প্রাণের পরশ পেতেই বাড়িতে বা অফিসে গাছপালা লাগান। সময় করে সেসব গাছের যত্নআত্তিও করেন। সেই গাছগুলোই যদি নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে, তাহলে এত সব আয়োজনই তো বৃথা। একই সময়ে একই জায়গা থেকে নিয়ে আসা একই প্রজাতির গাছ কারও বাড়িতে থাকে ফুলে-পাতায় ভরপুর, কারও বাড়িতে হয়ে যায় মৃতপ্রায়। যত্নআত্তির কোন ভুলে গাছ নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে, জানেন কি?

রোদ নাকি ছায়া

কোন গাছের কতটা রোদ প্রয়োজন, তা জানা থাকতে হবে। অনেক গাছই রোদ ছাড়া ভালোভাবে বাঁচে না। কোনো কোনো গাছ আবার সরাসরি কড়া রোদে নিষ্প্রাণ হয়ে পড়তে পারে। আপনি যেখানে গাছ রাখতে চাচ্ছেন, সেখানে কতটা রোদ আসে, ভেবে দেখুন। সেই অনুযায়ী গাছ বাছাই করুন। আর বিশেষ কোনো গাছ যদি আপনার আনতে ইচ্ছা হয়, তাহলে তা রাখার জন্য সঠিক জায়গা বাছাই করে নিন।

গাছের টব বা পাত্র

শহুরে জীবনধারায় গাছ লাগানোর জায়গা কম। খোলা মাটিতে গাছ লাগানোর সুযোগ নেই বললেই চলে। তাই মনে হতেই পারে, ছোট ছোট টবে অনেক গাছ লাগানো হলে সহজে কম জায়গাকে প্রাণবন্ত করে তোলা যাবে। তবে এমন করে লাগানো গাছ সাময়িকভাবে সুন্দর দেখালেও দীর্ঘদিন এগুলোকে প্রাণবন্ত রাখাটা কঠিন। সময়ের সঙ্গে অধিকাংশ গাছই অনেকটা বাড়বে। আর এই বৃদ্ধি কেবল শাখা-প্রশাখাতেই না, শিকড়েও হবে। কোন গাছ কতটা বাড়তে পারে, সেটা মাথায় রেখেই গাছের জন্য টব বা পাত্র নির্বাচন করতে হবে। আর সেভাবেই টব বা পাত্রগুলোর মধ্যকার দূরত্ব নির্ধারণ করতে হবে। চাইলে আবার বারান্দার জন্য লম্বাটে ধরনের এমন কোনো পাত্র বেছে নিতে পারেন, যা বেশ গভীর। এমন পাত্রে একাধিক গাছও লাগানো যাবে।

আরও পড়ুনগাছের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিন২১ আগস্ট ২০২১

পানি দেওয়ার ভুল

গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে পানি তো দিতেই হবে, তবে অতি উৎসাহী হয়ে বেশি পানি দিলেও কিন্তু মুশকিল। আর সব মৌসুমে সব গাছে রোজই যে পানি দিতে হবে, তা–ও কিন্তু নয়। বরং পানি দিন গাছের প্রয়োজন বুঝে। মাটির অবস্থা থেকে বুঝতে পারবেন, পানি দিতে হবে কি না। এমনভাবে পানি দেবেন, যাতে পাত্রের গভীর পর্যন্ত পৌঁছায়। ওপরে অল্প পানি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করবেন না। গাছ লাগানোর আগে পাত্রের নিচে ছিদ্র করে নিতেও ভুলবেন না। ছিদ্র না থাকলে পাত্রের ভেতর পানি জমে শিকড় পচে যেতে পারে।

পুষ্টি ও সুরক্ষা না দেওয়া

টবের গাছের চাই বাড়তি পুষ্টি। হাতের কাছে থাকা বেশ কিছু সাদামাটা জৈব উপাদান দিয়েই গাছের পুষ্টির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তবে সব উপাদান আবার সব গাছের উপযোগী না-ও হতে পারে। নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে এ বিষয়ে জেনে নিন। সময়মতো গাছের গোড়ার মাটি নিড়িয়ে দেওয়াও প্রয়োজন। পোকামাকড়নাশক স্প্রে-ও করে নিতে পারেন নিয়মমাফিক। তাতে গাছ থাকবে সুরক্ষিত।

ছাঁটাই না করা

গাছকে প্রাণবন্ত রাখতে, গাছের ফুল-ফল ঠিকঠাক পেতে অনেক গাছেরই ডাল ছাঁটাই করা প্রয়োজন। ছাঁটাইয়ের নিয়মটাও জানা চাই। কোন গাছ কখন ছাঁটাই করতে হয়, সেটিও আপনার জানা থাকতে হবে।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনআপনার বাড়ির অন্দরে কি আছে ডোপামিন ডেকোর২১ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা: সেনাপ্রধান

মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

বুধবার সকালে সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় (অফিসার্স অ্যাড্রেস) মব ভায়োলেন্স, সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড বিষয়ে জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন, অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কারসহ নানা প্রশ্নের উত্তর দেন সেনাপ্রধান। এ সময় তিনি এ কথা জানান। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ বিষয়ে কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়নি। পরে যোগাযোগ করা হলে আইএসপিআর কোনো মন্তব্য করবে না বলে জানায়।  

ঢাকা সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত এ সভায় ঢাকার বাইরের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত সূত্রগুলো জানায়, অফিসার্স অ্যাড্রেসে প্রথমে সেনাপ্রধান বক্তব্য রাখেন। এরপর বিভিন্ন ইউনিট থেকে যেসব কর্মকর্তা যুক্ত ছিলেন তাদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন সেনাপ্রধান। 

সভায় শিগগিরই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। আগামী  ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। এ ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিরলস ভূমিকা ও প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন সেনাপ্রধান। সেনা কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা ও আনুগত্য বজায় রাখারও আহ্বান জানান তিনি।

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সঙ্গে মানবিক করিডোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত একটি নির্বাচিত সরকার থেকেই আসতে হবে। এটি হতে হবে বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। করিডোরের ব্যাপারে জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে। রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার বিষয়ও এখানে যুক্ত।  

সেনাপ্রধান বলেন, আগস্ট থেকে সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু মহল তাঁকে ও বাহিনীকে অন্যায্যভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। 

ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর– এমন কোনো কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনও যুক্ত হবে না।  কাউকে তা করতেও দেওয়া হবে না। এই বাস্তবতায় সব পর্যায়ের সেনাসদস্যকে নিরপেক্ষ থাকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। আগামীতে নির্বাচনী দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেন সেনাপ্রধান। 

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সহযোগিতা করছি। সহযোগিতা করে যাব। সামনে ঈদ। মানুষ যেন নিরাপদে ঈদ উদযাপন করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করতে হবে। 

বাংলাদেশ নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলা হয়নি। আমাদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। 

নির্যাতিতদের অধিকারের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন সেনাপ্রধান। জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্যের পর এক ঘণ্টাব্যাপী প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। একজন কর্মকর্তা বিভিন্ন অভিযোগে বরখাস্ত সেনাসদস্যদের অপরাধের বিষয়গুলো আইএসপিআরের মাধ্যমে প্রকাশ করার কথা জানান।  

বন্দর নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে জেনারেল ওয়াকার বলেন, এখানে স্থানীয় মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাদের মতামত প্রয়োজন হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত রাজনৈতিক সরকারের মাধ্যমে। সংস্কার নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কী সংস্কার হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে– এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