেন ‘মায়া’ বিলাচ্ছে বটগাছটি
Published: 9th, May 2025 GMT
কথায় আছে, ‘বৃক্ষ তোমার নাম কী, ফলে পরিচয়।’ কিন্তু কিছু কিছু বৃক্ষ আছে, যেগুলো হয়তো ফল-ফুলে তেমন পরিচিত নয়; তবু ছায়া দিয়ে মায়া ছড়ায়। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চত্বরের পাশে ঘনিয়ারপাড় এলাকায় এমন একটি বটগাছ আছে।
বৈশাখের রুদ্র আবহাওয়ায় ছায়ার সঙ্গে মায়া বিলিয়ে পথচারী ও সেবাপ্রত্যাশীদের স্বস্তি দিচ্ছে এই বটগাছ। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক উৎসবে মানুষের মিলনমেলা ঘটে বটতলায়।
বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বর এলাকায় দেখা যায়, বিশালকায় বটগাছের নিচে দাঁড়িয়ে ও বসে শরীর জুড়াচ্ছেন নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ। কথা হয় উপজেলার ঘনিয়ারপাড় এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা তৈয়ব আলী বেপারীর (৭৫) সঙ্গে। তিনি বলেন, আনুমানিক ১৯২৫ সালের দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তির উদ্যোগে বটগাছটি রোপণ করা হয়। তখন এখানে উপজেলা পরিষদ ছিল না। ধীরে ধীরে বেড়ে উঠেছে গাছটি। অতীতের মতো এখনো চৈত্র ও বৈশাখ মাসের প্রচণ্ড গরমে স্থানীয় লোকজন এখানে এসে গা জুড়ান। পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানমালা যেমন হয়, বছরজুড়ে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়।
ঘনিয়ারপাড় গ্রামের সংস্কৃতিকর্মী তপন কুমার শীল বলেন, গাছটিকে কেন্দ্র করে ‘ঘনিয়ারপাড় বটছায়া সমাজসেবা ক্লাব’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন আছে। প্রায় ১০০ বছর ধরে সংস্কৃতির নানা আয়োজনের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা রাখছে এ বটতলা।
স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্যামল বাড়ৈ মন্তব্য করেন, গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরমে তাঁর ও আশপাশের বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় গাছের ছায়ায় শরীর জুড়ায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম বলেন, গাছ মানুষের নিঃস্বার্থ বন্ধু। বটগাছটি অতীতের স্মৃতিস্মারক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে এখনো। এটি রক্ষণাবেক্ষণে তাঁর প্রশাসন আন্তরিক।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জয়পুরহাটে শিশু তাসনিয়া হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় স্কুলছাত্রী তাসনিয়া খাতুনের হত্যার প্রতিবাদ ও জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বটতলী বাজারে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এতে তার সহপাঠী, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা অংশ নেন।
তাসনিয়া বড়তাড়া ইউনিয়নের শালবন গ্রামের বাসিন্দা ও বটতলী সানরাইজ মডেল স্কুলের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে। দুই দিন পর শনিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী একরামুল হোসেনের গোয়ালঘর থেকে শিশুটির বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুনজয়পুরহাটে নিখোঁজের দুই দিন পর শিশুর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার, দুই নারী আটক২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বটতলী সানরাইজ মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাহবুবর রহমান, শালবন মাদ্রাসার মহতামিম মাওলানা উসমানী, ক্ষেতলাল পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুল আলিম, বড়তাড়া ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নরুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর ক্ষেতলাল পৌর শাখার সেক্রেটারি আবদুল কুদ্দুস ও নিহত তাসনিয়ার বাবা এরশাদ হোসেন।
মাহবুবর রহমান বলেন, ‘তাসনিয়া খাতুন আমাদের স্কুলের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। তার খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’
তাসনিয়ার বাবা এরশাদ হোসেন বলেন, ‘আমার একমাত্র আদরের সন্তান তাসনিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর কীভাবে বেঁচে আছি—তা বলতে পারব না। আমার সন্তানের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি করছি।’
২০ সেপ্টেম্বর তাসনিয়ার লাশ উদ্ধারের পর গ্রামবাসীরা একরামুলের স্ত্রী হাবিবা আকতার কুমকুম ও তাঁদের বাড়ির কাজের লোক আঞ্জুয়ারাকে আটক করে পুলিশে দেন। এ ঘটনায় তাসনিয়ার বাবা ছয়জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় একরামুল স্ত্রী ও বাড়ির কাজের লোককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তবে একরামুলসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এ বিষয়ে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব প্রথম আলোকে বলেন, তাসনিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত দুজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি একরামুলের স্ত্রী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।