আক্রান্ত কমলেও চোখ রাঙাচ্ছে ম্যালেরিয়া
Published: 23rd, May 2025 GMT
রাঙামাটিতে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ৩০৮ জনের শরীরে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে জেলায় যা ছিল ৬৪০। সংখ্যার হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধেকের কমে নেমে এলেও প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ম্যালেরিয়া। বিশেষ করে দুর্গম সীমান্ত অঞ্চলের চার উপজেলা বিলাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি ও বাঘাইছড়িবাসীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে রোগটি। কারণ, এ বছর জেলায় শনাক্ত রোগীর ৮৩ শতাংশের বাসই চারটি উপজেলায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দুর্গমতার কারণে এ জেলা থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূল পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূলের সরকারি লক্ষ্য অর্জন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দেশে মশাবাহিত রোগের মধ্যে ম্যালেরিয়া অন্যতম। স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা এ রোগের জীবাণু ছড়ায়। বাংলাদেশে মোট ৩৬ প্রজাতির অ্যানোফিলিস মশা দেখা যায়। এর মধ্যে সাতটি প্রজাতি ম্যালেরিয়া ছড়ায়। সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এ রোগের প্রকোপ বাড়ে। দেশের ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিতি রয়েছে তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির। এ রোগ নির্মূলের অন্যতম চ্যালেঞ্জ দুর্গম সীমান্ত এলাকা।
রাঙামাটি জেলায় প্রতি বছরই ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত হলেও ২০১৬ সাল থেকে এ রোগে মৃত্যু কমে এসেছে। চলতি বছরের একমাত্র মৃত্যুটিও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হয়েছে বলে জেলার তালিকায় আসেনি।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় ৩০৮ জনের শরীরে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়েছে। ১০ উপজেলার মধ্যে নানিয়ারচর ও কাউখালী উপজেলায় এবার কোনো রোগী এখনও পর্যন্ত শনাক্ত হয়নি। সবচেয়ে বেশি ১১২ রোগী জুরাছড়ির বাসিন্দা। গত বছরের একই সময়ে এখানে ২৬৫ রোগী শনাক্ত হয়, পুরো বছরে যা ছিল ১ হাজার ২৩৩ জন। বিলাইছড়িতে এবার ৭১ জন শনাক্ত হয়েছে, ২০২৪ সালের প্রথম চার মাসে যা ছিল ১০৭। ওই বছর উপজেলায় মোট ম্যালেরিয়া রোগী ছিল ৬৬০ জন। বাঘাইছড়িতে এখন পর্যন্ত ৪২ জন, বরকলে ৩১ জন, রাজস্থলীতে ২৩ জন, কাপ্তাইয়ে ১১ জন, রাঙামাটি সদরে ১১ জন ও লংগদুতে ৭ জনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে রোগটি। গত বছরের চার মাসে যা ছিল যথাক্রমে ৫১, ১২০, ৫১, ১৭, ১৬ ও ৭। ২০২৪ সালে এসব উপজেলায় মোট শনাক্ত সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৬৮৩, ৬৪০, ২৪৪, ১০৯, ৬৭ ও ৬৩। এর বাইরে আগের বছরে কাউখালীতে ১৭ জন, নানিয়ারচরে ২৩ জনের ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়।
এবার শনাক্ত ৩০৮ রোগীর মধ্যে ২৫৬ জনের বাড়ি বিলাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি ও বাঘাইছড়ি উপজেলায়। যদিও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত কোনো রোগী এবার রাঙামাটিতে মারা যাননি। তবে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নের গোয়াইনছড়ি গ্রামের প্রত্যাশা তঞ্চংগ্যা নামে সাড়ে চার বছরের এক শিশু চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। নিয়ম অনুযায়ী তার নাম চট্টগ্রামের তালিকায় উঠবে।
বিলাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগী বেশি ভর্তি হন। চলতি মাসে এখানে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫ জন। তাদের বেশির ভাগের বাড়িই উপজেলার সীমান্ত এলাকা ফারুয়া, ধুপশীলসহ কয়েকটি এলাকায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ফেব্রুয়ারিতে ৫২ জনের মধ্যে একজনের, মার্চে ৫৪ জনের ২ জনের, এপ্রিলে ১০১ জনের মধ্যে ৭ জনের ও মে মাসের ১৫ তারিখ পর্ষন্ত ৩৭ জনের মধ্যে ৯ জনের শরীরে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়েছে।
১৪ মে এ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত কালাসোনা চাকমা (৪৭)। বাড়ি বিলাইছড়ি ইউনিয়নের শালবাগান এলাকায়। চার-পাঁচদিন আগে এখানে ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করছিলেন তিনি।
কালাসোনা বলেন, ‘রাতে ঘুমানোর সময় মশারি টাঙিয়ে থাকি। কিন্তু আমরা কাজের মানুষ, কাজ না করলে খেতে পাই না। দিনের বেলায় জুমে কাজ করার সময় মশায় কামড়ায়। তখনই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছি।’
এ কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মোহাম্মদ ইউনুসের ভাষ্য, আগে বছরে তারা ৩-৪ জন ম্যালেরিয়া রোগী পেতেন। এ বছর বেশি রোগী পাচ্ছেন। ১৪ মে ১২ জনের রক্ত পরীক্ষায় চারজনের শরীরেই শনাক্ত হয়। এসব আক্রান্তের বেশির ভাগের বাড়িই ফারুয়া বা ধুপশীলের মতো দুর্গম এলাকায়।
দুর্গম পাহাড়ে এ রোগ নির্মূলের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে জানান ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির বিলাইছড়ি উপজেলা ব্যবস্থাপক বিরাজ চাকমা। তারা এসব এলাকায় সচেতনতামূলক সভা করেন। লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি বিনামূল্যে কীটনাশকযুক্ত মশারি এবং ওষুধ দেন। তিনি বলেন, এর পরও চলতি বছরের চার মাসে চার হাজার ২০৭ জনের রক্ত পরীক্ষা করে ৬৪ জনের শরীরে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়।
ম্যালেরিয়া বিশেষজ্ঞ ডা.
