সালটা ১৯৮৫, রেহানা জলির বয়স তখন ১৬। ওই বয়সে অভিনয়ে আসা। ‘মা ও ছেলে’ নামে ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে রুপালি পর্দায় যাত্রা শুরু। সময়ের হিসাবে পেরিয়ে গেছে ৪০ বছর। মায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে করতে এতটাই বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছিলেন, যেখানেই যেতেন, সবাই মা বলেই ডাকতেন। হয়ে ওঠেন সিনেমার মা। এর মধ্যে চার বছর ধরে অসুস্থতার কারণে অভিনয়ের বাইরে। যে মানুষটি অভিনয়ে হাসিয়েছেন, কাঁদিয়েছেন, তাঁর জীবনটাই এখন ভীষণ কষ্টের। তিনি শুধুই কাঁদেন, তবে তাঁর এই কান্না এখন পর্দায় দেখা যায় না। ঘরের চারদেয়াল সেই কান্নার সাক্ষী। কখনো শাড়ির আঁচলে মুখ লুকিয়ে কাঁদেন। কখনো এই কান্নার সাক্ষী তাঁরই মেজ বোন। চার বছর ধরে এমনই জীবনযাপন অভিনয়শিল্পী রেহানা জলির।

মা হয়ে সিনেমার পর্দায় কত নায়ক-নায়িকা, সন্তানকে যে রেহানা জলি আগলে রাখতেন, তার হিসাব নেই। বাংলা সিনেমা দেখেছেন, এমন কোনো দর্শক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে, যাঁরা অভিনয়শিল্পী রেহানা জলিকে চেনেন না। সিনেমায় তাঁর দুঃখকষ্টে কাতর হননি, এমন মানুষ কমই আছেন।

৪০ বছরের অভিনয়জীবনে এসে রেহানা জলি যে গল্প শোনালেন, তা সিনেমাকেও হার মানায়। প্রচণ্ড অসুস্থ তিনি। সাত বছর আগে ফুসফুসের ক্যানসার আক্রান্ত করে তাঁকে। এখন স্নায়ুর সমস্যায় দিন পার করছেন। ভীষণ কষ্টে আছেন তিনি। অসুস্থতার কারণে অভিনয় করতে পারছেন না প্রায় চার বছর। চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে বোনের ইস্কাটনের গাউসনগরের বাসায় থেকে চিকিৎসা করাচ্ছেন রেহানা জলি। কিন্তু তিনি বড় একা। তিন যুগের বেশি সময় যে চলচ্চিত্র পরিবারের বাসিন্দা ছিলেন, এখন সেখান থেকে কেউ তাঁর খবর আর নেন না। প্রথম আলোর সঙ্গে আজ রোববার সকালে কথা বলার সময় বারবার নিজের কান্না চেপে রাখার চেষ্টা করেও পারছিলেন না।

এখন যেমন অভিনয়শিল্পী রেহানা জলি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর দ য়

এছাড়াও পড়ুন:

পশ্চিমবঙ্গে বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ৬ ডিসেম্বর

অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরির প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে বাবরি মসজিদ তৈরির ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হুমায়ুন কবির। এবার মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন ঘোষণা করেছেন ওই বিধায়ক।

বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩৩তম বর্ষপূর্তি, অর্থাৎ আগামী ৬ ডিসেম্বর মুসলিম অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গায় বাবরি মসজিদের অনুকরণে একটি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের ওই বিধায়ক। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে কয়েক লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছে  হুমায়ুন।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়া সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক আটক

অভিনয় ছেড়ে ধর্মে মনোযোগী অভিনেত্রী

শনিবার গণমাধ্যমের সামনে হুমায়ুন কবীর বলেন, “চলতি বছরের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে। মসজিদটি সম্পূর্ণ হতে তিন বছর সময় লাগবে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রায় দুই লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মঞ্চে ৪০০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত থাকবেন। আমি সবাইকে আমন্ত্রণ জানাবো। কেউ যদি আসতে চান সেটা তার ইচ্ছা, না আসতে চাইলেও কোনো অসুবিধা নেই।” 

গতবছর, ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর রাজ্য বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়েই বাবরি মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন হুমায়ূন। 

বছর ঘুরলেই আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিল (সম্ভাব্য) মাসে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে তৃণমূলের মুসলিম বিধায়কের এই ঘোষণা নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগও তুলেছে বিজেপি।

তবে পাল্টা প্রশ্ন তুলে তৃণমূল কংগ্রেস বলেছে, মসজিদ বানানোতে দোষের কী আছে?

বিজেপি নেতার রাহুল সিনহার অভিযোগ, হুমায়ুন কবীর এই ইস্যুকে খামোকাই রাজনৈতিক করে তুলছেন। 

পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দু ভোট ম্যানেজ করার জন্য দীঘায় পুরী মন্দির বানিয়েছেন, দার্জিলিংয়ে মহাকালের মন্দির বানাচ্ছেন এবার মুর্শিদাবাদে মুসলিম ভোট ম্যানেজ করার জন্য বাবরি মসজিদ বানাচ্ছেন। আমরা চাইনা মন্দির মসজিদ নিয়ে এই বাংলায় মানুষের মধ্যে বিভাজন হোক। আমাদের একটাই দাবি, যাই করুন বিভাজন করবেন না। আমরা হিন্দু মুসলমান মিলেমিশে থাকতে চাই।”

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