দুদকে দুই ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দুই পিও ও এনসিপি নেতাকে
Published: 21st, May 2025 GMT
স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) তুহিন ফারাবী ও বর্তমান পিও মাহমুদুল হাসান এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাবেক নেতা গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শতকোটি টাকার তদবির–বাণিজ্যসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগে আজ বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাঁদের প্রায় দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার তুহিন ফারাবী ও মাহমুদুল হাসানের হাজির হওয়ার নির্ধারিত তারিখ থাকলেও তাঁরা হাজির হননি। আর গাজী সালাউদ্দিন তানভীরের আজই হাজির হওয়ার তারিখ নির্ধারিত ছিল।
তুহিন ফারাবী ও মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে চিকিৎসক বদলি, টেন্ডার ও প্রশাসনিক তদবিরের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গণমাধ্যমে কথা বলেননি তুহিন ফারাবী। তবে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি পদত্যাগ করছি উপদেষ্টার পিও পদ থেকেও।’
দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দুদকের কর্মকর্তারা জানান, সালাউদ্দিন তানভীরের বিরুদ্ধে এনসিটিবিতে কাগজ সরবরাহে মোটা অঙ্কের কমিশন নেওয়া, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে প্রভাব খাটিয়ে জেলা প্রশাসক নিয়োগসহ একাধিক তদবিরের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সালাউদ্দিন তানভীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নির্দোষ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে জেলে যেতে প্রস্তুত।’
এদিকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনকে আজ বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুদক।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাকে বহিষ্কার, দুজনকে পুনর্বহাল
শৃঙ্খলাভঙ্গ ও দলীয় আদর্শ পরিপন্থী আচরণসংক্রান্ত কারণ দর্শানোর নোটিশের (শোকজ) জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে জবাব সন্তোষজনক হওয়ায় অন্য দুই নেতাকে তাঁদের পদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। পৃথক দুটি নোটিশে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বহিষ্কৃত ওই নেতার নাম রাশেদুল ইসলাম। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক। অন্যদিকে পদে পুনর্বহাল হওয়া হওয়া দুই নেতা হলেন জেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুর রহমান ও আমিরুল ইসলাম।
আজ সোমবার দুপুরের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার সদস্যসচিব শাফায়াত উল্লাহ প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ৩ জুলাই ওই চিঠি ইস্যু করা হয়। গতকাল রাতে চিঠিটি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়।
একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কমিটির পক্ষ থেকে গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্যক্রম, শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং দলীয় আদর্শ পরিপন্থী আচরণের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এসব অভিযোগ প্রাথমিকভাবে পর্যালোচনা সাপেক্ষে কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে তাঁকে বহিষ্কার করা হলো।
আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগে কিছু সাংগঠনিক অসংগতি এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুর রহমান এবং আমিরুল ইসলামকে শোকজ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তাঁদের দুঃখ ও সংগঠনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ এবং ভবিষ্যতে গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলার অনুসরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার অঙ্গীকারের পরিপ্রেক্ষিতে কমিটির এক জরুরি সভায় তাঁদের সাধারণ ক্ষমা করে আগের পদে পুনর্বহাল করা হয়।
বহিষ্কারের বিষয়ে আপিল করার তথ্য জানিয়ে রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে বহিষ্কার নোটিশ ফেসবুকে দেখেছি। তবে আমার হাতে আসেনি। আমি আপিল করব। আশা করছি, তারা এ আদেশ প্রত্যাহার করে নেবে।’
সংগঠনটির নেতা-কর্মী সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জুন সংগঠনের ফেসবুক পেজে জেলা প্রশাসককে উদ্দেশ করে একটি পোস্ট দেন আবদুর রহমান। পোস্টে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি ছবি সংযুক্ত করে প্রশাসনকে শহীদ, আহত ও সাধারণ মানুষের প্রতি আরও যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। পোস্টটি পরে আরেক যুগ্ম সদস্যসচিব আমিরুল ইসলাম মুছে ফেলেন। এ নিয়ে মেসেঞ্জার গ্রুপে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরপর ৮ জুন সিনিয়র নেতারা মীমাংসার চেষ্টা করলেও তাঁরা সাড়া দেননি। পরদিন ৯ জুন নড়াইল শহরের পুরাতন বাস টার্মিনালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই-তিনজন আহত হন। আমিরুলের পক্ষে মারামারিতে অংশ নেন রাশেদুল ইসলাম। পরে ১১ জুন এ ঘটনায় সংগঠনটির তিন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।