২০১৬ সালের পর রাঙামাটিতে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাননি। এ তথ্য নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা বলেন, ‘জেলার চারটি উপজেলা ম্যালেরিয়াপ্রবণ। এই সময়ে ম্যালেরিয়া রোগী বাড়ে। আমরা এই সময়টাকে প্রি-মনসুন ও পোস্ট-মনসুন বলে থাকি। এ বছরও ব্যক্রিতম নয়। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কম।’
কিছুদিন আগে বৃষ্টিপাত হওয়ায় ম্যালেরিয়া রোগী আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে দেন ডা. নূয়েন খীসা। তিনি বলেন, ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু ঠেকাতে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসকদের এ বিষয়ে নিবিড় দৃষ্টি ও সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কমপ ল ক স গত বছর র ব ল ইছড় উপজ ল য় দ র গম জন র ম এল ক য় এ বছর
এছাড়াও পড়ুন:
আক্রান্ত কমলেও চোখ রাঙাচ্ছে ম্যালেরিয়া
রাঙামাটিতে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ৩০৮ জনের শরীরে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে জেলায় যা ছিল ৬৪০। সংখ্যার হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধেকের কমে নেমে এলেও প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ম্যালেরিয়া। বিশেষ করে দুর্গম সীমান্ত অঞ্চলের চার উপজেলা বিলাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি ও বাঘাইছড়িবাসীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে রোগটি। কারণ, এ বছর জেলায় শনাক্ত রোগীর ৮৩ শতাংশের বাসই চারটি উপজেলায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দুর্গমতার কারণে এ জেলা থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূল পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূলের সরকারি লক্ষ্য অর্জন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দেশে মশাবাহিত রোগের মধ্যে ম্যালেরিয়া অন্যতম। স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা এ রোগের জীবাণু ছড়ায়। বাংলাদেশে মোট ৩৬ প্রজাতির অ্যানোফিলিস মশা দেখা যায়। এর মধ্যে সাতটি প্রজাতি ম্যালেরিয়া ছড়ায়। সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এ রোগের প্রকোপ বাড়ে। দেশের ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিতি রয়েছে তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির। এ রোগ নির্মূলের অন্যতম চ্যালেঞ্জ দুর্গম সীমান্ত এলাকা।
রাঙামাটি জেলায় প্রতি বছরই ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত হলেও ২০১৬ সাল থেকে এ রোগে মৃত্যু কমে এসেছে। চলতি বছরের একমাত্র মৃত্যুটিও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হয়েছে বলে জেলার তালিকায় আসেনি।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় ৩০৮ জনের শরীরে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়েছে। ১০ উপজেলার মধ্যে নানিয়ারচর ও কাউখালী উপজেলায় এবার কোনো রোগী এখনও পর্যন্ত শনাক্ত হয়নি। সবচেয়ে বেশি ১১২ রোগী জুরাছড়ির বাসিন্দা। গত বছরের একই সময়ে এখানে ২৬৫ রোগী শনাক্ত হয়, পুরো বছরে যা ছিল ১ হাজার ২৩৩ জন। বিলাইছড়িতে এবার ৭১ জন শনাক্ত হয়েছে, ২০২৪ সালের প্রথম চার মাসে যা ছিল ১০৭। ওই বছর উপজেলায় মোট ম্যালেরিয়া রোগী ছিল ৬৬০ জন। বাঘাইছড়িতে এখন পর্যন্ত ৪২ জন, বরকলে ৩১ জন, রাজস্থলীতে ২৩ জন, কাপ্তাইয়ে ১১ জন, রাঙামাটি সদরে ১১ জন ও লংগদুতে ৭ জনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে রোগটি। গত বছরের চার মাসে যা ছিল যথাক্রমে ৫১, ১২০, ৫১, ১৭, ১৬ ও ৭। ২০২৪ সালে এসব উপজেলায় মোট শনাক্ত সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৬৮৩, ৬৪০, ২৪৪, ১০৯, ৬৭ ও ৬৩। এর বাইরে আগের বছরে কাউখালীতে ১৭ জন, নানিয়ারচরে ২৩ জনের ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়।
এবার শনাক্ত ৩০৮ রোগীর মধ্যে ২৫৬ জনের বাড়ি বিলাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি ও বাঘাইছড়ি উপজেলায়। যদিও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত কোনো রোগী এবার রাঙামাটিতে মারা যাননি। তবে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নের গোয়াইনছড়ি গ্রামের প্রত্যাশা তঞ্চংগ্যা নামে সাড়ে চার বছরের এক শিশু চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। নিয়ম অনুযায়ী তার নাম চট্টগ্রামের তালিকায় উঠবে।
বিলাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগী বেশি ভর্তি হন। চলতি মাসে এখানে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫ জন। তাদের বেশির ভাগের বাড়িই উপজেলার সীমান্ত এলাকা ফারুয়া, ধুপশীলসহ কয়েকটি এলাকায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ফেব্রুয়ারিতে ৫২ জনের মধ্যে একজনের, মার্চে ৫৪ জনের ২ জনের, এপ্রিলে ১০১ জনের মধ্যে ৭ জনের ও মে মাসের ১৫ তারিখ পর্ষন্ত ৩৭ জনের মধ্যে ৯ জনের শরীরে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়েছে।
১৪ মে এ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত কালাসোনা চাকমা (৪৭)। বাড়ি বিলাইছড়ি ইউনিয়নের শালবাগান এলাকায়। চার-পাঁচদিন আগে এখানে ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করছিলেন তিনি।
কালাসোনা বলেন, ‘রাতে ঘুমানোর সময় মশারি টাঙিয়ে থাকি। কিন্তু আমরা কাজের মানুষ, কাজ না করলে খেতে পাই না। দিনের বেলায় জুমে কাজ করার সময় মশায় কামড়ায়। তখনই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছি।’
এ কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট মোহাম্মদ ইউনুসের ভাষ্য, আগে বছরে তারা ৩-৪ জন ম্যালেরিয়া রোগী পেতেন। এ বছর বেশি রোগী পাচ্ছেন। ১৪ মে ১২ জনের রক্ত পরীক্ষায় চারজনের শরীরেই শনাক্ত হয়। এসব আক্রান্তের বেশির ভাগের বাড়িই ফারুয়া বা ধুপশীলের মতো দুর্গম এলাকায়।
দুর্গম পাহাড়ে এ রোগ নির্মূলের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে জানান ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির বিলাইছড়ি উপজেলা ব্যবস্থাপক বিরাজ চাকমা। তারা এসব এলাকায় সচেতনতামূলক সভা করেন। লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি বিনামূল্যে কীটনাশকযুক্ত মশারি এবং ওষুধ দেন। তিনি বলেন, এর পরও চলতি বছরের চার মাসে চার হাজার ২০৭ জনের রক্ত পরীক্ষা করে ৬৪ জনের শরীরে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়।
ম্যালেরিয়া বিশেষজ্ঞ ডা. পরশ খীসা বেসরকারি শেভরন ডক্টরস ল্যাব, রাঙামাটির স্বত্বাধিকারী। দুটি কারণে পার্বত্যাঞ্চলে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন তিনি। ডা. পরশ খীসা বলেন, অ্যানোফিলিস মশা মানুষকে কামড়ানোর পর অন্য জায়গায় চলে যায়। ওই মশা মারা তখন কঠিন হয়ে যায়। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ম্যালেরিয়াবিরোধী অভিযানের সময় সীমান্তবর্তী দুই দেশের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হয়। হয়তো বাংলাদেশ থেকে অভিযান করলেও ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় করা হয় না। তাই অ্যানোফিলিস মশা ধ্বংস সম্ভব হয় না। দুর্গমতার কারণেও ম্যালেরিয়া নির্মূল করা যাচ্ছে না– এমন মন্তব্যও করেন তিনি।
২০১৬ সালের পর রাঙামাটিতে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাননি। এ তথ্য নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা বলেন, ‘জেলার চারটি উপজেলা ম্যালেরিয়াপ্রবণ। এই সময়ে ম্যালেরিয়া রোগী বাড়ে। আমরা এই সময়টাকে প্রি-মনসুন ও পোস্ট-মনসুন বলে থাকি। এ বছরও ব্যক্রিতম নয়। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কম।’
কিছুদিন আগে বৃষ্টিপাত হওয়ায় ম্যালেরিয়া রোগী আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে দেন ডা. নূয়েন খীসা। তিনি বলেন, ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু ঠেকাতে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসকদের এ বিষয়ে নিবিড় দৃষ্টি ও সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।