কয়েক দিনের সামরিক সংঘাতের পর পাকিস্তান ও ভারত সম্প্রতি যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে, সেটির কোনো মেয়াদসীমা নেই বলে দুই দেশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। নবায়ন করা না হলে শিগগিরই যুদ্ধবিরতির সময়সীমা শেষ হয়ে যাবে বলে গুঞ্জনের মধ্যে গতকাল রোববার এমনটা জানিয়েছেন তাঁরা।

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার গত বৃহস্পতিবার সিনেটে বলেছিলেন, দুই দেশের সামরিক অভিযানসংক্রান্ত মহাপরিচালকেরা (ডিজিএমও) যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ১৮ মে পর্যন্ত বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। তাঁর এই বক্তব্যের পর গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল, রোববার (১৮ মে) যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হতে পারে।

এরপর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। তবে গতকাল রোববার দুই দেশের কর্মকর্তারা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে, সেটির কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ নেই।

যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা নিয়ে ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জন নাকচ করে এক ভারতীয় কর্মকর্তা বলেন, ‘এই যুদ্ধবিরতির কোনো মেয়াদসীমা নেই। ১২ মে ডিজিএমওদের আলোচনায় এটি আবারও নিশ্চিত করা হয়েছে।’

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া না হলেও দেশটির এক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে এবং এর নির্দিষ্ট মেয়াদসীমা নেই। তিনি আরও বলেন, ডিজিএমওদের আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধবিরতিকে টেকসই করা।

সম্প্রতি পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলার পর ১০ মে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং সৌদি আরব এতে সমর্থন দেয়।

আরও পড়ুনকীভাবে ভারত–পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখা বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক সীমান্ত হয়ে উঠল৪ ঘণ্টা আগে

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে কিছু লঙ্ঘনের খবর পাওয়া গিয়েছিল। তবে এরপর থেকে দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তারা গঠনমূলক আলোচনায় যুক্ত হন। কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ১২ মে পাকিস্তানের মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ এবং ভারতের লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাইয়ের মধ্যে ফোনে আলাপ হয়। সেখানে দুই পক্ষ আগ্রাসী বা শত্রুতাপূর্ণ পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে পারস্পরিক প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।

সেই আলোচনায় দুই পক্ষ আন্তর্জাতিক সীমান্তে সম্মুখসারির সেনা ও নিয়মিত সেনা মোতায়েনের সংখ্যা ধাপে ধাপে কমানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান বলেন, ১০ মের পর থেকে দুই দেশের ডিজিএমওরা নির্দিষ্ট সময় অন্তর যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। উত্তেজনা কমাতে একটি কাঠামোবদ্ধ প্রক্রিয়া গড়ে তোলার বিষয়ে তাঁরা একমত হয়েছেন।

আরও পড়ুনভারতের ‘অপপ্রচার’ সম্পর্কে জানাতে বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে পাকিস্তান৪ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত র ক র যকর

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন

অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।

এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।

অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’

এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।

আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
  • ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার