ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশের ৬৩ বিশিষ্ট নাগরিক। এই যুদ্ধবিরতি যেন শুধু একটি সাময়িক বিরতি না হয় বরং এটি যেন একটি টেকসই কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার সূচনা হয়, সে বিষয়েও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। আজ রোববার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তাঁরা।

বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘কাশ্মীরের পেহেলগামে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করছি। আমরা নিরপরাধ মানুষের প্রাণহানিতে শোকাহত এবং সহিংসতার শিকার সকল মানুষের পাশে আছি—তারা যেখানেই থাকুক, যেকোনো সীমান্তেরই হোক না কেন।’

বিবৃতিদাতারা আরও বলেন, ‘আমরা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। এটি একটি জরুরি পদক্ষেপ। এই অঞ্চলে উত্তেজনা প্রশমনের এবং স্থিতিশীলতার সূচনা হতে পারে এ উদ্যোগ। তবে সীমান্তে নতুন করে গোলাগুলি এবং বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্নতার খবর আমাদের এটা মনে করিয়ে দেয় যে কাগজে লেখা যুদ্ধবিরতির কোনো মূল্য নেই।’

বিবৃতিতে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এবং অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর এলাকা হিসেবে পরিচিত। এই অঞ্চলে নতুন করে কোনো সংঘাত শুরু হলে তা হবে ধ্বংসাত্মক। এটি শুধু এই অঞ্চল নয়, বৈশ্বিক শান্তিকেও হুমকির মুখে ফেলবে।

বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘আমরা সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের এবং সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে চালানো হিংসাত্মক হামলার কড়া নিন্দা জানাই। পেহেলগাম হামলার একটি পূর্ণাঙ্গ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক তদন্তের পক্ষে আমাদের সমর্থন ব্যক্ত করছি। ন্যায়বিচার হতেই হবে—কিন্তু সেটি যেন নতুন করে রক্তপাতের বিনিময়ে না হয়। আমরা ভারত ও পাকিস্তান সরকারকে আহ্বান জানাই, যুদ্ধবিরতি যেন শুধু একটি সাময়িক বিরতি না হয় বরং এটি যেন একটি টেকসই কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার সূচনা হয়। এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতি রক্ষা করা শুধু সামরিক দায়িত্ব নয়—এটি একটি রাজনৈতিক, নৈতিক এবং আঞ্চলিক কর্তব্য।’

বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘আমরা গোটা দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও বিবেকবান মানুষদের প্রতি আহ্বান জানাই—তাঁরা যেন জবাবদিহি দাবি করেন, যুদ্ধের আহ্বানকে প্রতিহত করেন এবং শান্তি ও ন্যায়বিচারের পক্ষে তাঁদের কণ্ঠ উচ্চারণ করেন। আসুন, আমরা সহিংসতা ও বিভেদের নয়, বরং সহযোগিতা, সহানুভূতি ও যৌথ ভবিষ্যতের ভিত্তিতে একটি নতুন আগামী গড়ে তুলি।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন হামিদা হোসেন, সুলতানা কামাল, ফারুক সোবহান, খুশী কবির, ইফতেখারুজ্জামান, রাশেদা কে চৌধূরী, পারভীন হাসান, সারা হোসেন, আনু মোহাম্মদ, ফস্টিনা পেরেইরা, সাঈদ আহমেদ, শামসুল হুদা প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় গুলিতে ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে গুলিতে অন্তত তিনজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন পুলিশ সদস্য।

অঙ্গরাজ্যটির পুলিশ কমিশনার ক্রিস্টোফার প্যারিস বুধবার সংবাদমাধ্যমকে হতাহতের এ তথ্য জানান।

ক্রিস্টোফার প্যারিসের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরের এ ঘটনায় সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আহত দুই পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জশ শাপিরো ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার বা প্রায় ১১৫ মাইল পশ্চিমে নর্থ কোডোরাস টাউনশিপে ঘটনাস্থলে গেছেন।

কে বা কারা এ গুলিবর্ষণের পেছনে জড়িত, সে সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে পুলিশ কোনো তথ্য দেয়নি।

অ্যাটর্নি জেনারেল পামেলা বন্ডি পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে ‘আমাদের সমাজের জন্য একটি অভিশাপ’ বলে অভিহিত করেছেন।

পামেলা বন্ডি আরও বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তাদের সহায়তার জন্য ফেডারেল এজেন্টরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