আইভীকে গ্রেপ্তারে বাধা, ৫২ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৩
Published: 14th, May 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারের পর বহনকারী পুলিশের গাড়িতে হামলার ঘটনায় ৫২ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও মামলাটিতে আরও দেড়শ থেকে দুইশ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (১২ মে) রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন মৃধা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছির আহমেদ মামলার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মামলায় বেশিরভাগই যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মী। এজাহারনামীয় তিনজন আসামিকে মামলার রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন হানিফ (৫০), তার ছেলে জান্নাতুল ফেরদৌস জিসান (২১) ও চাচাতো ভাই শওকত মিথুন (৩৬)। তারা নগরীর ১৮ নাম্বার ওয়ার্ডের শহীদনগরের বাসিন্দা।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার সমর্থকরা বাধা প্রদান করে এবং ট্রাক দিয়ে বালি ফেলে এবং বাঁশ দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে রাতভর পুলিশকেও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। সকালে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের দিকে নেবার পথে কালিরবাজার মোড়ে আইভীর সমর্থক, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বাধা সৃষ্টি করে। পরে তারা আইভীকে বহনকারী পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জান্নাতুল ফেরদৌস জিসান (২১) ‘প্রেস নারায়ণগঞ্জ’ নামে একটি স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টালের সংবাদদাতা।
জিসানের চাচা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘‘রাত ১টার দিকে বাসায় আসে সদর মডেল থানা পুলিশ। কোনো সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়াই তারা বাসায় ঢুকে তল্লাশি করতে শুরু করে। পরে জিসান ও তার বাবার নামে মামলা আছে জানিয়ে দুজনকে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু কী মামলা সেটা আমাদের বলে নাই। সকালে আমরা জানতে পারি আইভীকে গ্রেপ্তারে বাধার ঘটনায় মামলা।’’
অভিযানের রাতে জিসান বা তার বাবা ওই এলাকাতে (দেওভোগ) যাননি বলে দাবি করেন হাবিবুর রহমান।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) তাসমিন আক্তার বলেন, ‘‘সাবেক মেয়রকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশ বাধার সম্মুখীন হয়। কিন্তু রাতভর পুলিশ খুবই ধৈর্যের সঙ্গে সেখানে অবস্থান করে এবং সকালে তাকে (আইভী) গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। তাকে গ্রেপ্তারের অভিযানে বাধা দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, গত ৮ মে রাতে আইভীকে গ্রেপ্তার করতে নগরীর দেওভোগে তার পৈতৃক বাড়ি ‘চুনকা কুটিরে’ গেলে সমর্থক ও স্থানীয় এলাকাবাসী বাধা দেন। আইভীও ‘রাতের আঁধারে’ কোথাও যাবেন না বলে জানান। পরে সকালে গাড়িতে ওঠেন তিনি। তাকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় কালিরবাজার মোড়ে পুলিশের গাড়িবহরে হামলা হয়।
অনিক//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর ন র য়ণগঞ জ আইভ ক
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের হেনস্তার ঘটনায় মামলা
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুলের উপর হামলা চালিয়ে হেনস্তা করার ঘটনায় বন্দর থানায় মামলা হয়েছে।
হামলার সময় মুকুলের সঙ্গে থাকা মোস্তাকুর রহমান বাদী হয়ে রবিবার (২৯ জুন) রাতে ডন বজলুকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, মৃত আলী মিয়ার ছেলে রাসেল (৪৪), আলী আক্কাস মিয়ার ছেলে কামাল ওরফে কেরা কামাল (৪৪), ফজলুর রহমানের ছেলে গোলজার (৪৮), কাশেম মিয়ার ছেলে নাদিম (৩৮), মৃত আবুল বাশারের ছেলে আব্দুল করিম নোমান (৩৫), মৃত আক্তার হোসেনের ছেলে আকাশ (২৫), মৃত সিরাজ উদ্দিন মিয়ার দুই ছেলে সেলিম (৪৫) ও শামীম (৪২), মৃত মগবুল হোসেনের ছেলে শাহাজালাল (৪০), মৃত ছালিম উদ্দিন মিয়ার ছেলে হযরত আলী (৫৬), রফিক মিয়ার ছেলে রাজ মিয়া (৫৫), সাদেক আলী ছেলে সাইদুর ওরফে সাইফুল (৪৪), মৃত লতিফ মিয়ার ছেলে হানিফ (৪২), ফজলুর রহমানের ছেলে আক্তার (৪৫), মিছির আলী ছেলে ইসমাঈল (৫৮), বশির উদ্দিন মিয়ার ছেলে খালেক (৫৮) ও একই এলাকার আলী আক্কাস (৩৬)।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে বাবাকে হত্যার অভিযোগে ছেলে গ্রেপ্তার
আবু সাঈদ হত্যা: ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ
মামলার এজাহারের সূত্রে জানা যায়, আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মোস্তাকুর রহমান ও আতাউর রহমান মুকুলের কাছে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে আনেন। তারা মুকুলকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম করেন। মারতে মারতে এক সময় তার পাঞ্জাবি ও পায়জামা ছিড়ে ফেলেন। পরে পুলিশের সহায়তায় লোকজন তাকে উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/অনিক/বকুল