উইন্ডোজ ১১ ব্যবহারকারীদের জন্য সুখবর। অপারেটিং সিস্টেমটিতে চলা বিভিন্ন যন্ত্রের জন্য নোটপ্যাড, পেইন্ট ও স্নিপিং টুলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির একাধিক সুবিধা যুক্ত করেছে মাইক্রোসফট। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, নোটপ্যাডে যুক্ত হওয়া ‘রাইট’ সুবিধাটি ব্যবহারকারীদের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে লেখা তৈরি করে দেবে। প্রাথমিকভাবে কোপাইলট প্লাস পিসিতে সুবিধাটি ব্যবহার করা যাচ্ছে।

উইন্ডোজ ইনসাইডার ব্লগে প্রকাশিত তথ্যমতে, নোটপ্যাড ডকুমেন্টের নির্দিষ্ট অংশে নতুন লেখা তৈরি বা আগের লেখা সম্পাদনার কাজে ‘রাইট’ সুবিধা ব্যবহার করা যাবে। নোটপ্যাডের যেকোনো স্থানে কারসর রেখে বা লেখা নির্বাচনের পর ডানে ক্লিক করলেই ‘রাইট’ সুবিধা চালু হবে এবং নির্দেশনা দেওয়ার প্রম্পট উইন্ডো দেখা যাবে।

মাইক্রোসফট পেইন্টে যুক্ত হওয়া ‘স্টিকার জেনারেটর’ সুবিধা কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীরা সহজেই কোনো স্টিকারের বিবরণ লিখে নতুন স্টিকার তৈরি করতে পারবেন, যা ক্যানভাসে বসানো বা অন্য অ্যাপে কপি করে ব্যবহার করা যাবে। এ ছাড়া ‘অবজেক্ট সিলেক্ট’ নামের আরও একটি এআই টুল যুক্ত করা হয়েছে পেইন্টে। টুলটি কাজে লাগিয়ে ছবি আঁকার সময় নির্দিষ্ট অংশ সহজেই নির্বাচন করা যাবে।

স্নিপিং টুলেও যুক্ত হয়েছে নতুন দুটি এআই সুবিধা। এর একটি হচ্ছে ‘পারফেক্ট স্ক্রিনশট’। সুবিধাটি কাজে লাগিয়ে স্ক্রিনশট নেওয়ার সময়ই রেকট্যাঙ্গেল টুল ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত অংশের আকার নির্ধারণ করা যাবে। তবে ব্যবহারকারীরা চাইলে নিজেরাও আকার পরিবর্তন করতে পারবেন। অন্য সুবিধাটি হলো ‘কালার পিকার’। এআই টুলটির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পর্দায় থাকা কারসরের রঙের এইইএক্স, আরজিবি ও এইচএসএল মান দেখা যাবে।

সূত্র: দ্য ভার্জ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ন টপ য ড প ইন ট উইন ড

এছাড়াও পড়ুন:

একাই মাসে শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তৈয়বুর

সুনামগঞ্জে জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে যাঁদের নাম প্রথমেই মনে আসে, তাঁদের একজন তৈয়বুর রহমান (২৬)। তিনি নিজে নিয়মিত রক্ত দেন, রক্ত সংগ্রহ করে দেন এবং মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহিত করেন। রক্তের টানে মানুষের পাশে দাঁড়ানোতেই তাঁর আনন্দ।

একটি বেসরকারি ব্যাংকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রক্তদানের এই মানবিক কাজকে নিজের করে নিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর আগে একাই মানুষের জন্য রক্ত জোগাড় করতেন। এখন তিনি ব্লাড লিংক সুনামগঞ্জ নামের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে কাজের পরিধি বেড়েছে কয়েক গুণ। মাসে একাই শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। সংগঠনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আড়াই হাজারের বেশি রোগীর জন্য রক্ত জোগাড় করে দিয়েছেন। তাঁর কাছে আছে প্রায় এক হাজার রক্তদাতার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও যোগাযোগের তালিকা। সুনামগঞ্জে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী ও সংগঠকেরাও তাঁকে সহযোগিতা করেন।

তৈয়বুর রহমানের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। তিনি ইসলামী ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। রক্তের প্রয়োজনে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ, পরিবহন বা দৌড়ঝাঁপ—সবকিছুর ব্যয়ই মেটান নিজের স্বল্প বেতন থেকে।

রক্তদানের শুরুর স্মৃতি বলতে গিয়ে তৈয়বুর রহমান জানান, ২০২০ সালে তিনি তখন নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। এক সহকর্মীর অনুরোধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য রক্ত দিতে ছুটে যান চাষাড়া এলাকায়। কিন্তু ওজন কম থাকায় রক্ত দিতে পারেননি। পরে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর জন্য আবার হাসপাতালে যান এবং এবার রক্ত দিতে সক্ষম হন। প্রথমে কিছুটা ভয় ভয় ছিল তাঁর। পরে এটা কেটে যায়।

সুনামগঞ্জে বদলি হয়ে ফিরে এসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে থাকেন বলে জানান তৈয়বুর রহমান। নিজের এলাকায় রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার আয়োজন ও সচেতনতা ক্যাম্পেইনও করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন। অধিকাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য। ঈদের দিনও রক্ত দিয়েছেন তিনি। জেলা সদর হাসপাতাল ও শহরের সব বেসরকারি ক্লিনিকেই তাঁর নম্বর আছে। কোনো রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো রোগীর জন্য উপযুক্ত রক্তদাতা খুঁজে বের করা।

তৈয়বুর রহমান বলেন, রক্তদানের পর কিছু পরিবার এখনো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, খবর নেয়। আবার কেউ কেউ রক্ত সংগ্রহে একটু দেরি হলে মনঃক্ষুণ্ন হন। কেউ রক্ত পেয়ে ধন্যবাদ দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেন না। তবু মন খারাপ করেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাহিরপুর উপজেলার এক প্রসূতি বোনকে রক্ত দিয়েছিলাম। এখনো ওই পরিবার যোগাযোগ রাখে। সময়-অসময় খোঁজ নেয়। এটা ভালো লাগে, এটা অন্য রকম রক্তের সম্পর্ক। এই কাজ করে আনন্দ পাই, তৃপ্তি পাই। যত দিন পারি, এই কাজ করে যাব।’

এখন পর্যন্ত ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন তৈয়বুর রহমান

সম্পর্কিত নিবন্ধ