সোনারগাঁয়ের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোনারগাঁ পরিক্রমার উদ্যোগে শনিবার সন্ধ্যায় সোনারগাঁও প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সোনারগাঁ পরিক্রমার প্রধান সম্পাদক আরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সোনারগাঁও সাহিত্য নিকেতনের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হুসাইনের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি শাহেদ কায়েস।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শিশু সাহিত্যিক মোহাম্মদ শাহ আলম, কবি রহমান মুজিব, সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক,  সোনারগাঁও সাহিত্য নিকেতনের সভাপতি আসমা আখতারী, সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অসিত কুমার দাস, সংস্কৃতি কর্মী রিপন ভূঁইয়া, সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি ফজলে রাব্বী সোহেল, অর্থ সম্পাদক মিজানুর রহমান, লিটল ম্যাগাজিন কিনতু’র সম্পাদক হাসান মাহমুদ রিপন, সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের প্রচার সম্পাদক খায়রুল আলম খোকন, সাহিত্যকর্মী গাজী মোবারক, সোনারগাঁও সাহিত্য নিকেতনের অর্থ সম্পাদক সেলিম আহমেদ প্রধান, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মোয়াজ্জেনুল হক,উদিচী শিল্পগোষ্ঠী সোনারগাঁ শাখার সভাপতি শংকর প্রকাশ, সোনারগাঁও সাহিত্য নিকেতনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এরশাদ হুসাইন অন্য, সদস্য ও সাংস্কৃতিকর্মী  দেওয়ান শামসুর রহমান, রোকেয়া আক্তার, সালেহ জুম্মান, মো.

ওয়াসকুরুনী ভূঁইয়া, খাদিজা আক্তার মৌসুমী, শামীমা নাসরিন ও লতা মাহমুদ প্রমূখ।

সেমিনারে সোনারগাঁয়ের শিল্প-সংস্কৃতির বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। বক্তারা বলেন, সোনারগাঁও এক সময় শিল্প-সংস্কৃতিতে বেশ সমৃদ্ধ ছিল। সেই পুরাতন ঐহিত্যকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে সোনারগাঁয়ের সকল সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে এক যোগে কাজ করতে হবে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ স ন রগ রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

এই অপচয় রোধে প্রয়োজন টেকসই পদক্ষেপ

প্রতিবছরের মতো এবার যে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাড়ম্বর আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন ছিল না, এটা ভালো দৃষ্টান্ত। অতীতে এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিয়ে আনুষ্ঠানিকতার নামে সরকারের মাহাত্ম্য প্রচার করা হতো। 

তবে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল খুবই হতাশাজনক।  বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩১০ জন পরীক্ষার্থী। পাস করেছে ১০ লাখ ৬ হাজার ৫৫৪ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৪ লাখ ৭২ হাজার ৪৪৬ জন। পাসের হার ৬৮ দশমিক শূন্য ৪; যা গতবার ছিল ৮৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড যুক্ত করলে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী ৬ লাখের বেশি।  

এই যে জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হলো, এর জন্য তাদের দায়ী করা যায় না। দায়ী হলেন শিক্ষার অভিভাবক বা রক্ষকেরা। বাংলাদেশে যখন যেই সরকার আসে, তাদের মতো করে একটি শিক্ষানীতি বা কমিশন করে। কিন্তু সেই শিক্ষানীতি বা কমিশন শিক্ষার মানোন্নয়নে আদৌ ভূমিকা রাখছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হয় না। 

এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার কম হওয়ার জন্য শিক্ষার অভিভাবকেরা যেসব কারণ চিহ্নিত করেছেন, তাকে ‘ঐচ্ছিক’ হিসেবে ধরে নেওয়া যায়। মূল কারণ তাঁরা এড়িয়ে গেছেন। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, ‘আমাদের কোনো টার্গেট ছিল না যে পাসের হার এত করব, বাড়াব, নাকি কমাব। আমাদের মিশন ছিল পরীক্ষা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা।’ 

সুন্দরভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করা শিক্ষা বোর্ড তথা সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্ব। এতে কৃতিত্ব নেওয়ার কিছু নেই। মূল কথা হলো নীতিনির্ধারকেরা শিক্ষার সমস্যাটি কীভাবে দেখেছেন এবং তার প্রতিকারে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন। করোনার কারণে দুই বছর ঠিকমতো বিদ্যালয়ে পাঠদান হয়নি, এটা সত্য; কিন্তু তার আগে কিংবা পরেও পাঠদান সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছে, এ কথা জোর দিয়ে বলা যায় না। প্রতিটি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর মান যাচাই করার কথা থাকলেও সেটা হয় না। এ কারণেই এসএসসিতে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী অকার্যকর হয়।

আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি, শ্রেণিকক্ষের চেয়ে কোচিং করতে শিক্ষার্থীদের বেশি উৎসাহিত করা হয়। আগে কোচিং সেন্টার ছিল শহরাঞ্চলে, এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলেও প্রসারিত হয়েছে। কোচিং মানে শিক্ষা নয়, পরীক্ষায় কী প্রশ্ন আসবে, কী উত্তর  হবে; সেটা শিক্ষার্থীকে জানিয়ে দেওয়া। বহু বছরের কু–অভ্যাসে আমরা শিক্ষাকে এই স্তরে নিয়ে এসেছি। 

প্রতিটি দেশের একটি শিক্ষা–দর্শন থাকে, যার উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীর মানসিক বিকাশ ও ভবিষ্যতে তাকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা। আমাদের শিক্ষার নীতিনির্ধারকেরা এর ওপর কখনো জোর দেননি।  অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের অনেকের পড়াশোনা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। বিশেষ করে মেয়েশিক্ষার্থীদের। এটা কেবল পরিবার বা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি নয়, মানবসম্পদেরও অপচয়। 

শিক্ষা খাতের প্রতি পূর্বাপর সব সরকারই উদাসীনতা দেখিয়ে আসছে। এমনকি গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আসা সরকারও শিক্ষার প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি। শিক্ষার মানোন্নয়নে সর্বস্তরে মেধাবী শিক্ষকদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, সময়মতো পাঠ্যবইসহ শিক্ষার সব উপকরণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে হবে। আর মেধাবীরা তখনই এই পেশায় আসবেন, যখন সম্মানজনক বেতন–ভাতা পাবেন। 

এসএসসি পরীক্ষায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর অকৃতকার্য হওয়া ঠেকাতে সরকারকে শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি ঠকমতো পাঠদান ও মান যাচাই হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে তদারকি জোরদার করার বিকল্প নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