বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা বলেছেন যে সংবাদমাধ্যমকে প্রশ্ন করতেই হবে, প্রশ্ন তুলতে হবে। বর্তমান সরকার সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন নিতে রাজি আছে।

প্রতিবছরই এ ধরনের অনুষ্ঠানে সরকার বা সরকারের তরফে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে নানা কথা বলা হয়। কথাগুলো শুনতে ভালো। কিন্তু সেগুলো বাস্তবতার সঙ্গে মেলাতে গেলে কিছুটা ধন্দে পড়তে হয়। এর একটা কারণ হতে পারে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের মুক্ত সাংবাদিকতা নিয়ে তৈরি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান। অবশ্য ২০২৪ সালের তুলনায় এ বছর ১৬ ধাপ অগ্রগতি ঘটিয়েছে বাংলাদেশ। ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান এখন ১৪৯তম।

সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার অধিকার নিয়ে তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্যের তাৎপর্য কারও কাছে নতুন করে বিস্তারিত বলার প্রয়োজন নেই। এ বক্তব্যের সঙ্গে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টার কাছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও বাংলা নববর্ষের আয়োজন নিয়ে তিনজন সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জেরে সৃষ্ট ‘ঘটনাপ্রবাহ’ জড়িয়ে আছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও জনপরিসর—দুই-ই সরগরম। ওই তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির মাধ্যমে মালিকপক্ষ একটা ‘ফয়সালা’ করতে চেয়েছেন। তবে তাতে গুরুতর প্রশ্নটিও আরেক দফায় সামনে চলে এসেছে—একজন সাংবাদিকের প্রশ্ন করার সীমা আসলে কতটুকু? আর সেই সীমার আড়ে-বহরইবা কীভাবে নির্ধারণ করা হয়?

বিখ্যাত ইংরেজ ঔপন্যাসিক, কবি ও সাংবাদিক জর্জ অরওয়েল বলেছিলেন, ‘সাংবাদিকতা হলো এমন কিছু প্রকাশ করা, যা প্রকাশিত অবস্থায় অন্য কেউ দেখতে চায় না; আর বাদবাকিটা জনসংযোগ।’ বহুল উদ্ধৃত এই কথাকে মান্য ধরলে বলা যায়, একজন সাংবাদিক প্রকাশের উদ্দেশ্যে এমন তথ্য সংগ্রহ করবেন, যা অন্য কারও ‘অপছন্দের’ কারণ হবে। অর্থাৎ প্রশ্ন করার মধ্য দিয়েও তিনি কারও না কারও ‘বিরাগভাজন’ হতে পারেন।

বলা বাহুল্য, সাংবাদিকদের অন্যতম কাজ প্রশ্ন করা। কিন্তু তাই বলে কি তিনি যেকোনো জায়গায় যে কাউকে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন? বিষয়টির একদিকে রয়েছে মতপ্রকাশের অধিকার, অন্যদিকে রয়েছে গোপনীয়তা, শালীনতা ও আইনগত সীমা। আছে সাংবাদিকতার নীতিমালা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মান্য রীতি-রেওয়াজের বিষয়টিও।

সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার অধিকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তবে বিষয়টি তিনটি মূলনীতির ওপর দাঁড়িয়ে—জনস্বার্থ, স্থান এবং আচরণ। অর্থাৎ সাংবাদিকের তথ্য অনুসন্ধানের অধিকার সম্পূর্ণ ‘সীমাহীন’ নয়।

