ব্যবসায়িক পর্যায়ে সমস্যা সমাধানের সুযোগ নেই
Published: 19th, May 2025 GMT
আমরা দীর্ঘ এক যুগ ধরে ভারতের সেভেন সিস্টার বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, অরুণাচল, মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামে প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি করি। আমরা পিভিসি পাইপ-ফিটিংস, দরজা, গৃহস্থালি সামগ্রীসহ (জগ, মগ, বালতি ইত্যাদি) বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি করে থাকি। ভারতের এসব রাজ্যে প্রতি মাসে গড়ে ন্যাশনাল পলিমারের রপ্তানির পরিমাণ ১০ লাখ ডলারের কাছাকাছি। প্রতিবছর ভারতের বাজারে আমাদের ব্যবসা ৫-৬ শতাংশ হারে বাড়ছিল।
গত শনিবার ভারত সরকার বাংলাদেশি কিছু পণ্য স্থলবন্দর ব্যবহার করে আমদানির ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ভারত সরকারের এমন সিদ্ধান্তের পর আমাদের প্রতিষ্ঠান দ্রুত সময়ের মধ্যে ভারতের জন্য পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি কার্যক্রম স্থগিত করেছি। কারণ, অন্য কোনো স্থলবন্দর কিংবা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে ভারতের সেভেন সিস্টারে পণ্য পাঠানো লাভজনক হবে না। বিকল্প পথে পণ্য রপ্তানি করতে গেলে তাতে পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যাবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টেকা যাবে না।
ভারত সরকারের আমদানি বিধিনিষেধের সিদ্ধান্তে সাময়িকভাবে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাজারটির জন্য আমরা যেসব পণ্য উৎপাদন করেছি, সেগুলোর জন্য লোকসান গুনতে হবে। কারণ, সেগুলো ভারতীয় মান নিয়ন্ত্রক সংস্থার মান অনুযায়ী উৎপাদন করা হয়েছে। তা ছাড়া সেভেন সিস্টারে পণ্য রপ্তানি থেকে প্রাপ্ত অর্থ আমরা কাঁচামাল আমদানিতে ব্যবহার করতাম। তাতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ কম পড়ত।
ভারত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি ভূরাজনীতির অংশ। আমাদের প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যবসায়িক সংগঠন পর্যায়ে এটির সমাধানের কোনো সুযোগ নেই। ফলে সরকারি পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধানে কাজ করতে হবে।
রিয়াদ মাহমুদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), ন্যাশনাল পলিমার
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনার ফুটপাত পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে
খুলনা নগরের প্রধান সড়ক ও ফুটপাত এখন পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে। ডাকবাংলা থেকে বড়বাজার পর্যন্ত নগরের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্রজুড়ে ফুটপাতের ওপর চলছে অস্থায়ী দোকানপাট, পণ্যের পসরা আর ক্রেতাদের ভিড়। ফলে পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই, স্থায়ী দোকানের ব্যবসায়ীরা হারাচ্ছেন ক্রেতা, হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত।
ডাকবাংলা এলাকা খুলনা নগরের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র। এখানে ডাকবাংলা সুপারমার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, খুলনা বিপণিবিতান, দরবেশ চেম্বার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী বিপণিবিতান, কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, মশিউর রহমান মার্কেটসহ বড় শপিং কমপ্লেক্স আছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের অন্যতম বাজার এটি। কিন্তু এখন এর পুরো এলাকার ফুটপাত দখল হয়ে গেছে ভাসমান ব্যবসায়ীদের হাতে।
হকারদের ভিড়ে দোকান দেখা যায় নাসম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ডাকবাংলা মোড় থেকে ক্লে রোড পর্যন্ত ফুটপাতে মালামাল সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। স্থায়ী দোকানদাররাও নিজেদের দোকানের সামনের জায়গা দখল করে ব্যবসা করছেন। ভ্যানে করে জামাকাপড়, ফল, গৃহস্থালির পণ্য বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতের পর এখন রাস্তার অর্ধেকজুড়ে। পুরোনো যশোর রোড, সদর থানা মোড়, কেডি ঘোষ রোড থেকে হেলাতলা পর্যন্ত একই চিত্র। খালিশপুর চিত্রালি বাজার ও দৌলতপুর বাজারেও ফুটপাতের ওপর খাট বসিয়ে চালা তুলে ব্যবসা চলছে। ফলে পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন।
খালিশপুর চিত্রালি বাজারের দোকান ব্যবস্থাপক মো. আসাদ বলেন, ‘হকারদের কারণে বাইরে থেকে আমাদের দোকান দেখা যায় না। তাদের ব্যবসা জমজমাট, কিন্তু আমাদের বিক্রি কমে গেছে। সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোও ঢেকে গেছে অস্থায়ী দোকানে।’
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্রে জানা গেছে, নগরের আয়তন ৪৬ বর্গকিলোমিটার, পাকা সড়ক ৬৪১ কিলোমিটার। ফুটপাতের সঠিক হিসাব না থাকলেও অন্তত ২৫ কিলোমিটার ফুটপাত হকারদের দখলে। চলতি বছরে ১২ দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই ফের দখল হয়ে যায়।
কেসিসির সম্পত্তিবিষয়ক কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দীন বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী নেতা ও প্রশাসন সবাই একসঙ্গে উদ্যোগ না নিলে এটি বন্ধ হবে না। অনেকে নিজের দোকানের সামনের ফুটপাতও ভাড়া দেন হকারদের। সহযোগিতা না পেলে একা আমাদের কিছু করার নেই।’
পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা