পর্দায় মা হয়ে কাঁদাতেন, এখনো কাঁদেন অভিভাবকহীন রেহানা জলি
Published: 11th, May 2025 GMT
সালটা ১৯৮৫, রেহানা জলির বয়স তখন ১৬। ওই বয়সে অভিনয়ে আসা। ‘মা ও ছেলে’ নামে ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে রুপালি পর্দায় যাত্রা শুরু। সময়ের হিসাবে পেরিয়ে গেছে ৪০ বছর। মায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে করতে এতটাই বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছিলেন, যেখানেই যেতেন, সবাই মা বলেই ডাকতেন। হয়ে ওঠেন সিনেমার মা। এর মধ্যে চার বছর ধরে অসুস্থতার কারণে অভিনয়ের বাইরে। যে মানুষটি অভিনয়ে হাসিয়েছেন, কাঁদিয়েছেন, তাঁর জীবনটাই এখন ভীষণ কষ্টের। তিনি শুধুই কাঁদেন, তবে তাঁর এই কান্না এখন পর্দায় দেখা যায় না। ঘরের চারদেয়াল সেই কান্নার সাক্ষী। কখনো শাড়ির আঁচলে মুখ লুকিয়ে কাঁদেন। কখনো এই কান্নার সাক্ষী তাঁরই মেজ বোন। চার বছর ধরে এমনই জীবনযাপন অভিনয়শিল্পী রেহানা জলির।
মা হয়ে সিনেমার পর্দায় কত নায়ক-নায়িকা, সন্তানকে যে রেহানা জলি আগলে রাখতেন, তার হিসাব নেই। বাংলা সিনেমা দেখেছেন, এমন কোনো দর্শক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে, যাঁরা অভিনয়শিল্পী রেহানা জলিকে চেনেন না। সিনেমায় তাঁর দুঃখকষ্টে কাতর হননি, এমন মানুষ কমই আছেন।
৪০ বছরের অভিনয়জীবনে এসে রেহানা জলি যে গল্প শোনালেন, তা সিনেমাকেও হার মানায়। প্রচণ্ড অসুস্থ তিনি। সাত বছর আগে ফুসফুসের ক্যানসার আক্রান্ত করে তাঁকে। এখন স্নায়ুর সমস্যায় দিন পার করছেন। ভীষণ কষ্টে আছেন তিনি। অসুস্থতার কারণে অভিনয় করতে পারছেন না প্রায় চার বছর। চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে বোনের ইস্কাটনের গাউসনগরের বাসায় থেকে চিকিৎসা করাচ্ছেন রেহানা জলি। কিন্তু তিনি বড় একা। তিন যুগের বেশি সময় যে চলচ্চিত্র পরিবারের বাসিন্দা ছিলেন, এখন সেখান থেকে কেউ তাঁর খবর আর নেন না। প্রথম আলোর সঙ্গে আজ রোববার সকালে কথা বলার সময় বারবার নিজের কান্না চেপে রাখার চেষ্টা করেও পারছিলেন না।
এখন যেমন অভিনয়শিল্পী রেহানা জলি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর দ য়
এছাড়াও পড়ুন:
রেহানা, টিউলিপ, আজমিনা ও রাদওয়ানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (ববি) বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
দুর্নীতির দমন কমিশনের (দুদক) করা এই তিন মামলায় আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এ এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তরিকুল ইসলাম।
টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি)। তিনি দেশটির সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’। তিনি এখন বাংলাদেশে বিচারের মুখোমুখি।
এর আগে গত ১১ আগস্ট প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের অপর তিন মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে গত ৩১ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালত। এর মধ্যে তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১১ আগস্ট তারিখ ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন। বাকি তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৩ আগস্ট তারিখ ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম।
আরও পড়ুনপ্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু১১ আগস্ট ২০২৫মামলায় শেখ হাসিনা পরিবারের বাইরে যে ১৬ জন অভিযুক্ত হয়েছেন, তাঁরা হলেন জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গণপূর্তের তৎকালীন সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, সদস্য তন্ময় দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার।
আরও পড়ুনটিউলিপের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব রয়েছে১১ ঘণ্টা আগেদুদকের পিপি খান মো. মইনুল হোসেন সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, রাজউকের সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী, ঢাকায় যাঁদের প্লট-গাড়ি-বাড়ি কিছুই নেই, তাঁরা মূলত সংস্থার প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিন্তু শেখ হাসিনার পরিবার রাজউকের কাছে মিথ্যা হলফনামা দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, তাঁদের ঢাকা শহরে জমি-বাড়ি কোনো কিছুই নেই। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, শেখ হাসিনা পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের নামে বাড়ি-জমি-গাড়ি সবই আছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁরা রাজউকের ৬০ কাঠার প্লট নিয়েছেন, যা অপরাধ। অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গসহ অন্যান্য অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
আরও পড়ুনশেখ হাসিনা-রেহানা-টিউলিপসহ ২৩ জনকে আদালতে হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ০১ জুলাই ২০২৫দুদকের পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের ছয় মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে মামলাগুলো বিচারের জন্য দুটি বিচারিক আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।
শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয় মামলায় গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: দুদক চেয়ারম্যানআমাকে হয়রানির জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে: টিউলিপটিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আদালতের বিষয়, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ নয়: মুহাম্মদ ইউনূস