সাংবাদিকতার সর্বজনগ্রাহ্য রীতি অনুযায়ী দুর্নীতি, জনস্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে জনস্বার্থে প্রশ্ন করায় বাধা নেই। জনস্বার্থে না হলে ব্যক্তিগত বিষয়ে প্রশ্ন না করাই উচিত। অনুমতি ছাড়া কারও ব্যক্তিগত স্থানে অনুপ্রবেশ আইন লঙ্ঘনের আওতায় পড়বে। প্রখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক হেনরি লুইস মেনকেন বলেছিলেন, সাংবাদিকের কাজ হলো দুর্বলদের পাশে দাঁড়ানো এবং সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রশ্নের মুখোমুখি করা। অতএব প্রশ্ন করা জারি রাখতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সোসাইটি অব প্রফেশনাল জার্নালিস্ট ও অ্যাসোসিয়েট প্রেস ম্যানেজিং এডিটরস-এর কোড অব এথিকস এবং নিউইয়র্ক টাইমস-এর গাইডলাইনস অন ইন্টেগ্রিটিতে এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। মোটাদাগে জনস্বার্থের মূলনীতি হলো সাংবাদিকদের প্রধান দায়িত্ব জনস্বার্থে তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশ করা। স্থানবিষয়ক মূলকথা হলো সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহের অধিকার স্থানভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবে জনস্বার্থে তথ্য সংগ্রহের অধিকার স্বীকৃত। এবং আচরণের বিষয়টি হলো সাংবাদিকদের উচিত পেশাগত আচরণ বজায় রাখা, যাতে তাঁদের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা অক্ষুণ্ন থাকে।

ইউরোপিয়ান কনভেনশন অন হিউম্যান রাইটসের আর্টিকেল ১০-এ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা স্বীকৃত বলে উল্লেখ আছে। তবে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারও সমান গুরুত্বপূর্ণ (আর্টিকেল ৮)।

যুক্তরাষ্ট্রের এসপিজে কোড অব এথিকসে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে ‘সিক ট্রুথ অ্যান্ড রিপোর্ট ইট’। অর্থাৎ সত্যের পেছনে ছুটতে হবে, সেটা জনসমক্ষে আনতে হবে। এর সঙ্গে বলা আছে আরও তিনটি বিষয়। ‘মিনিমাইজ হার্ম’, অর্থাৎ প্রশ্ন বা প্রতিবেদন যেন কাউকে অকারণে ক্ষতিগ্রস্ত না করে। ‘অ্যাক্ট ইনডিপেনডেন্টলি’, অর্থাৎ ব্যক্তিগত স্বার্থের বাইরে থেকে কাজ করা। এবং ‘বি অ্যাকাউন্ট্যাবল অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্ট’, অর্থাৎ ভুল হলে তা স্বীকার করা, জবাবদিহি করা।

আরও পড়ুনসংবাদমাধ্যম কি এমনি এমনি ভয় পাচ্ছে০৬ মে ২০২৫

২০১৮ সালের ঘটনা। হোয়াইট হাউসে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ করে প্রশ্ন করেছিলেন সিএনএনের সাংবাদিক জিম অ্যাকোস্টা। এর জেরে অ্যাকোস্টার হোয়াইট হাউসের ঢোকার ‘প্রেস পাস’ স্থগিত করে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে আদালত পরে সাংবাদিকের পক্ষেই রায় দেন। এ ঘটনায় এটা পরিষ্কার হয় যে কর্তৃপক্ষের নাখোশ হওয়ার মতো প্রশ্ন করার অধিকার একজন সাংবাদিক রাখেন।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ২০২১ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তথ্য সংগ্রহের সময় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখা এবং মামলার করার উদাহরণ টানা যায়। এ ঘটনার জেরে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা বনাম রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার প্রশ্নটি সামনে আসে। ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মহলে আলোচিত হয় এবং একে ‘সাংবাদিক নিপীড়ন’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২০২৩ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশে সঞ্জয় রানা নামের এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল একজন মন্ত্রীকে ‘উচিত’ প্রশ্ন করায়। এর আগে ২০১৯ সালে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিয়ে একটি টুইটারে (বর্তমানে এক্স) একটি ভিডিও শেয়ার করার কারণে সাংবাদিক প্রশান্ত কানোজিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে কানোজিয়া মুক্তি পান।

তুরস্কে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের ‘নাপসন্দ’ প্রশ্ন করায় অনেক সাংবাদিককেই রোষানলে পড়তে হয়েছে। উদাহরণ, সাংবাদিক এরদেম গুল ও ক্যান ডুন্দরকে দেশদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

সাংবাদিকতার সর্বজনগ্রাহ্য রীতি অনুযায়ী দুর্নীতি, জনস্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে জনস্বার্থে প্রশ্ন করায় বাধা নেই। জনস্বার্থে না হলে ব্যক্তিগত বিষয়ে প্রশ্ন না করাই উচিত। অনুমতি ছাড়া কারও ব্যক্তিগত স্থানে অনুপ্রবেশ আইন লঙ্ঘনের আওতায় পড়বে। প্রখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক হেনরি লুইস মেনকেন বলেছিলেন, সাংবাদিকের কাজ হলো দুর্বলদের পাশে দাঁড়ানো এবং সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রশ্নের মুখোমুখি করা। অতএব প্রশ্ন করা জারি রাখতে হবে।

মোদ্দাকথা, প্রশ্ন করা সাংবাদিকের পেশাগত অধিকার, দায়িত্ব। তবে সেটি যেন জনস্বার্থ, নীতিমালা ও নৈতিকতা দিয়ে পরিচালিত হয়। আর প্রশ্ন করার ধরন, স্থান ও পটভূমিও গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকদের উচিত দায়িত্বশীল ও সংবেদনশীল আচরণ করা। রাষ্ট্রেরও উচিত সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়া। তবে কোন রাষ্ট্রে সাংবাদিকদের কেমন সুরক্ষা দেওয়া হয়—এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে যাওয়ার বিষয়টি হতে পারে ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খোলার নামান্তর। অতএব এ বিষয়ে আজ এখানেই ‘দাঁড়ি’।

হাসান ইমাম সাংবাদিক

[email protected]

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জনস ব র থ ব দ কত র ব ষয়ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিমানবিধ্বংসী কামান থেকে বের হচ্ছিল সাদা ধোঁয়ার কুণ্ডলী

পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত মার্কিন সাংবাদিক পিটার আর কান ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় ছিলেন। ওই সময় প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্রে লেখা পাঠানোর সুযোগ না পেয়ে দিনপঞ্জি রাখতে শুরু করেন তিনি। কয়েক দিনের দিনপঞ্জি একসঙ্গে পাঠালে তা প্রকাশ করত ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর ওয়াল স্টিট জার্নাল তাঁর ৩ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বরের দিনপঞ্জি প্রকাশ করে। প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য আজ তাঁর ৩ ডিসেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বরের দিনপঞ্জি তুলে ধরা হলো।

৩ ডিসেম্বর, শুক্রবার

ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এলিভেটরে ঢোকার সময় আরেক প্রতিবেদক দৌড়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘যুদ্ধ যে চলছে, তা কি শুনেছ?’ সময় তখন রাত আটটা বাজার একটু আগে। এলিভেটরে থাকা একটি বিজ্ঞপ্তিতে লেখা: হ্যাপি আওয়ারস সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত আটটা, শুক্রবার ব্যতীত। বাকি সন্ধ্যাটা অন্যান্য সাংবাদিকের সঙ্গে শর্টওয়েভ রেডিওর আশপাশে জটলা বাধিয়েই কেটে গেল।

স্পষ্টতই, আজ দুপুরের পরই ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তানের সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। ভারত বলছে, পাকিস্তান এটি শুরু করেছে; পাকিস্তান বলছে, ভারত। কে জানে? কিন্তু ভারত গত ১০ দিনই পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকায় সীমিত আকারে আক্রমণ চালানো জারি রেখেছে। যখন একটি যুদ্ধ শুরু হয় এবং কেবল অফিস বন্ধ থাকে, তখন আপনার কী করার থাকে? পোকার খেলা। ঘুমিয়ে যাওয়া।

