আগামী বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে, শেয়ারবাজারে করছাড় আসতে পারে
Published: 19th, May 2025 GMT
আগামী অর্থবছরে বাড়তে পারে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা। বর্তমানে বার্ষিক আয় সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত আয়সীমা রয়েছে। এই সীমা আরও ২৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হতে পারে।
আজ সোমবার বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগামী অর্থবছরের বাজেট নিয়ে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় এই বৈঠক হয়। এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বাজেটের শুল্ক-করের প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
এ ছাড়া নতুন নতুন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে শর্ত যেমন সহজ করা হবে, তেমনি কর ছাড়ও দেওয়া হতে পারে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কর দেওয়ার প্রক্রিয়াকে সহজ করা। অনলাইনে রিটার্ন জমাকে আরও উৎসাহিত করা হবে।’ তিনি বলেন, আগামী বাজেট হবে করবান্ধব ও বিনিয়োগবান্ধব।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সরকার নীতিগতভাবে করমুক্ত আয়সীমা বাড়াতে একমত হয়েছে। এ জন্য এনবিআরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম করের পরিমাণ নিয়ে আলোচনা হয়।
এ ছাড়া ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন, পৌর এলাকা, গ্রাম এলাকা নির্বিশেষে ন্যূনতম কর পাঁচ হাজার করার বিষয়ে আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়। বর্তমানে ন্যূনতম করের পরিমাণ এলাকাভেদে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা।
বর্তমানে সারা দেশে ১ কোটি ১১ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। এর মধ্যে বছরে গড়ে ৪০ লাখের মতো টিআইএনধারী রিটার্ন দেন। এনবিআরের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, আজকের বৈঠকে কর ভিত্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি কর দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনলাইনে রিটার্ন দেওয়ার ব্যবস্থা আরও সম্প্রসারণ করার জন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। আগামী বাজেটে কোম্পানির ক্ষেত্রে অনলাইনে রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হতে পারে।
আরও জানা গেছে, বর্তমানে বছরে তিন কোটি টাকার বেশি টার্নওভার হয়, এমন প্রতিষ্ঠানকে লাভ-লোকসান নির্বিশেষে দশমিক ৬ শতাংশ কর দিতে হয়। এটি বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হতে পারে।
এ ছাড়া ভ্যাটের ক্ষেত্রে ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট বাড়তে পারে। বর্তমানে এসব পণ্য উৎপাদন পর্যায়ে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ আছে। এই হার বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। এ ছাড়া মোবাইল ফোনের মূল্য সংযোজন অনুসারে ভ্যাটের হার বাড়তে পারে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: করম ক ত আয়স ম কর র প
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল