ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সম্পর্কে কী বলছেন দুই দেশের কর্মকর্তারা
Published: 19th, May 2025 GMT
কয়েক দিনের সামরিক সংঘাতের পর পাকিস্তান ও ভারত সম্প্রতি যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে, সেটির কোনো মেয়াদসীমা নেই বলে দুই দেশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। নবায়ন করা না হলে শিগগিরই যুদ্ধবিরতির সময়সীমা শেষ হয়ে যাবে বলে গুঞ্জনের মধ্যে গতকাল রোববার এমনটা জানিয়েছেন তাঁরা।
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার গত বৃহস্পতিবার সিনেটে বলেছিলেন, দুই দেশের সামরিক অভিযানসংক্রান্ত মহাপরিচালকেরা (ডিজিএমও) যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ১৮ মে পর্যন্ত বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। তাঁর এই বক্তব্যের পর গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল, রোববার (১৮ মে) যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হতে পারে।
এরপর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। তবে গতকাল রোববার দুই দেশের কর্মকর্তারা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে, সেটির কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ নেই।
যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা নিয়ে ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জন নাকচ করে এক ভারতীয় কর্মকর্তা বলেন, ‘এই যুদ্ধবিরতির কোনো মেয়াদসীমা নেই। ১২ মে ডিজিএমওদের আলোচনায় এটি আবারও নিশ্চিত করা হয়েছে।’
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া না হলেও দেশটির এক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে এবং এর নির্দিষ্ট মেয়াদসীমা নেই। তিনি আরও বলেন, ডিজিএমওদের আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধবিরতিকে টেকসই করা।
সম্প্রতি পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলার পর ১০ মে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং সৌদি আরব এতে সমর্থন দেয়।
আরও পড়ুনকীভাবে ভারত–পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখা বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক সীমান্ত হয়ে উঠল৪ ঘণ্টা আগেযুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে কিছু লঙ্ঘনের খবর পাওয়া গিয়েছিল। তবে এরপর থেকে দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তারা গঠনমূলক আলোচনায় যুক্ত হন। কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ১২ মে পাকিস্তানের মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ এবং ভারতের লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাইয়ের মধ্যে ফোনে আলাপ হয়। সেখানে দুই পক্ষ আগ্রাসী বা শত্রুতাপূর্ণ পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে পারস্পরিক প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
সেই আলোচনায় দুই পক্ষ আন্তর্জাতিক সীমান্তে সম্মুখসারির সেনা ও নিয়মিত সেনা মোতায়েনের সংখ্যা ধাপে ধাপে কমানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান বলেন, ১০ মের পর থেকে দুই দেশের ডিজিএমওরা নির্দিষ্ট সময় অন্তর যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। উত্তেজনা কমাতে একটি কাঠামোবদ্ধ প্রক্রিয়া গড়ে তোলার বিষয়ে তাঁরা একমত হয়েছেন।
আরও পড়ুনভারতের ‘অপপ্রচার’ সম্পর্কে জানাতে বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে পাকিস্তান৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত র ক র যকর
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’