সোনারগাঁয়ে শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত
Published: 24th, May 2025 GMT
সোনারগাঁয়ের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোনারগাঁ পরিক্রমার উদ্যোগে শনিবার সন্ধ্যায় সোনারগাঁও প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সোনারগাঁ পরিক্রমার প্রধান সম্পাদক আরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সোনারগাঁও সাহিত্য নিকেতনের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হুসাইনের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি শাহেদ কায়েস।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শিশু সাহিত্যিক মোহাম্মদ শাহ আলম, কবি রহমান মুজিব, সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, সোনারগাঁও সাহিত্য নিকেতনের সভাপতি আসমা আখতারী, সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অসিত কুমার দাস, সংস্কৃতি কর্মী রিপন ভূঁইয়া, সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি ফজলে রাব্বী সোহেল, অর্থ সম্পাদক মিজানুর রহমান, লিটল ম্যাগাজিন কিনতু’র সম্পাদক হাসান মাহমুদ রিপন, সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের প্রচার সম্পাদক খায়রুল আলম খোকন, সাহিত্যকর্মী গাজী মোবারক, সোনারগাঁও সাহিত্য নিকেতনের অর্থ সম্পাদক সেলিম আহমেদ প্রধান, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মোয়াজ্জেনুল হক,উদিচী শিল্পগোষ্ঠী সোনারগাঁ শাখার সভাপতি শংকর প্রকাশ, সোনারগাঁও সাহিত্য নিকেতনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এরশাদ হুসাইন অন্য, সদস্য ও সাংস্কৃতিকর্মী দেওয়ান শামসুর রহমান, রোকেয়া আক্তার, সালেহ জুম্মান, মো.
সেমিনারে সোনারগাঁয়ের শিল্প-সংস্কৃতির বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। বক্তারা বলেন, সোনারগাঁও এক সময় শিল্প-সংস্কৃতিতে বেশ সমৃদ্ধ ছিল। সেই পুরাতন ঐহিত্যকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে সোনারগাঁয়ের সকল সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে এক যোগে কাজ করতে হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ স ন রগ রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
কিছু কর্মকাণ্ডে জনমনে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে: বিএনপি
গত সাড়ে ৯ মাসে জনপ্রত্যাশা বা গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা কতটুকু পূরণ হয়েছে তা বিশাল প্রশ্নের সম্মুখীন বলে মনে করে বিএনপি। দলটির মতে, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরতে শুরু করেছে। অথচ আগামীর বাংলাদেশের মূল চালিকাশক্তি এই ঐক্য বজায় রেখে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সরকারের সাম্প্রতিক কিছু কর্মকাণ্ডে জনমনে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তিন পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যে বিএনপির পক্ষ থেকে এসব কথা তুলে ধরা হয় । প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শনিবার রাতে যমুনায় বৈঠক করেন বিএনপির চার নেতা। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ বৈঠকে যোগ দেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর অগণতান্ত্রিক বর্বরতম ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪–এর জুলাই-আগস্টের রক্তাক্ত ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফ্যসিবাদমুক্ত হয়। গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী সাম্য, মানবিক মর্যাদা, বৈষম্যহীন ও সামাজিক ন্যায় বিচার ভিত্তিক একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে এ দেশের মানুষ আপনার নেতৃত্বে একটি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে।
বিএনপি বলেছে, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দুঃশাসনের পতন হয়েছে, বিজয়ী হয়েছে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান; কিন্তু গত সাড়ে ৯ মাসে জনপ্রত্যাশা বা গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা কতটুকু এর মধ্যে পূরণ হয়েছে তা একটি বিশাল প্রশ্নের সম্মুখীন। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরতে শুরু করেছে। অথচ আগামীর বাংলাদেশের মূল চালিকাশক্তি এই ঐক্যকে বজায় রেখে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের কোনো বিকল্প নেই। এই ঐক্যের স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার অবস্থান বজায় রাখার কথা। কোনো মহলের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এজেন্ডা যেন সরকারের কর্মপরিকল্পনার অংশ না হয়, সেদিকে সচেতন থাকা উচিত ছিল। এই বক্তব্য বারবার উচ্চারণ করা হয়েছে। অথচ সরকারের সাম্প্রতিক কিছু কর্মকাণ্ডে জনমনে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
মানবিক করিডর এবং চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে উদ্বেগ উঠে এসেছে লিখিত বক্তব্যে। এতে বলা হয়, মানবিক করিডর এবং চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সরকারের বিভিন্ন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে জাতীয় স্বার্থে রক্ষিত হচ্ছে কি না, সেটা সর্বাগ্রে বিবেচনায় নেওয়া দরকার ছিল। এ ছাড়াও এমন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও দীর্ঘমেয়াদি নীতিনির্ধারণী কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন অস্থায়ী সরকারের আছে বলে এ দেশের জনগণ মনে করে না।
