গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে চারদিকে পানির বিপুল চাহিদা। এক ফোঁটা পানির জন্য হাহাকার করে মানুষ, পশুপাখি, প্রকৃতিসহ সকল জীব। এই পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সবগুলো আবাসিক হলে দেখা মেলে পানি অপচয়ের এক করুন দৃশ্য। প্রায় সব সময়ই পূর্ণ হয়ে যাওয়া চৌবাচ্চা হতে অবিরাম ধারায় পানি উপচে পড়তে থাকে। বছরজুড়ে প্রতিটি হলের একটি সাধারণ চিত্র হয়ে উঠেছে এটি।
চৌবাচ্চা পূর্ণ হওয়ার কোনো সংকেত ব্যবস্থা নেই, হলের কর্মচারীদেরও নেই বিশেষ কোনো নজরদারি। এমন অবিরাম অপচয়ের প্রভাব পড়ছে প্রকৃতিতেও, দিন দিন ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে সাধারণ টিউবওয়েলে আর পানি পাওয়া যায় না, ব্যবহার করতে হয় ভূগর্ভস্থ গভীর নলকূপ।
পানির সংকটাবস্থা ভবিষ্যতে আরো তীব্র হতে পারে। ফলে শিক্ষার্থীদের জীবনধারণে চাহিদা অনুযায়ী পানি সরবরাহের অনিশ্চয়তা তৈরি করবে। এ ছাড়াও পানি তোলার জন্য ভূগর্ভস্থ গভীর নলকূপ ব্যবহার করতে হয় যা বিদ্যুতের খরচ বৃদ্ধি করে। তাছাড়া পানির এমন অবাধ অপচয়ে নিচ তালার আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা যায়। এসব জলাবদ্ধ স্থানে প্রাণঘাতী ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগবাহী মশার বংশ বিস্তারের আদর্শ জায়গা হয়ে উঠে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় এই সমস্যার দ্রুত এবং কার্যকরী সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
নওফেল হাসান
শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতি ও অপচয়ের কারণে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারছি না: জ্বালানি উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ খুব একটা নেই। কিছু প্রাকৃতিক গ্যাস ছিল। সেটাও ফুরিয়ে আসছে। এমনকি দুর্নীতি ও অপচয়ের কারণে আমরা সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারছি না। প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ে শেষ হয় না, ব্যয়ও বাড়ে। এসব থামাতে হবে।’
আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম–ঢাকা জ্বালানি তেল সরবরাহের পাইপলাইন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এ কথাগুলো বলেন। চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গায় অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, ‘বড় সমস্যা হলো, আমাদের প্রকল্পের ব্যয় বেশি। আমাদের সড়ক নির্মাণ ব্যয় অন্য দেশের তুলনায় বেশি। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায়ও অনেক বেশি। সুতরাং ব্যয় কমাতে হবে।’
পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল পরিবহনে ২০১৬ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। তিন দফা মেয়াদ বাড়িয়ে গত মার্চে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। এতে প্রায় ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। গত ২২ জুন পরীক্ষামূলকভাবে পাইপে ডিজেল সরবরাহের কাজ শুরু হয়। ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৪ কোটি ৮২ লাখ লিটার ডিজেল সরবরাহ করা হয়েছে। আজ উদ্বোধনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ডিজেল সরবরাহ শুরু হয়।
সরবরাহ উদ্বোধন করে উপদেষ্টা বলেন, পাইপলাইনে ডিজেল সরবরাহের মাধ্যমে অপচয় কমবে। চুরিও ঠেকানো যাবে। এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প। যদিও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি। এখন প্রকল্পটি ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।
দেশের প্রকল্প–সংস্কৃতির সমালোচনা করে অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের শুধু ব্যয় বেশি এমনটা নয়, বিলম্বেও কাজ শেষ হয়। কোনো কোনো প্রকল্প ১৭ থেকে ১৮ বছর ধরেও চলেছে। এসব প্রকল্প আমরা আর টানতে পারব না।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রকল্পগুলোয় নিজস্ব ভ্যালু যুক্ত করতে হবে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক নিয়ে নেগোসিয়েশন (দর–কষাকষি) হলো। সেখানেও ভ্যালু যুক্ত করা নিয়ে কথা হয়েছে। সামনের দিনে ভ্যালু বাড়াতে না পারলে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হব। আমাদের অসংখ্য প্রকৌশলী বেকার। এমনকি বুয়েট থেকে পাস করা প্রকৌশলীকেও বেকার থাকতে হচ্ছে। অন্য দেশের ঠিকাদারের ওপর আমরা অতি নির্ভরশীল। এ নির্ভরশীলতা কমাতে হবে।’
চট্টগ্রাম-ঢাকা জ্বালানি তেল সরবরাহের পাইপলাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান । আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গায়