মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি ও এর ভয়াল থাবা থেকে সবাইকে দূরে রাখতে বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করে আসছে সমকাল সুহৃদ সমাবেশ। এর ধারাবাহিকতায় ১১ ও ১২ মে নওগাঁয় মানববন্ধন ও সমাবেশ এবং নড়াইলে মাদকবিরোধী আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়
নওগাঁয় মানববন্ধন
কাজী কামাল হোসেন
‘মাদকের বিরুদ্ধে আমরা’ স্লোগানে নওগাঁয় মাদকবিরোধী মানববন্ধন ও সুহৃদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১১ মে বিকেল ৫টায় সমকাল সুহৃদ সমাবেশ নওগাঁর আয়োজনে শহরের মাছবাজার এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হয়। সুহৃদ সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যুক্ত হন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যে কোনো পরিবার ও সমাজের জন্য মাদক হুমকিস্বরূপ। মাদকাসক্ত ব্যক্তি অপরাধ ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড করতে কোনো দ্বিধা করে না এবং মাদকাসক্তি সমাজে অপরাধপ্রবণতা বাড়ানোসহ শৃঙ্খলা নষ্ট করে। পরিবার ও সমাজকে ধ্বংস করে দেয়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অলিগলি ও পাড়া-মহল্লায় আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে নারী ও কিশোর মাদকাসক্তের সংখ্যা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রয়েছে শিক্ষার্থী। মাদকাসক্তি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তা সমাজে ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে।
সুহৃদরা বলেন, ‘সমকাল শুধু একটি সংবাদপত্রই নয়, একটি সামাজিক আন্দোলনও। এ সামাজিক আন্দোলনের অন্যতম হচ্ছে মাদকবিরোধী আন্দোলন। তাই সমকাল সুহৃদ সমাবেশের উদ্যোগে মাদকবিরোধী এ কর্মসূচি পালন করছে এবং আগামী দিনেও এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
অতিথিরা বলেন, ‘মাদকের করাল গ্রাসে যুবসমাজ আজ ধ্বংসের পথে। প্রশাসন মাদককারবারিদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।’ নওগাঁ শহরের মাছবাজার, নুনিয়াপট্টি, ঢাকা বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় অবাধে মাদক বিক্রি বন্ধে জেলা পুলিশ প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা রাখার পাশাপাশি মাছবাজার এলাকায় একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করে মাদক বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বক্তারা।
সুহৃদ সদস্য সচিব প্রকৌশলী চন্দন কুমার দেবের সঞ্চালনায় যুগ্ম আহবায়ক মুরাদ হাসানের সভাপতিত্বে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন– বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা ফজলে রাব্বি, মিজানুর রহমান, সুহৃদ সুষমা সাথী, মাহবুবুল আলম আলো, ফারুক চৌধুরী, মহাসিন আলী রুবেল, শরিফ নেওয়াজ রনি প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন প্রশিকা বিদ্যানিকেতন নওগাঁর শিক্ষক মুনিরা আক্তার, মৌসুমী খাতুন, তনুকা পারভীন, খাইরুন, খুশিসহ জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক এবং সুহৃদরা।
সমন্বয়ক সুহৃদ সমাবেশ, নওগাঁ
নড়াইলে আলোচনা
শান্ত সরকার
‘মাদক সেবন রোধ করি, সুস্থ সুন্দর জীবন গড়ি’ প্রতিপাদ্যে নড়াইল সুহৃদ সমাবেশের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মাদকবিরোধী শপথ ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। নড়াইল বল্লারটোপ আইডিয়াল স্কুলে এ কর্মসূচি পালন করেন সুহৃদরা। এ সময় ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় মাদকবিরোধী নানা স্লোগান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ এম এম সাঈদুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক বিপ্লব খন্দকার, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক প্রশান্ত কুমার সরকার, সুস্মিতা বিশ্বাস, জয়দেব কুমার কুণ্ডু, ক্রীড়া শিক্ষক ইতি রানী কুণ্ডু, সুহৃদ চয়ন কুণ্ডু প্রমুখ।
এম এম সাঈদুর রহমান বলেন, ‘শুধু অশিক্ষিতদের মধ্যে নয়, এখন শিক্ষিত শ্রেণির মধ্যেও মাদকাসক্তি বাড়ছে। মাদকের নেতিবাচক প্রভাব পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সবখানেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আজকের শিশু আগামী দিনের কাণ্ডারি। তাই প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী প্রচারণা করতে হবে। পরিবার ও সমাজ থেকে আওয়াজ তুলতে হবে মাদকের বিরুদ্ধে।’
শপথ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে। বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী কোনো রকম মাদকের ব্যবহার কোনো দিন যেন না করে সেই প্রত্যয় ব্যক্ত করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়।
সভাপতি সুহৃদ সমাবেশ, নড়াইল
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম দকব র ধ পর ব র অন ষ ঠ সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
তিন দফা দাবিতে ঢাবি মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
তিন দফা দাবিতে রাজধানীর মৎস্য অধিদপ্তরের সামনে মানববন্ধন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের একদল শিক্ষার্থী। সোমবার দুপুরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দপ্তরে তাঁদের দাবিসহ একটি স্মারকলিপি জমা দেন।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো—২০১৫ সালে সৃজিত ৬৩৭টি স্থায়ী পদের অর্গানোগ্রাম দ্রুত বাস্তবায়ন করা, নিয়োগ বিধিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দেশে বর্তমানে প্রায় ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাৎস্যবিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করানো হচ্ছে। প্রতিবছর এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করছেন। অথচ এই বিশালসংখ্যক ফিশারিজ গ্র্যাজুয়েটদের উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ দেশে নেই।
ইমরান হোসেন আরও বলেন, বিশেষায়িত ডিগ্রি অর্জনের পরও অধিকাংশ ফিশারিজ গ্র্যাজুয়েটরা নিজ খাতে চাকরি না পেয়ে বাধ্য হচ্ছেন অন্যান্য সেক্টরের দশম থেকে ১৬তম গ্রেডের চাকরিতে যোগ দিতে। ২০১৫ সালে মৎস্য অধিদপ্তরের প্রস্তাবিত ৩৯৫টি ‘মৎস্য সম্প্রসারণ ও মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা’ পদসহ ৬৩৭টি স্থায়ী পদের অর্গানোগ্রাম বাস্তবায়িত না হওয়ায় এমনটা হচ্ছে।