ইন্টারকমের ‘ফিন’ এআই এজেন্টের বাস্তব প্রয়োগ ও কার্যকারিতা নিয়ে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে অবস্থিত নেক্সট ভেঞ্চারস বাংলাদেশ কার্যালয়ে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া দুই দিনের এ কর্মশালায় পরবর্তী প্রজন্মের ফিন এআই এজেন্টের রূপান্তরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়। নেক্সট ভেঞ্চারস বাংলাদেশ ও ইন্টারকম আয়োজিত এ কর্মশালায় যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ড থেকে ইন্টারকমের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।

কর্মশালার অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল মডেল কনটেক্সট প্রটোকল (এমসিপি), যা এআই দুনিয়ার নতুন মানদণ্ড। এর মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন এআই এজেন্টগুলো একই তথ্যভান্ডার ও নিজস্ব স্মৃতির মাধ্যমে কাজ করে। এর ফলে মানুষের মতো পুরোনো আলোচনার তথ্য কাজে লাগিয়ে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। ইন্টারকম ইতিমধ্যে এমসিপি সমর্থিত ক্লায়েন্ট সার্ভার চালু করেছে এবং নেক্সট ভেঞ্চারসও নিজস্ব এমসিপি সার্ভার তৈরি করছে। এই প্রটোকলের মাধ্যমে ভবিষ্যতের এআই সিস্টেমগুলো কেবল প্রতিক্রিয়া নয়; বরং নিজেই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।

কর্মশালায় জানানো হয়, ফিন এআই এজেন্ট তথ্য সরবরাহের পাশাপাশি দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সমস্যার সমাধান ও নিজের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে পারে। এই প্রযুক্তিকে বলা হয় ‘এজেন্টিক সাপোর্ট এআই’। এটি তথ্যভিত্তিক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি ব্যবহারকারীর ধরন অনুযায়ী উত্তর দিতে পারে। শুধু তা–ই নয়, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি জটিল সমস্যা সমাধানে নিজেই চিন্তা করতে পারে।

নেক্সট ভেঞ্চারস বাংলাদেশ ইন্টারকমের ৩০ হাজারের বেশি ব্যবহারকারীর মধ্যে অন্যতম এন্টারপ্রাইজ ব্যবহারকারী, যারা ইতিমধ্যে ১৭০টির বেশি দেশে গ্রাহকদের সেবা দিয়ে আসছে। ফিন এআই এজেন্টের পরীক্ষামূলক ক্লোজড বিটা অ্যাকসেস সংস্করণ বর্তমানে সীমিত সংখ্যক প্রতিষ্ঠান ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে, যাদের মধ্যে নেক্সট ভেঞ্চারস বাংলাদেশও রয়েছে। ইন্টারকমের ইকোসিস্টেমে সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট ভলিউম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হচ্ছে নেক্সট ভেঞ্চারস বাংলাদেশ।

ইন্টারকমের জ্যেষ্ঠ পরিচালক কিয়ারান নোলান জানান, নেক্সট ভেঞ্চারস বাংলাদেশকে ফিন এআইয়ের ক্লোজড বিটা অ্যাকসেস সুবিধা দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। শপিফাই ও স্ট্রাইপের মতো প্রতিষ্ঠানকেও আমরা একই ধরনের সুযোগ দিয়েছি।

নেক্সট ভেঞ্চারসের বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রযুক্তি) তানজিম হাসান জানান, ফিন একটি ইন্টেলিজেন্ট লেয়ার। যে কাজ আগে করতে সময় লাগত ১০ মিনিট, এখন সেটা ফিনের মাধ্যমে একমুহূর্তেই করা যাবে।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশে ইন্টারনেট বিপর্যয়ের সময় বাংলাদেশ থেকে ৩২ কর্মীকে নেপালে নিয়ে গিয়ে নিজেদের গ্রাহকসেবা কার্যক্রম ফিন এআই এজেন্টের মাধ্যমে সচল রেখেছিল নেক্সট ভেঞ্চারস বাংলাদেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাশাপাশি মালয়েশিয়া, সাইপ্রাস, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় তাদের অপারেশনাল হাব রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