৪ ডিসেম্বর, শনিবার

সকাল সকালই দিন শুরু হলো। বিমানবন্দর এলাকায় পাকিস্তানের বিমানবিধ্বংসী কামানের সৌজন্যে আকাশ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। ভারতীয় বিমান হামলা নাকি বিমানবিধ্বংসী কামানের গোলা? প্রশ্ন উঠছে, কারণ সকালের জলখাবারের সময়, ভারতীয় মিগগুলোকে রানওয়েতে নিয়মিত রকেট হামলা চালাতে দেখা গেল। দেখলে আপনার আলোকচিত্রী হওয়ার খায়েশ জাগবে। পরিষ্কার নীল আকাশে মিগগুলো ঝাঁপ দিচ্ছিল। বিমানবিধ্বংসী কামান থেকে বের হচ্ছিল ছোট ছোট সাদা ধোঁয়ার কুণ্ডলী। এমনকি হোটেলের ওপর দিয়ে বিমানের কিছু অমীমাংসিত ডগ ফাইটও হলো। বেশ কয়েকটি ভারতীয় বিমান ধ্বংস হলো। কিন্তু প্রত্যেক পর্যবেক্ষণকারীর হিসাব ভিন্ন ভিন্ন। টেলিভিশনের একজন বললেন, ‘পার্ল হারবারের চেয়ে ভালো।’ বাকি দিনটা ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিমান হামলা চলল।

কেউ একজন মানচিত্র দেখল এবং আবিষ্কার করল যে পূর্ব দিকে মাত্র ৬০ মাইলের কম দূরত্বে ভারতীয় সীমান্ত আছে। ঢাকায় থাকা পশ্চিমা নাগরিকেরা ইন্টারকন্টিনেন্টালে জড়ো হয়েছেন।

খেজুরগাছের পাতা ও আরও হরেক রকমের গাছের পাতা দিয়ে আপাদমস্তক ঢাকা কিছু সামরিক যান ছাড়া ঢাকার রাস্তাগুলো জনশূন্য। রাস্তায় থাকা পুলিশের সদস্যদেরও মাথার টুপিতেও গাছের পাতা দেখা গেল। ঢাকার কূটনৈতিক কোরের ডিন, নেপালি কনসালের কাছে গেলাম। তিনি বললেন, সংকটের ওপর কূটনৈতিক কোরের একটি কনফারেন্স তিনি ডেকেছিলেন, কিন্তু সংকটের কারণে তা বাতিল করা হয়েছে।

৫ ডিসেম্বর, রোববার

নিরুত্তাপ দিন। গতকালের আকাশে যে অসাধারণ দৃশ্য দেখা গিয়েছিল, তার সঙ্গে কোনো কিছুরই তুলনা চলে না। প্রচুর গুজব চারপাশে ঘুরছে। এর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় হলো ঢাকা থেকে মাত্র ৬০ মাইল দূরত্বে আছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। কেউ একজন মানচিত্র দেখল এবং আবিষ্কার করল যে পূর্ব দিকে মাত্র ৬০ মাইলের কম দূরত্বে ভারতীয় সীমান্ত আছে। ঢাকায় থাকা পশ্চিমা নাগরিকেরা ইন্টারকন্টিনেন্টালে জড়ো হয়েছেন। পানশালায় হওয়া সন্ধ্যার বৈঠকে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা ব্যাংককের উদ্দেশে সংস্থাটির ত্রাণ ফ্লাইটের গুজবের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন। গ্রেগরি পেকের একটি দৃশ্য যেন—পাকা চুলের মর্যাদাবান জাতিসংঘের কর্মকর্তা কথা বলছেন নারী ও শিশুদের প্রথমে সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারে। কিছু ব্যক্তি হোটেল বার থেকে স্কচ কিনলেন বোতলপ্রতি ৩৫ ডলার খরচ করে। এটি দিনের মজুত তৈরির ব্যাপার।

‘সার্ত্রে এখানে প্রাসঙ্গিক হওয়া উচিত’, এক প্রতিবেদক বললেন।

‘কেন?’

‘বের হওয়ার কোনো পথ নেই।’

৬ ডিসেম্বর, সোমবার

ঢাকা থেকে ৫০ মাইল পশ্চিমে শিবালয়ে সড়কপথে যাওয়ার চেষ্টা চলল। অনুভূতি: একমাত্র রসদের কারণে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তান হারাতে বাধ্য। ছোট ছোট সেনাবহর রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। আরও আছে অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া রেডিয়েটর এবং অন্যান্য যান্ত্রিক সমস্যা। যখন বহর দাঁড়িয়ে পড়ে, তখন বাঙালি কৃষকেরা পার্শ্ববর্তী খেত থেকে পালিয়ে যান। এখন পর্যন্ত সামরিক ট্রাকগুলোকে পাঠানোর অর্থ মুক্তিবাহিনীর গেরিলাদের খুঁজে বের করা, গ্রামে আগুন লাগানো, বেসামরিক হত্যাযজ্ঞ। সেনাবাহিনীর সেসব করার মতো পর্যাপ্ত সময় নেই। কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় হলো সাধারণ যুদ্ধ শুরু হওয়ায় বাঙালিরা সম্ভবত এখন আগের চেয়ে বেশি নিরাপদ।

আজ রাতেই দ্য ইন্টারকন্টিনেন্টালে ফিরেছি। হোটেলে সন্ধ্যার বৈঠকে আলোচিত হয় ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার ১০ মিনিট পর জাতিসংঘের বিমানের ফিরে আসার বিষয়টি। কারণ ছিল, আগে থেকে নির্ধারিত অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার একটু আগে বিমানবন্দরে হওয়া ভারতীয় বিমান হামলা এবং বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল রাও ফরমান আলী বলেছেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী রসদ সরবরাহ নিয়ে সমস্যায় আছে। আপাতত কিছু সময়ের জন্য পশ্চিম পাকিস্তান থেকে রসদ সরবরাহ বন্ধ থাকবে এবং কিছু সময়ের জন্য রক্ষণাত্মক কৌশল নেওয়া হবে। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের শ্রেষ্ঠ রক্ষণাত্মক কৌশল হচ্ছে ক্রমে অগ্রসরমাণ ভারতীয়দের হাতে ধীরে ধীরে কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়া। গত সপ্তাহে তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জেনারেল নিয়াজি বলেছিলেন, সবচেয়ে ভালো রক্ষণ হলো আক্রমণাত্মক হওয়া। কিন্তু সময় বদলায়।

৭ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার

যুদ্ধের সঙ্গে কীভাবে বাস করতে হয়, মনে হচ্ছে তা শিখতে শুরু করেছে ঢাকা বা হয়তো যুদ্ধের হুমকির সঙ্গে, কারণ ভারতীয়রা শহরের উপকণ্ঠের অল্প কিছু সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করছে। কিন্তু মানুষ আকাশের দিকে এখনো ভীতভাবে তাকাচ্ছে। জাতিসংঘ একটি ফ্লাইট চালানোর জন্য ফের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পূর্ব পাকিস্তান উপকূল এলাকায় বিমানটিতে নৌ কামানের গোলা আঘাত হেনেছিল, ধারণা করা হচ্ছে, সেটি ভারতীয়। যেসব বিদেশি নাগরিক এখানে আটকা পড়ে আছে, তাদের খুব কম মানুষেরই হৃদয় জিততে পেরেছে ভারতীয়রা। হোটেল লবিতে থাকা কিছু আমেরিকান জানতে চাইছিল, কেন মেরিন সেনারা এখানে এসে তাঁদের উদ্ধার করছে না। একজন বলল, ‘আমরা কঙ্গোতে এটি করেছিলাম।’ আরেকজন বলল, ‘হ্যাঁ, কিন্তু এটি তো কঙ্গো নয়।’ প্রথম জন তখন বলল, ‘শিগগিরই এটি হবে।’

পাকিস্তানের যোগাযোগ বিভাগের কথা অনুযায়ী, সামরিক পরিস্থিতি এখনো ‘অস্পষ্ট’। একজন আমেরিকান কূটনীতিক বলেছেন, পাকিস্তান শাঁখের করাতের মধ্যে পড়েছে।

বিমান হামলার সাইরেন বন্ধ হওয়ার পর আমি বিমানবন্দরের কাছে গিয়েছিলাম। মাঠের পাশ দিয়ে দৌড়েছিলাম এবং শিয়ালের একটি বাসা চিহ্নিত করি। একই কাজ করেছিল চারজন রিকশাওয়ালা। তাই আমরা সবাই শিয়ালের বাসাটির কাছেই চুপচাপ অবস্থান নিই—কেউই প্রথম জন হিসেবে শিয়ালের বাসায় ঢুকতে চায় না। ওই বাসায় তিনের বেশি কারও থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু বিমান চলে গেল এবং আমরা সবাই মিলে একটি সিগারেট ভাগাভাগি করলাম।

