মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) গ্রেপ্তার রয়েছেন ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে বিচার চলছে। এর মধ্যেই নিজ শহর দাভাওয়ের মেয়র নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে ফলে জয়ী হয়েছেন তিনি।

সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটিতে গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট গণনার ৮০ শতাংশ শেষ হওয়ার পর দেখা গেছে, দুতার্তে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে প্রায় আট গুণ বেশি ভোট পেয়েছেন।

আরও পড়ুনফিলিপাইনে মাদকবিরোধী যুদ্ধের সব দায় নিলেন দুতার্তে১৩ মার্চ ২০২৫

৮০ বছর বয়সী এই নেতা তাঁর ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ নীতির জন্য আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়লেও দাভাও শহরে এখনো অপরাধ দমনকারী হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়। ভক্তমহলে ‘দুতার্তে হ্যারি’ ও ‘দ্য পানিশার’ নামে পরিচিত এই রাজনীতিবিদ।

দুতার্তে কয়েক দফায় ফিলিপাইনের দাভাওয়ের সিটি মেয়র ছিলেন। পরে তিনি ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট হন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। দুতার্তে মেয়র ও প্রেসিডেন্ট থাকাকালে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামেন। কথিত এই মাদকবিরোধী যুদ্ধের নামে বহু মানুষকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়।

আরও পড়ুনএখন দুতার্তেকে কী করা হবে১১ মার্চ ২০২৫

মাদকবিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) পরোয়ানার আওতায় গত মার্চ মাসে ম্যানিলা থেকে দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২০১৬ সালে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ল প ইন র অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

‘জঙ্গি নাটক’ সাজিয়ে সাবেক মেজর জাহিদুল হত্যার অভিযোগ চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী জেবুন্নাহার ইসলাম। আজ রোববার এই অভিযোগ দেন জেবুন্নাহার।

জেবুন্নাহারের অভিযোগে বলা হয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে তাঁর স্বামী মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি (জেবুন্নাহার) ও দুই কন্যাশিশুকে ৪ মাস ৭ দিন গুম করে রাখা হয়।

যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁরা হলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহিদুল হক, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) তৎকালীন প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) তৎকালীন প্রধান মো. আসাদুজ্জামান, মিরপুর বিভাগের তৎকালীন উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আহমেদ, রূপনগর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদ আলম, রূপনগর থানা–পুলিশের তৎকালীন অজ্ঞাতনামা সদস্যরা।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১০টার দিকে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জেবুন্নাহারকে তাঁর দুই শিশুসন্তানসহ চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে বন্দী করে রাখেন। পরের দিন আসামিরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন তিনি জানতে চান, তাঁর স্বামী কোথায়? আসামিরা তখন বলতে থাকেন, তিনি ও তাঁর স্বামী জঙ্গি—এই স্বীকারোক্তি না দিলে তাঁকেও তাঁর স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তখন তিনি বুঝতে পারেন, তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। পরে আসামিদের কোনো একজন বলেন, তাঁরাই তাঁর স্বামীকে হত্যা করেছেন।

জেবুন্নাহারের অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে হত্যার পর তাঁদের ওপর নেমে আসে অমানবিক, নিষ্ঠুর ও জঘন্যতম নির্যাতন। জঙ্গি নাটক করে তাঁকে, তাঁর মেয়েদের ধরে নিয়ে ডিবির কথিত আয়নাঘরে ৪ মাস ৭ দিন গুম করে রাখা হয়। তাঁদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। তাঁর কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের নামে চলে অমানুষিক নির্যাতন। তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়, যেন তিনি তাঁর স্বামীকে জঙ্গি বলে স্বীকার করেন। তিনি যদি স্বীকার না করেন, তাহলে তাঁকে ও দুই মেয়েকে তাঁর স্বামীর মতোই পরিণতি ভোগ করতে হবে, অর্থাৎ হত্যা করা হবে।

অভিযোগে বলা হয়, দীর্ঘদিন জেবুন্নাহারের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি না পেয়ে বড় মেয়েকে তাঁর কাছ থেকে নিয়ে গিয়ে কথিত জঙ্গি নাটক সাজিয়ে আজিমপুরের একটি বাসা থেকে তাকে উদ্ধার দেখানো হয়। কিশোর ভিকটিম সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৬ সালের ২৪ ডিসেম্বর আরেকটি জঙ্গি নাটক সাজিয়ে আশকোনার বাসা থেকে জেবুন্নাহারকে উদ্ধার দেখানো হয়। তারপর তাঁকে ডিবি কার্যালয় নিয়ে যাওয়া হয়। একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। ডিবি কার্যালয়ে আরও ১৬ দিন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে মানসিক নির্যাতন করা হয়। ১৬ দিন পর তাঁকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। তখন তিনি জানতে পারেন, তাঁকে তাঁর বাসা থেকে চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়।

জেবুন্নাহারের অভিযোগ, এরপর দীর্ঘ চার বছর জেলে থাকার পর তিনি জামিনে বের হন। তিনি দুই বছর জামিনে থাকেন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার দুই বছর পর তাঁর জামিন বাতিল করে দেয়। ফ্যাসিস্ট হাসিনার ভয় ছিল, তিনি জামিনে থাকা অবস্থায় যদি তাঁর স্বামীর হত্যার বিচার চান—এই সন্দেহে তাঁর জামিন বাতিল করে দেয়। ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট তাঁকে আবার জেলখানায় পাঠানো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়। ৩১ আগস্ট জেবুন্নাহার আবার জামিনে মুক্ত হন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওবামা–বুশের প্রতিকৃতিও ট্রাম্পের ক্ষোভ থেকে রেহাই পাচ্ছে না, হোয়াইট হাউসে দুজনের ছবি সরিয়ে নেওয়া হলো
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রফেশনাল কোর্সে ভর্তিতে চলছে আবেদন, ক্লাস ২২ সেপ্টেম্বর
  • ‘জঙ্গি নাটক’ সাজিয়ে সাবেক মেজর জাহিদুল হত্যার অভিযোগ চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে