সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের রিমান্ড শুনানিকে কেন্দ্র করে নিম্ন আদালতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপিপন্থি কয়েকজন আইনজীবী ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে এ হুমকি দেন।

এদিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। বেলা ৩টা ৪ মিনিটের দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে ঢাকার মহানগর হাকিম জুয়েল রানার আদালতে তোলা হয়।

এসময় আদালতে অন্য মামলার শুনানি চলছিল। তবে মমতাজকে আদালতে নেওয়া হলে পুরো এজলাসকক্ষ পরিপূর্ণ হয়ে যায়।

মমতাজ বেগমকে যখন এজলাসকক্ষে নেওয়া হয় তখন সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহের জন্য সেখানে যান। তারা এজলাসকক্ষে প্রবেশ করেন। তখন দুই আইনজীবী মাহবুব আলম, আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এজলাসকক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার জন্য বলেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটি হয় দুই পক্ষের। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়। মমতাজের সাত দিনের রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ডের আদেশ হওয়ার পর মমতাজ বেগমকে হাজতখানায় নেওয়া হয়। পরে আইনজীবীরা ব্রিফ করতে সিএমএম আদালতের সামনে রাখা ডায়াসের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে নিজেদের (আইনজীবীদের) মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এসময় বেসরকারি টেলিভিশন 'এখন' এর রাব্বি হোসেন, সময় টেলিভিশনের আসিফ মাহমুদ সিয়াম আইনজীবীদের শান্ত হয়ে ধস্তাধস্তি না করে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। এরপরই সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন দুই আইনজীবী মাহবুব আলম, আক্তার হোসেন। উপস্থিত সাংবাদিকরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তারা আরও চড়াও হন। কে কোথায় কাজ করেন তা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ওই আইনজীবীরা। অকথ্য ভাষায় সাংবাদিকদের গালিগালাজ করেন। কয়েকজন সাংবাদিকদের হেনস্তা করেন এবং গালিগালাজ করেন তারা।

এসময় বিএনপিপন্থি কয়েকজন আইনজীবী তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে কয়েকজন আইনজীবী তাদের পক্ষও নেন। এ অবস্থায় ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী অভিযুক্ত দুই আইনজীবীকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এবিষয়ে সাংবাদিক রাব্বি হোসেন বলেন, এজলাসে আমরা কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত হলে, আইনজীবীরা আমাদের বলেন এখানে সাংবাদিকদের কী কাজ। আমি বলেছি নিউজের জন্যই এসেছি। পরে শুনানি শেষ হলে আমরা বিনয়ের সাথে আইনজীবীদের ডায়াসের সামনে দাঁড়াতে বলি। তারপরই আমিসহ একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যান আইনজীবীরা। এক পর্যায়ে আমাদের ধাক্কা দিতে থাকেন। ১৭ বছর কই ছিলাম, বিএনপিপন্থি আইনজীবী পরিচয় দিয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

আরেক সাংবাদিক সিয়াম বলেন, মাহবুব আলী, আক্তার হোসেন বারবার সাংবাদিকদের বলছিলেন, আদালত আমার, এখানে আমরা যা বলব তাই হবে। এতে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা বাড়ে। পরে তিনি আমাকে দালাল সাংবাদিক, ধান্দাবাজ বলে গালি দেন। তিনিসহ আরো কয়েকজন আইনজীবী গায়ে হাত তোলার জন্য তেড়ে আসেন।

এ ঘটনায় কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি লিটন মাহমুদ এবং সাধারণ সম্পাদক মামুন খান। দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইনজ ব দ র ই আইনজ ব আইনজ ব র ন আইনজ ব র স মন র জন য এজল স মমত জ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে ২৭ সাংবাদিকসহ ৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

চট্টগ্রামে ২৭ সাংবাদিকসহ ৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে আবেদনটি করেন রেজাউল ইসলাম নামের এক আইনজীবী। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার আবেদনে রেজাউল নিজেকে ছাত্রদলের সাবেক নেতা এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম চট্টগ্রামের সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছেন।

মামলার আবেদনে বাদী অভিযোগ করেছেন, তাঁকে সাংবাদিকেরা মারধর করেন, মুঠোফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেন, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।

এদিকে চট্টগ্রামে কর্মরত সাংবাদিকদের ‘মিথ্যা’ মামলায় জড়ানোর ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নসহ (সিইউজে) বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন। এক বিবৃতিতে সিইউজে সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন, ওই যুবক গত ৩০ এপ্রিল নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মিলনী অনুষ্ঠান প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রকাশ্যে। মে দিবস উপলক্ষে ১ মে আনোয়ারার পারকি সৈকতে ওই সম্মিলনীর আয়োজন ছিল। ঘোষণার পরদিন (১ মে) সকালে চট্টগ্রাম নগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের গেটের সামনে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় তিন সাংবাদিক আহত হন। ওই ঘটনায় ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন রেজাউল ইসলামের সঙ্গে শহীদ ওরফে কোরবান আলীকেও খুলশী থানা-পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে রেজাউল উল্টো আদালতে মামলার আবেদন করেছেন বলে মনে করেন সাংবাদিকনেতারা।

মামলার ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি সালাহ উদ্দিন রেজা এবং সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সফিক আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফ আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাশেদ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক রাজেশ চক্রবতী, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসির উদ্দিন, চট্টগ্রামে কর্মরত সাংবাদিক সম্মিলনী কমিটির সদস্য নওশের আলী খান, রফিকুল ইসলাম সেলিম, হোসাইন তৌফিক ইফতেখার, শিমুল নজরুল ও কামাল পারভেজ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভালো পড়ালেখা করতে হবে, মানুষের মত মানুষ হতে হবে : ডিসি
  • চট্টগ্রামে ২৭ সাংবাদিকসহ ৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
  • রূপগঞ্জে সাংবাদিকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • মিশরের সঙ্গে দ্রুত পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তি করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের মাঝে সঞ্চয়পত্র প্রদান
  • নৌপথে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স জারি করেছি : নৌ পুলিশ না’গঞ্জ 
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ছিনতাইকারীর কবলে ব্যবসায়ী, নগদ অর্থ লুট
  • ভাড়া দিতে দেরি, ভাড়াটিয়ার ওপর বাড়ির মালিকের হামলা
  • গোপালগঞ্জে ব্যক্তিগত গাড়িতে মিলল ইয়াবা ও অস্ত্র, গ্রেপ্তার ২