দেশপ্রেমিক জনগণ যারা জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন, তাদের সামনে দীর্ঘ পরীক্ষা। এ পরীক্ষা ঐক্যের এবং ধৈর্যের বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।

পোস্টে মাহফুজ আলম লেখেন, দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য অনিবার্য। আগেকার যে কোনো বক্তব্য ও শব্দচয়ন, যা বিভাজনমূলক ছিল, সেগুলোর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সরকারে আর একদিনও থাকলে অভ্যুত্থানের সব শক্তির প্রতি সম্মান ও সংবেদনশীলতা রেখে কাজ করতে চাই। পুরাতন বন্দোবস্তের বিভেদকামী স্লোগান ও তকমাবাজি, যা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে হত্যাযোগ্য করে তোলে, সেগুলো পরিহার করলেই আশা করি ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের শত্রুরা ঐক্যবদ্ধ ও আগ্রাসী। সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে। দেশপ্রেমিক জনগণ যারা জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন, তাদের সামনে দীর্ঘ পরীক্ষা। এ পরীক্ষা ঐক্যের ও ধৈর্যের। 

প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের খবরের পরপরই ছাত্র উপদেষ্টা এবং জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃস্থানীয় অনেকে কথা বলতে শুরু করেন। গতকাল সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানান, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলতে তারা যমুনায় যান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেন তারা। এর আগে সন্ধ্যায় ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও  স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও দেখা করেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

আবু সাঈদ, মুগ্ধ বা ওয়াসিমরা রক্ত দিয়েছে শুধু স্থানীয় নির্বাচনের জন্য না: জাহিদ হোসেন

মানুষ গত চারটি টার্ম গেল ভোট দিতে পারেনি। জনগণ তাদের অধিকার চায়, জনগণ তার ভোটাধিকার চায়, জনগণ তার গণতন্ত্র ফেরত চায়। সে জন্যই ছিল ১৭ বছরের আন্দোলন, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ৫ আগস্ট। আবু সাঈদ, মুগ্ধ বা ওয়াসিমরা রক্ত দিয়েছে বা আমাদের চৌধুরী আলম অথবা ইলিয়াস আলীরা হারিয়ে গেছেন শুধু স্থানীয় নির্বাচনের জন্য না, দেশের মানুষের গণতন্ত্র ফেরত দেওয়ার জন্য। সেই রক্তের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।

আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটায় দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিএনপির উপজেলা ও পৌর শাখার উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস রহমান।

জাহিদ হোসেন তাঁর বক্তব্য বলেন, ‘আজকে যারা বিএনপির সমালোচনা করেন তাঁদের বলব, সমালোচনা না করে ঐক্যবদ্ধ হোন। কারণ, ঐক্যবদ্ধ জাতি ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট তৈরি করতে পেরেছিল। যদি অনৈক্য হয়, তাহলে মনে রাখবেন ওই লুটেরার দল ওরা কিন্তু ভেগে গেছে মাত্র দুই-চার-দশজন। কিন্তু ওরা আপনার আশপাশেই আছে। কাজেই স্বৈরাচারের দোসরদের পথ বা ছিদ্রি দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আজকে যারা জাতীয় নির্বাচনকে দূরে ঠেলে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলেন, তাঁরা কিসের কথা বলেন। আপনি কি চান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও অবনতি হোক।’

জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিএনপি ভবিষ্যৎমুখী রাজনৈতিক দল। আমাদের নেতা তারেক রহমান উনি কত সুদূরপ্রসারী চিন্তা করেছেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান উনি ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ডালভাত কর্মসূচি দিয়েছিলেন। সর্বোপরি ভিশন ২০৩০। তারেক রহমান ওনাদের যোগ্য সন্তান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।’

সংস্কার প্রসঙ্গে জাহিদ হোসেন বলেন, আজকে সংস্কার নিয়ে অনেকে অনেক কথাই বলে। কেউ কেউ একটু বলার চেষ্টা করে। বিএনপি নাকি সংস্কারে বিশ্বাস করে না। আরে বাবারা যারা আপনারা কথা বলেন, আপনারা কি ভুলে গেছেন বিএনপি তো সেই দল, আপনারা যখন একদলীয় শাসনব্যবস্থায় আটকে গিয়েছিলেন, তখন কিন্তু বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্র ফেরত দিয়েছিল। সেটি মনে থাকার কথা, শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে। যখন আপনারা চারটি পত্রিকায় আটকে গিয়েছিলেন, তখন কিন্তু বিএনপি সংস্কারের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। যখন এই দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ছিল, এই বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তখন কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্র দিয়ে সংস্কার করেছিল। ১৯৭৪–এর কালাকানুন কে সরিয়েছে, বিএনপির নেতৃত্বে বেগম খালেদা জিয়া সরিয়েছেন।

জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘শহীদের এই জুলাই মাসে দাঁড়িয়ে অহেতুক অনৈক্য সৃষ্টি করবেন না। ঐক্যবদ্ধ জাতি পারে বাংলাদেশকে আগামীর ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে। অনৈক্য কোনো অবস্থাতেই আপনাকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেবে না। বরং বিশৃঙ্খলা উপহার দিতে পারে। কাজেই সবাইকে বলব, দায়িত্বশীল আচরণ করুন। কথাবার্তা বলার সময় আয়নায় চেহারা দেখুন। অতীত থেকে শিক্ষা নিন, ভবিষ্যৎমুখী রাজনীতি করেন এবং জাতীয়তাবাদী দলের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ঐক্যবদ্ধ। যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি সব সময়ই প্রস্তুত। আগামী দিনে মানুষকে, জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বিএনপি সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।’

অনুষ্ঠানে উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আকরাম হোসেন মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন শিল্পী, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজা আহমেদ, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদ খান, পৌর বিএনপির সভাপতি ফরিদ খান, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঐক্যের ভিত্তিতে গণতন্ত্রে ফিরতে হবে
  • একটি দলের কারণে মৌলিক সংস্কার আটকে যাচ্ছে: আখতার
  • গণভবন জয় করেছি, সংসদও জয় করব: নাহিদ ইসলাম
  • আবু সাঈদ, মুগ্ধ বা ওয়াসিমরা রক্ত দিয়েছে শুধু স্থানীয় নির্বাচনের জন্য না: জাহিদ হোসেন
  • নির্বাচনে যাদের ভরাডুবি হবে, তারাই পিআর পদ্ধতিতে ভোট চায়: সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স
  • ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এরদোয়ানের কপাল খুলে দিতে পারে
  • এ দেশের মানুষ আর কত জীবন দেবে, কত লড়াই করবে: নজরুল ইসলাম
  • ট্রাইব্যুনালে সাজাপ্রাপ্তরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না: অ্যাটর্নি জেনারেল  
  • ট্রাইব্যুনালে সাজাপ্রাপ্তরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না 
  • আইনে অস্পষ্টতার সুযোগে জনগণের ওপর নিপীড়ন চলে: নজরুল ইসলাম খান