পাকিস্তানের যোগাযোগ বিভাগের কথা অনুযায়ী, সামরিক পরিস্থিতি এখনো ‘অস্পষ্ট’। একজন আমেরিকান কূটনীতিক বলেছেন, পাকিস্তান শাঁখের করাতের মধ্যে পড়েছে। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের পশ্চিম পাকিস্তানি এক বৈমানিকের সঙ্গে দুপুরের খাবার খেয়েছিলাম, তিনি এখানে আটকা পড়েছেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘আপনি কী করার পরিকল্পনা করছেন?’ তিনি বলেন, ‘এখানে মরব।’ প্রায় সবাই ভাবছে, শিগগিরই এখানে আরেকটি রক্তগঙ্গা বইবে। তখন সংখ্যালঘু অবাঙালি (বিহারি) ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগীদের ওপর প্রতিশোধ নেবে বাঙালিরা। যদি এটা চোখের বদলে চোখ তোলার নীতি হয়, তবে অনেক বিহারিকেই চোখ হারাতে হবে।

গুজব আছে, হোটেলের খাদ্য সরবরাহ শেষের দিকে। মেনুর আকার কিছুটা ছোট হয়েছে, কিন্তু খাবারের মান এখনো ভালো আছে এবং সব সময়ই অনেক মাখন পাওয়া যাচ্ছে। একটি ড্যানিশ ডেইরি প্রকল্প থেকে হোটেল কর্তৃপক্ষ মাখন কিনেছিল, যেটি কিনা যুদ্ধের ঠিক আগে আগে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছিল। এক বিদেশির জিজ্ঞাসা, ‘কিন্তু মানুষ কি শুধু মাখন খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে?’

বিকেলে আরও ভারতীয় বিমান হামলা হলো। অনেক উঁচু থেকে বোমাবর্ষণ করা হলো। এখন হোটেলের ছাদ সাংবাদিক ও আলোকচিত্রীতে পরিপূর্ণ। একজন ক্যামেরাম্যানের পরনে আছে স্নানের পোশাক, যিনি কিনা সদ্যই সুইমিংপুল থেকে উঠে এসেছেন। আরেক প্রতিবেদক একটি চেয়ার এনেছেন। ছাদে এক কূটনীতিক বললেন, বিহারিরা নাকি খালি বাড়ি লুট করছে। তিনি আরও বলেন, ‘তারা যেখানে যাচ্ছে, সেখানে এগুলো সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারবে না।’ সাধারণ ভাবনা এটি, যত দিন চলবে, তত দিন বিহারিরা এ থেকে মজা নেবে। এখানে একজন বেশ শান্তভাবেই আলোচনা করছিলেন গণহত্যার বিষয়ে। পূর্ব পাকিস্তান এখন একটি স্পঞ্জের মতো, যা দুর্গতিতে পূর্ণ হয়ে উঠেছে। ওই কূটনীতিক বললেন, ‘আপনি পূর্ব পাকিস্তানে বায়াফ্রা ফেলুন এবং ফের এটি আর খুঁজে পাবেন না।’

৮ ডিসেম্বর, বুধবার

সকালের গুজব হলো, জেনারেল নিয়াজি গত রাতে একটি ছোট বিমানে করে বার্মায় পালিয়ে গেছেন। গত সপ্তাহে তিনি বলেছিলেন, ‘যত বেশি ভারতীয় আসবে, তত বেশি ভারতীয়কে হত্যা করা যাবে, আমি ততটাই খুশি হব।’ পালিয়ে যাওয়ার এই প্রতিবেদনের সত্যতা নিয়ে যদিও সন্দেহ আছে, কিন্তু পরবর্তী সময়ে হয়তো তিনি এটাই চাইবেন।

