৮ মাসেও অগ্রগতি নেই বাকৃবির গণতদন্ত কমিশনের
Published: 11th, May 2025 GMT
বিগত সাড়ে ১৫ বছরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) সংঘঠিত সব ধরনের দুর্নীতি, জুলুম-নির্যাতন এবং আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের তদন্ত করে সুপারিশ প্রদানের জন্য গঠিত হয় গণতদন্ত কমিশন।
গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. হেলাল উদ্দীন স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে ২৬ সদস্য বিশিষ্ট গণতদন্ত কমিশন গঠনের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়। কমিশন গঠনের প্রায় আট মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো আগ্রগতি দেখা যায়নি । ফলে বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা সমালোচনা। ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিয়ে শঙ্কার অভিযোগও করেছেন অনেকেই।
এছাড়াও বিভিন্ন অনিয়মে অভিযুক্তদের কাছ থেকে একটি পক্ষ অর্থ গ্রহণ করে মিটমাট করার অভিযোগও উঠে আসছে বিভিন্ন মাধ্যমে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গণতদন্ত কমিশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোফরেস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক জিএম মুজিবর রহমানকে চেয়ারম্যান এবং কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক মো.
গত বছর ৯ অক্টোবর থেকে অনলাইন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ বক্স স্থাপন করে প্রথম ধাপে শুধু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহণ শুরু হয়। যা শেষ হয় গত বছর ১৬ নভেম্বর। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থেকে অভিযোগ গ্রহণ করা হবে বলে ওই সময় জানানো হয়।
এরপরে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই তদন্ত কমিশনের। ফলে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিয়ে ধোঁয়াশা ও শঙ্কা তৈরি হয়েছে অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের মনে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, “তদন্ত কমিশনের কাজের অগ্রগতি হচ্ছে, সামনে খুব দ্রুতই দৃশ্যমান হবে। আমাদের টিচিং, রিসার্চসহ নানা কাজের পাশাপাশি এই তদন্ত কমিশনের কাজ করতে হয়। তবে আগামী সিন্ডিকেট মিটিং হয়ে গেলে কাজ দৃশ্যমান হবে বলে আশা করা যায়।”
তিনি বলেন, “তদন্ত কমিশনে শতাধিক অভিযোগ পড়েছে। এর মধ্যে অনেক আছে চিরকুট ধরনের, যেগুলো বিবেচনায় নেওয়া যাবে না। তবে আমরা তিন-চারটা বড় অভিযোগ নিয়ে কাজ করছি। একটা ঘটনার সঙ্গে অনেক মানুষ জড়িত। সবাইকে আলাদা আলাদা করে ডেকে তদন্ত করা একটু সময়সাপেক্ষ ও জটিল।”
তিনি আরো বলেন, “অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেটা করেছে, কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়াই প্রশাসনিক আদেশে নিষিদ্ধ বা বহিষ্কার করেছে। তবে আমরা চাচ্ছি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ, অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর কথা শুনে সুপারিশ করতে। একই ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত ও সংশ্লিষ্টদের ডেকে যাচাই-বাছাই করার কারণে আমাদের সময় বেশি লাগছে।”
আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, “আমরা ৭০ এর বেশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আবার অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা অভিযুক্ত এবং ২০১৫ সালের আগে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গেছে। তাদের সাথে আমরা যোগাযোগ করতে পারছি না। তাই বিষয়গুলো একটু জটিল হয়ে গেছে এবং সময় বেশি লাগছে।”
অভিযুক্তদের থেকে একটি পক্ষ অর্থ গ্রহণ করে মিমাংসা করছে- এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা এ ব্যাপারে কিছু জানি না। আমাদের কাছে যে অভিযোগগুলো এসেছে, এগুলো নিয়ে তদন্ত করবো। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া।”
ঢাকা/লিখন/মেহেদীঢাকা/লিখন/
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ত কর সদস য গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।