৮৬ শতাংশ ধানি জমি ইসলাম হোসেনের। আগে সেখানে বোরো ধান চাষ করতেন। বছরে ৭০-৮০ মণ ধান পেতেন মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার এই কৃষক। গত বর্ষায় তিনি ফাঁদে পড়েন ইটভাটার দালালের। তাদের কথায় ধানের চেয়ে বেশি লাভের আশায় মহাদেবপুর ইউনিয়নের ফলসাটিয়া মেসার্স রাহাত ব্রিকসের কাছে জমির মাটি বিক্রি করে দেন।
ভাটার দালালেরা এভাবে প্রলোভনে ফেলছে উপজেলার শত শত কৃষককে। এ ছাড়া পুকুর খননসহ নানা কারণে শিবালয়ে আবাদি জমি কমছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ বছরে এখানে ২২ হেক্টর কৃষিজমি কমেছে। ২০১৫ সালে শিবালয়ে ফসলি জমি ছিল ১২ হাজার ৫৯৮ হেক্টর। ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৫৭৬ হেক্টর। বছরে গড়ে এখানে ২ হেক্টর কৃষিজমি কমছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আইন অমান্য করে এক্সক্যাভেটর (ভেকু) দিয়ে ফসলি জমির টপ সয়েল কাটা হচ্ছে। এসব কিনে মাটি ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন স্থানীয় চারটি ইটভাটায়। তারা সাধারণ কৃষকদের মাটি বিক্রির জন্য দালাল নিয়োগ করেন। তারা বেশি টাকার লোভ দেখিয়ে মাটি বিক্রিতে উৎসাহিত করছেন। কৃষকরাও লোভে পড়ে নগদ টাকার আশায় জমির মাটি বিক্রি করছেন। জমি থেকে মাটি কাটার জন্য ৯-১০ ফুট গভীর করে গর্ত খোঁড়া হয়। এ কারণে এসব জমি পরে ডোবায় পরিণত হচ্ছে।
উলাইল ইউনিয়নের গান্দাইর গ্রামের হারুন শেখ তাঁর ৪০ শতাংশ জমির মাটি কেটে মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন করছেন। কিছু মাটি বিক্রিও করেছেন। তাঁর মতোই বোয়ালী, বেলতা, মানিকনগরসহ বিভিন্ন স্থানের কৃষকরা এভাবে মাটি বিক্রি করছেন। ফলসাটিয়ার কৃষক দুলাল হোসেন বলেন, কিছু কৃষককে বেশি টাকার লোভ দেখিয়ে জমির টপসয়েল কিনে নিচ্ছেন মাটি ব্যবসায়ীরা। দিন দিন জমির উর্বরতা কমছে। ফসলও আগের তুলনায় কম হচ্ছে।
ফলসাটিয়ার মেসার্স রাহাত ব্রিকসের ম্যানেজার নাছির উদ্দিন বলেন, আমরা কৃষকদের কাছ থেকে জমির মাটি দালালদের মাধ্যমে কিনে আনছি। এ জন্য তাদের অতিরিক্ত দাম দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদার বলেন, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বছরে ফসলি জমি কমেছে ২২ হেক্টর। উন্নত জাতের বীজ রোপণ করায় আগের তুলনায় ফসলের ঘাটতি হচ্ছে না। বেশি লাভের আশায় কিছু কৃষক মাটি বিক্রি করছেন। তারা নিষেধ করছেন, কিন্তু আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন না।
ইউএনও মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইটভ ট ব যবস করছ ন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালী-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী বদলের দাবিতে বিক্ষোভ
নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ি আংশিক) সংসদীয় আসনে বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমানের অনুসারী নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করেছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় সেনবাগ উপজেলার পরিষদ সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মশাল হাতে নিয়ে শত শত নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মশাল মিছিলটি সেনবাগ উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
আরো পড়ুন:
জকসু নির্বাচন: ছাত্রদলের প্যানেলকে ‘ভাড়াটিয়া’ আখ্যা দিয়ে একাংশের বিক্ষোভ
বিচারকের ছেলে হত্যার প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ
এ সময় নেতাকর্মীরা মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে স্লোগান দেন। বিক্ষোভকারীরা নোয়াখালী-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তন করে কাজী মফিজুর রহমান মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান।
গত ৩ নভেম্বর বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড নোয়াখালী-২ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুককে প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়।
মিছিল শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘‘জয়নুল আবদীন ফারুক কয়েকবার সংসদ সদস্য হয়েও সেনবাগে উন্নয়ন করেননি। দুর্দিনে নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়াননি। বিপরীতে কাজী মফিজুর রহমান নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। উন্নয়ন বঞ্চিত সেনবাগের মানুষ পরিবর্তন চান তিনি।’’
ঢাকা/সুজন/বকুল