লিখিত বক্তব্যে বিএনপি বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত কয়েকজন উপদেষ্টা, যাঁদের বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে, এমন বিতর্কিত উপদেষ্টাদের সরিয়ে দেওয়া দরকার। দেশের নিরাপত্তা–সংশ্লিষ্ট স্পর্শকাতর ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনায় নিয়ে যাতে দেশে অস্থিতিশীল কোনো পরিবেশ সৃষ্টি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে এই বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত কেবল জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার কর্তৃক জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়াই ভালো।
নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত উপদেষ্টাদের অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। লিখিত বক্তব্যে এ বিষয়ে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের যেসব উপদেষ্টারা একটি নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত বলে সবাই জানে ও বোঝে; উপদেষ্টা পরিষদে তাঁদের উপস্থিতি সরকারের নির্দলীয় নিরপেক্ষ পরিচিতিকে ক্রমাগত প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছে বলেই সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাদের অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইতিমধ্যে বিতর্কিত হয়েছেন, সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাঁকে অব্যাহতি দিতে হবে।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি। এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্য বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘সংস্কার সনদ’ তৈরির প্রক্রিয়ার মধ্যেই আলাপ-আলোচনা অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও একই বিষয়গুলো নিয়ে এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে একটি দলের নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি বিএনপি ও সরকারকে বিব্রত করে।
সার্চ কমিটির মাধ্যমে আইনানুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠিত হলেও একটি মহল নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন চায় বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়, সরকার সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় সব ক্ষেত্রে বিএনপির মতামত না নিলেও নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে সব পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করে এই কমিশন গঠন করেছে; কিন্তু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র-সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতের রায় অনুযায়ী গেজেট নোটিফিকেশন করায় নির্বাচন কমিশনকে অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। সরকার শিগগিরই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ গ্রহণ করানোর ব্যবস্থা নেবে এমনটা আশা করে বিএনপি। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার পক্ষপাতমূলক আচরণ সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করছে।
আরও পড়ুনপ্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বকে অকুন্ঠ সমর্থন জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো১ ঘণ্টা আগেবিএনপির লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জুলাই-ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে মানুষের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার ও মানবাধিকারসহ ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাশিগগির সম্ভব জন–আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তাই একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে একটি জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। এই সর্বোচ্চ জন–আকাঙ্ক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানতম এজেন্ডা হওয়া উচিত বলে জনগণ মনে করে। এর অন্যথা হলে জনগণের দল হিসেবে বিএনপির পক্ষে এই সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
জন–আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সরকারের যা করণীয়, তা যথাসময়ে না করে চাপের মুখে করার সংস্কৃতি ইতিমধ্যেই সরকারের সক্ষমতা ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়। এই অনভিপ্রেত ও বিব্রতকর পরিস্থিতির দায় পুরোটাই সরকারের বলে বিএনপি মনে করে। যেহেতু সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই সংস্কার ও নির্বাচনপ্রক্রিয়া দুটোই একই সঙ্গে চলতে পারে। পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি ও ব্যক্তির অর্থাৎ দল এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারপ্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
আরও পড়ুননির্বাচন ও সংস্কারের ‘রোডম্যাপ’ দরকার: যমুনা থেকে বেরিয়ে জামায়াতের আমির৪ ঘণ্টা আগেবিএনপির লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা যে বিষয়গুলো এই পত্রে উল্লেখ করেছি, সেগুলো আমাদের আগের প্রস্তাব ও পরামর্শের মত উপেক্ষিত হলে তা হবে দুর্ভাগ্যজনক এবং অনিবার্যভাবেই তা আমাদের সরকারকে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে পরামর্শ দিতে নিরুৎসাহিত করবে।’
দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধকল্পে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের মধ্যে রাখতে, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্যে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে সরকার ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে—বিএনপির পক্ষ থেকে এমন প্রত্যাশার কথা বলা হয়েছে, লিখিত বক্তব্যে তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুনছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতে বলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক: নাহিদ১ ঘণ্টা আগে