ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধের জেরে হঠাৎ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। পাঞ্জাব কিংস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালসের খেলার মাঝ পথেই মাঠের বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং অনির্দিষ্ট কালের জন্য আইপিএল স্থগিত করা হয়। ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য দারুণ খবর হচ্ছে আবারো শুরু হতে যাচ্ছে লিগটি। আগামী সপ্তাহ থেকে মাঠে গড়াবে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই টি-টোয়েন্টি আসরটি।

শনিবার (১৭ মে) রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্সের ম্যাচ দিয়ে পুনরায় শুরু হতে যাচ্ছে আইপিএল। বিসিসিআই সোমবার (১২ মে) রাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। মোট ১৭টি ম্যাচ ছয়টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। ফাইনাল ম্যাচ মাঠে গড়াবে ৩ জুন। প্লে-অফ ম্যাচগুলোর ভেন্যু এখনও চুড়ান্ত করা হয়নি।

এক বিবৃতিতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) জানিয়েছে, “সরকার এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা এবং সব মূল অংশীদারদের সঙ্গে পরামর্শের পর টুর্নামেন্ট চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ভারত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে, পাকিস্তান নয়: নিরাপত্তা সূত্র

বাঁচতে হলে পাকিস্তানকে সন্ত্রাস নির্মূল করতে হবে: মোদি

আইপিএল ২০২৫-এর পরিবর্তিত সময়সূচি:

তারিখ     সময়               ম্যাচ                                                                                ভেন্যু
১৭ মে     সন্ধ্যা ৭:৩০      আরসিবি বনাম কেকেআর                                                বেঙ্গালুরু
১৮ মে    বিকাল ৩:৩০    রাজস্থান রয়্যালস বনাম পাঞ্জাব কিংস                                জয়পুর
১৮ মে    সন্ধ্যা ৭:৩০       দিল্লি ক্যাপিটালস বনাম গুজরাট টাইটানস                         দিল্লি
১৯ মে    সন্ধ্যা ৭:৩০       লখনউ সুপার জায়ান্টস বনাম সানরাইজার্স হায়দরাবাদ       লক্ষ্ণৌ
২০ মে    সন্ধ্যা ৭:৩০       চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রাজস্থান রয়্যালস                       দিল্লি
২১ মে    সন্ধ্যা ৭:৩০       মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বনাম দিল্লি ক্যাপিটালস                               মুম্বই
২২ মে    সন্ধ্যা ৭:৩০       গুজরাট টাইটানস বনাম লখনউ                                        আহমেদাবাদ
২৩ মে    সন্ধ্যা ৭:৩০       আরসিবি বনাম হায়দরাবাদ                                               বেঙ্গালুরু
২৪ মে    সন্ধ্যা ৭:৩০       পাঞ্জাব কিংস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালস                                জয়পুর
২৫ মে    বিকাল ৩:৩০    গুজরাট টাইটানস বনাম চেন্নাই সুপার কিংস                      আহমেদাবাদ
২৫ মে    সন্ধ্যা ৭:৩০       হায়দরাবাদ বনাম কেকেআর                                            দিল্লি
২৬ মে    সন্ধ্যা ৭:৩০       পাঞ্জাব কিংস বনাম মুম্বই ইন্ডিয়ান্স                                   জয়পুর
২৭ মে    সন্ধ্যা ৭:৩০        লখনউ সুপার জায়ান্টস বনাম আরসিবি                            লক্ষ্ণৌ
২৯ মে    সন্ধ্যা ৭:৩০        কোয়ালিফায়ার ১                                                             ভেন্যু ঘোষণা হয়নি
৩০ মে    সন্ধ্যা ৭:৩০       এলিমিনেটর                                                                    ভেন্যু ঘোষণা হয়নি
১ জুন    সন্ধ্যা ৭:৩০         কোয়ালিফায়ার ২                                                             ভেন্যু ঘোষণা হয়নি
৩ জুন    সন্ধ্যা ৭:৩০        ফাইনাল                                                                          ভেন্যু ঘোষণা হয়নি

সংশোধিত সময়সূচি অনুযায়ী কেবল একদিনই দুটি ম্যাচ রয়েছে, দুটিই রবিবারে। কোয়ালিফায়ার ১ এবং এলিমিনেটর যথাক্রমে ২৯ ও ৩০ মে অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার হবে ১ জুন এবং ফাইনাল ৩ জুন।

যদিও কিছু সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল যে, বাকি টুর্নামেন্টটি চেন্নাই, হায়দরাবাদ এবং বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত হতে পারে। বিসিসিআই শেষ পর্যন্ত দিল্লি, লখনউ, জয়পুর, মুম্বই ও আহমেদাবাদকেই ভেন্যু হিসেবে বেছে নিয়েছে। সাথে অবশ্য বেঙ্গালুরুর নামও আছে, তবে বাদ পড়েছে চেন্নাই, হায়দরাবাদ। চেন্নাই সুপার কিংস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও পাঞ্জাব কিংসের বাকি হোম ম্যাচগুলো নিজের ভেন্যুতে খেলতে পারবে না।

দিল্লিতে ২০ মে চেন্নাই বনাম রাজস্থানের ম্যাচ এবং ২৫ মে হায়দরাবাদ বনাম কেকেআরের ম্যাচ দুটি অনুষ্ঠিত হবে। এই দুটি দল প্লে’অফের দৌড়ে নেই। ৮ মে পাঞ্জাব কিংস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালস ম্যাচটি বাতিল হওয়ায় সেটি ২৪ মে জয়পুরে পুনরায় খেলা হবে। পাঞ্জাব কিংস তাদের বাকি দুটি ম্যাচও জয়পুরে খেলবে কারণ মুল্লানপুর এই তালিকাভুক্ত ভেন্যুগুলির মধ্যে নেই।

মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, যারা এখনও প্লে-অফের লড়াইয়ে আছে, তারা ২১ মে দিল্লির বিপক্ষে ওয়াংখেড়েতে তাদের শেষ হোম ম্যাচ খেলবে।

যুদ্ধের কারণে বিসিসিআই এক সপ্তাহের জন্য টুর্নামেন্ট স্থগিত করে। ইতিমধ্যেই অনেক বিদেশি খেলোয়াড় দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। এখন দেখার বিষয় এই কঠিন সময়ে কজন পুনরায় ফিরবেন। তাছাড়া সামনে আন্তর্জাতিক ব্যস্ত সূচি রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট তারকাদের উপর একটা চাপ থাকবে। আইপিএল ফাইনালের এক সপ্তাহ পরই (১১ জুন) শুরু হচ্ছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বন ম দ ল ল ক য প ট লস হ য দর ব দ অন ষ ঠ ত ব স স আই ফ ইন ল ম ম বই বন ম ক

এছাড়াও পড়ুন:

মালয়েশিয়ায় স্বচ্ছভাবে কর্মী পাঠানোর দাবি ২৩ সংগঠনের

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ‘সিন্ডিকেটের’ (চক্র) সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অভিবাসন নিয়ে কাজ করা ২৩টি সংগঠনের মোর্চা বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্রেন্টস (বিসিএসএম)। তারা বলেছে, অতীতে সিন্ডিকেটসহ যেসব কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছিল সেগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। উন্মুক্ত ও স্বচ্ছভাবে কর্মী পাঠানোর দাবি জানিয়েছে বিসিএসএম।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে বিসিএসএম। এতে বলা হয়, অতীতে সিন্ডিকেটের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, তাদের বিচার করতে হবে এবং কোনোভাবেই যেন তারা নতুন করে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত হতে না পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত সাবেক সংসদ সদস্য লোটাস কামালের (সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল) পরিবারসহ সাবেক তিন সংসদ সদস্যকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম মালয়েশিয়াকিনি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানায়, মালয়েশিয়াগামী বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের শোষণে জড়িত প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত স্থগিত করার মালয়েশিয়ার অনুরোধে বাংলাদেশ রাজি হয়েছে।

এসব খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বিসিএসএম বলেছে, মালয়েশিয়ার সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি না দেওয়া এবং অভিযোগের পুনঃ তদন্ত এবং বিচারিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছে তারা। তা ছাড়া এই সিন্ডিকেটের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের যে অভিযোগ আছে, সেই অগ্রগতি সম্পর্কেও সাধারণ নাগরিকদের অবহিত করার জোর দাবি জানাচ্ছে বিসিএসএম। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণের প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত স্থগিত করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না এবং বিসিএসএম এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
সরকারের অর্থনীতিবিষয়ক শ্বেতপত্রে, গণমাধ্যমে গত এক বছরে প্রকাশিত বিভিন্ন খবর এবং দুদকের অভিযোগ থেকে জানা যাচ্ছে, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে একেকজন কর্মীর কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত খরচের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি টাকা নেওয়া হয়েছে এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, যার সঙ্গে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ দুই দেশেরই সিন্ডিকেট জড়িত। এর আগে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দশজনের সিন্ডিকেট হয়েছিল এবং মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারকে ঘিরে নানা অনিয়মের খবর নতুন নয়। কিন্তু কখনোই তাদের বিচার হয়নি।

বিসিএসএমের চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী ও কো–চেয়ার সৈয়দ সাইফুল হকের স্বাক্ষরে পাঠানো বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তারা আশঙ্কা করছেন, এখন এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা যদি জবাবদিহি ও দুর্নীতির অভিযোগ থেকে রেহাই পায়, তবে একই ধরনের সিন্ডিকেট আবারও গড়ে উঠবে। বিসিএসএম আহ্বান জানাচ্ছে, ১১ থেকে ১৩ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার মালয়েশিয়া সফরে শ্রমবাজার উন্মোচন করতে গিয়ে সিন্ডিকেট নির্মূল করার বিষয়টি যেন গুরুত্ব না হারায়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিবাসন নিয়ে কাজ করা ২৩টি নাগরিক সংগঠনের জোট বিসিএসএম অতীতেও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। এর আগে ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল আরেক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিল, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া এলেই স্বচ্ছতার বদলে নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটে। অতীতে সিন্ডিকেটসহ যেসব কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছিল আবার যেন ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

২৩ সংগঠন হচ্ছে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু), ওয়্যারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক, অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ), বাস্তব, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাসুগ-ডায়াসপোরা অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, রাইট যশোর, ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক অব অলটারনেটিভ ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন (ইনাফি), মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশি অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন (বমসা), ইমা রিসার্চ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড উড ওয়ার্কার্স ফেডারেশন (বিসিডব্লিউডব্লিউএফ), ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা), বোয়াফ, সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন (ডেভকম) লিমিটেড, ফিল্মস ফর পিস ফাউন্ডেশন, চেঞ্জ মেকারস, অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি), সেন্টার ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স (সিসিডিএ), কর্মজীবী নারী, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস), বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্র (বিএনএসকে)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