সামরিক অবস্থা এখনো বেশ অস্পষ্টই আছে, কিন্তু খবর আছে, ভারতের অগ্রসরমাণ দল ঢাকা থেকে ৩৫ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে আছে। একটি দূতাবাস সূত্র বলেছে, ‘আমরা যতটা আশঙ্কা করেছিলাম, সামরিক পরিস্থিতি তার চেয়েও খারাপ হয়েছে।’ একজন বাঙালির সঙ্গে দেখা হলো, বোঝা গেল পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে তিনি উল্লসিত। স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ হওয়া সম্ভবত আর এক সপ্তাহের ব্যাপার, এর বেশি নয়।

রেডিওর সংবাদে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট নিক্সন বলেছেন, যুদ্ধে সংবেদনশীল মধ্যস্থতা হচ্ছে, যার ফলে পূর্ব পাকিস্তানকে ‘কার্যকর স্বায়ত্তশাসন’-এর দিকে নিয়ে যেতে পারে।

জাতিসংঘ যে ফ্লাইটের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিল, তা মাঝপথে আটকে গেছে বলে মনে হচ্ছে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা সব সময়ই কনফারেন্সে থাকেন। একটি বিষয় কৌতূহল-জাগানিয়া যে ইন্টারকন্টিনেন্টালে আটকে থাকা কয়েক শ বিদেশি নাগরিকের দুর্দশার প্রতি আমরা সবাই কত মনোযোগ দিচ্ছি। এক কোটি বা তার বেশি সীমান্তবর্তী শিবিরে আটকে পড়ে দুর্দশায় আছে। কী কারণে কয়েক শ পশ্চিমা নাগরিকের জীবন এতটা মূল্যবান হয়ে উঠল?

ছাদে থাকা বিমান হামলা দেখার মানুষের ভিড় কিছুটা পাতলা হয়েছে। গুজব আছে, একজন ক্যামেরাম্যান পেছন থেকে বিমানবিধ্বংসী বন্দুকের শার্পনেল দিয়ে আঘাত পেয়েছেন। ইন্টারকন্টিনেন্টালে থাকা পশ্চিম পাকিস্তানের বেসামরিক ব্যক্তিরা সশস্ত্র অবস্থায় রয়েছেন, যা অন্য অতিথিদের অস্বস্তিতে ফেলছে। রেডিওর সংবাদে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট নিক্সন বলেছেন, যুদ্ধে সংবেদনশীল মধ্যস্থতা হচ্ছে, যার ফলে পূর্ব পাকিস্তানকে ‘কার্যকর স্বায়ত্তশাসন’-এর দিকে নিয়ে যেতে পারে। গত মার্চে বাঙালিরা ‘কার্যকর স্বায়ত্তশাসন’ দাবি করেছিল। সে ক্ষেত্রে কিছুটা দেরি হয়ে গেছে। টেলিভিশন প্রতিনিধিদের কাছে গোপন তথ্য আছে, ছোট পাকিস্তানি বিমান রাতে বার্মায় একটি গোপন যাত্রা করতে পারে এবং বৈমানিক কিছু ফিল্ম ও মুদ্রিত সংবাদপত্রের সংখ্যা সঙ্গে নিতে ইচ্ছুক। ফিল্ম একটি স্যুটকেসে ভরা হয়েছে এবং যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে।

সপ্তাহের সবচেয়ে বিসদৃশ ঘটনা হচ্ছে, সন্ধ্যায় আমরা একটি পোকার টেবিলে মোমবাতির চারপাশে মার্শম্যালো রোস্ট করলাম।

৯ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার

সকালের খাবার খাওয়ার সময় এক আমেরিকান ব্যবসায়ী বললেন, ‘ক্রিসমাসের আগে কেনাকাটার জন্য আর মাত্র ১০ দিন বাকি।’ সংকটের মহোৎসব চলছেই। আরেকজন আমেরিকান কনস্যুলেটে যাওয়ার জন্য বের হলেন। কারণ, তিনি সেখান থেকে আয়করের ফরম তুলতে চান। তিনি বললেন, ‘আমি হয়তো একজন আশাবাদী, কিন্তু এতে কিছু কাজ তো করা হলো।’ কিন্তু সেখানে কিছু বিভ্রান্তজনও আছেন। হোটেলে মা-বাবার সঙ্গে একটি ধূসর খেলনা কুকুর দাঁড়িয়ে আছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই সেটি প্রশান্তিতে আছে।

নিশ্চিতভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। জেনারেল নিয়াজিসংক্রান্ত গুজব ছড়াচ্ছেই। খবর আছে, ভারতীয় দলগুলো ঢাকা থেকে ২০ মাইল দূরে আছে। ভারতীয় রেডিও বলছে, ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ছাড়া পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান প্রধান সব শহরের পতন হয়েছে। পাকিস্তান রেডিও এটি প্রত্যাখ্যান করেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে অধীনদের বলা হচ্ছে সেনানিবাস ছেড়ে দিতে এবং শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে। তারা কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা দেওয়া একটি হাসপাতাল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এবং রোগীদের রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। আমরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছি এবং কিছু সেনাসদস্যকে দেখেছি, কিন্তু আমরা এ-ও দেখেছি, একজন পশ্চিম পাকিস্তানি পুলিশ সদস্য এক বাঙালিকে একটি লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত এগুলো ধারাবাহিকভাবেই চলছে।

ঢাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী শেষ রক্ষার লড়াই করবে কি না, তা নিয়ে সবারই সন্দেহ আছে। পাকিস্তানের সেনাসদস্যদের পূর্ব পাকিস্তানে শর্ত সাপেক্ষে আত্মসমর্পণের পরিকল্পনার বিষয়ে জাতিসংঘের কিছু কর্মকর্তা আলোচনা করছিলেন। শর্তটি হয়তো হবে নিরাপদে পশ্চিম পাকিস্তানে ফেরা। কিন্তু কে তা নিশ্চিত করবে?

আবাসিক এলাকা দেখতে গিয়েছিলাম, যেখানে গত রাতে তিনটি বোমা আঘাত হেনেছিল। সাধারণত সেখানে একটি এতিমখানা পরিচালিত হতো, কিন্তু এখন সেখানে মাটি ও ধ্বংসস্তূপে ঘেরা তিনটি বড় বড় গর্ত আছে শুধু। কাদামাটি খুঁড়ে ছোট ছোট দেহ বের করা দেখলাম। নিহত এতিমদের দেহ গুনে দেখা যায় সংখ্যা দুই শতাধিক।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল ও একটি হাসপাতালকে ‘নিরপেক্ষ এলাকা’ ঘোষণায় সফল হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল রেডক্রস (জেনেভা)। আজ সন্ধ্যায় রেডক্রসের একদল কর্মকর্তা ও সাংবাদিক কক্ষে কক্ষে গিয়ে নানা অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেন, বিশেষ করে পশ্চিম পাকিস্তানের অতিথিদের কাছে এগুলো পাওয়া যায়। নারীদের শৌচাগার থেকে কয়েক প্যাকেট বিস্ফোরক পাওয়া গিয়েছিল। সেগুলো হোটেলের লনে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বালুর বস্তা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল। ফলে সুইমিংপুল বন্ধ ছিল।

* ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আবার প্রকাশ করা হলো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দীর্ঘদিনের কোয়ান্টাম রহস্যের সমাধান করলেন বিজ্ঞানীরা
  • জরিপ বা নির্বাচনের ফলাফল, কোনোটাই ভুল নয়
  • ১৬ হাজার পায়ের ছাপে জানা গেল ডাইনোসরের অদ্ভুত আচরণ
  • বিমানবিধ্বংসী কামান থেকে বের হচ্ছিল সাদা ধোঁয়ার কুণ্ডলী
  • প্রাণীরা কি আসলেই আগেভাগে ভূমিকম্প টের পায়
  • বেগম রোকেয়া নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের মূলে আঘাত হেনেছিলেন: তারেক রহমান
  • আল্লাহকে সঠিকভাবে চিনব কী করে
  • বন্য হাতিকে ‘মামা’ ডাকলে আসলেই কি তারা ক্ষতি করে না
  • দখলদারত্বের মাধ্যমে ভোট আদায়ের চেষ্টা করলে উভয়েই পরাজিত হবে: নাহিদ ইসলাম
  • হঠাৎ রেগে যাওয়া, দরজা বন্ধ করে থাকা বা চুপচাপ থাকা—কিশোররা কেন এমন করে