মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতা ও নিপীড়নের মুখে পালিয়ে গত ১৮ মাসে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ আশ্রয় নিয়েছে। নতুন আসা বেশির ভাগই নারী ও শিশু। গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, রাখাইনে চলমান সহিংসতা, নিপীড়ন ও সংঘাত হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে আবার বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য করছে। কয়েক মাস ধরে তাদের এই আগমনের প্রবাহ ২০১৭ সালের পর সবচেয়ে বড়। সে বছর দমনপীড়নের মুখে ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
ইউএনএইচসিআর বলছে, বাংলাদেশ উদারভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। কক্সবাজারে মাত্র ২৪ বর্গকিলোমিটারে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয়
নিয়েছে। গত দেড় বছরে যুক্ত হয়েছে আরও দেড় লাখ। ফলে এলাকাটি বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ স্থানের একটিতে পরিণত হয়েছে।
নতুন করে বাংলাদেশে আসা এসব রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার জনের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর। ধারণা করা হচ্ছে, আরও অনেকে এরই মধ্যে জনাকীর্ণ শিবিরে অনানুষ্ঠানিকভাবে বসবাস করছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন আগতরা মূলত শিবিরে বসবাসরত মানুষের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। এ কারণে খুবই সীমিত সম্পদের ওপর চাপ পড়েছে। দ্রুত অর্থ সহায়তা না পেলে খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা এবং রান্নার জ্বালানি সরবরাহ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে থমকে যাবে। বৈশ্বিক অর্থায়নের তীব্র সংকটের কারণে নতুন আগত এবং আগে থেকে অবস্থানরতদের গুরুত্বপূর্ণ চাহিদাগুলো পূরণ না-ও হতে পারে। এ ছাড়া পুরো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য অপরিহার্য সেবা ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
ইউএনএইচসিআর বলছে, শিগগিরই অতিরিক্ত তহবিল নিশ্চিত না হলে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে এবং জরুরি রান্নার জ্বালানি (এলপিজি) ফুরিয়ে যাবে। ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য সহায়তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার শিশু (যাদের মধ্যে ৬৩ হাজারই নতুন আসা), তারা শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ছিটকে পড়বে।
রোহিঙ্গারা ইতোমধ্যে সহায়তা কমে যাওয়ার তীব্র প্রভাব টের পাচ্ছে। তারা আশঙ্কা করছে, সামনে আরও কাটছাঁট আসছে। এতে হতাশা ও উদ্বেগ বেড়ে যাচ্ছে এবং কিছু রোহিঙ্গা নিরাপত্তা ও পরিবারের জন্য আরও উন্নত জীবনের সন্ধানে বিপজ্জনক সাগরপথে অন্য দেশে পাড়ি জমাচ্ছে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বর্তমানে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নজরদারিতে রয়েছে। মিয়ানমারে সংঘাত অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ চালিয়ে যাচ্ছে ইউএনএইচসিআর, যাতে সংঘাত থেকে পালিয়ে আসা বেসামরিক মানুষদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় ও আশ্রয়প্রার্থীর মর্যাদা নিশ্চিত করার সুযোগ দেওয়া হয়।
ইউএনএইচসিআর আরও বলছে, কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদার সহায়তা রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তবে অর্থায়ন ঘাটতির কারণে শরণার্থী সংকট মোকাবিলার প্রতিটি ক্ষেত্রই এখন প্রভাবিত হচ্ছে।
ইউএনএইচসিআর এবং মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলো, যারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে রাখাইনে নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা না আসা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষাকারী সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
২৫ রাজনৈতিক দলের যেসব নেতারা অংশ নিলেন
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা যোগ দেন। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেন তারা।
অনুষ্ঠানে ২৫টি রাজনৈতিক দলের নিম্নোক্ত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
১। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি
ড. রেদোয়ান আহমেদ, মহাসচিব
ড. নেয়ামূল বশির, প্রেসিডিয়াম সদস্য।
আরো পড়ুন:
জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি যেসব দল
জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনীতিবিদেরা
২। খেলাফত মজলিস
মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ, আমীর, খেলাফত মজলিস
ড. আহমদ আবদুল কাদের, মহাসচিব, খেলাফত মজলিস।
৩। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন
হাসনাত কাইয়ুম, প্রধান সমন্বয়ক
সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন, মিডিয়া সমন্বয়ক।
৪। আমার বাংলাদেশ পাটি (এবি পার্টি)
মোহাম্মদ মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু, চেয়ারম্যান
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, সাধারণ সম্পাদক।
৫। নাগরিক ঐক্য
মাহমুদুর রহমান মান্না, সভাপতি
শহীদুল্লাহ কায়সার, সাধারণ সম্পাদক।
৬। জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)
ববি হাজ্জাজ, চেয়ারম্যান
মোমিনুল আমিন, মহাসচিব।
৭। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব
সালাহউদ্দিন আহমেদ, সদস্য, জাতীয় স্থায়ী কমিটি।
৮। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, সিনিয়র নায়েবে আমীর
মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, মহাসচিব।
৯। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির
মিয়া গোলাম পরওয়ার, সেক্রেটারী জেনারেল।
১০। গণসংহতি আন্দোলন
জোনায়েদ সাকি, প্রধান সমন্বয়কারী
আবুল হাসান রুবেল, নির্বাহী সমন্বয়কারী।
১১। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)
শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, সাধারণ সম্পাদক
মিসেস তানিয়া রব, সিনিয়র সহ-সভাপতি।
১২। গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি)
নুরুল হক নুর, সভাপতি
মো. রাশেদ খাঁন, সাধারণ সম্পাদক।
১৩। বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
সাইফুল হক, সাধারণ সম্পাদক
বহ্নিশিখা জামালী, রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য।
১৪। জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, সমন্বয়ক, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও চেয়ারম্যান, এনপিপি
বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, সভাপতি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা।
১৫। ১২ দলীয় জোট
শাহাদাত হোসেন সেলিম, মুখপাত্র, ১২ দলীয় জোট ও চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ এলডিপি।
১৬। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
১৭। গণফোরাম
বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ অ্যাডভোকেট, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি
ডা. মো. মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক।
১৮। জাকের পাটি
আলহাজ্ব শহীদুল ইসলাম ভুইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান
জহিরুল হাসান শেখ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, গাজীপুর জেলা ছাত্রফ্রন্ট।
১৯। জাতীয় গণফ্রন্ট
আমিনুল হক টিপু বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক
মঞ্জুরুল আরেফিন লিটু বিশ্বাস, সদস্য কেন্দ্রীয় কমিটি।
২০। বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি
মাওলানা আবদুল মাজেদ আতহারী, সিনিয়র নায়েবে আমির
মাওলানা মুসা বিন ইযহার, মহাসচিব।
২১। বাংলাদেশ লেবার পার্টি
ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, চেয়্যারম্যান
খন্দকার মিরাজুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।
২২। ভাসানী জনশক্তি পার্টি
বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম (বাবলু), চেয়ারম্যান
ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ (সেলিম), মহাসচিব।
২৩। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ
মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, সহ-সভাপতি
মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মহাসচিব।
২৪। ইসলামী ঐক্যজোট
মাওলানা আব্দুল কাদের, চেয়ারম্যান
মুফতী সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মহাসচিব।
২৫। আমজনতার দল
কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, সভাপতি
মো. তারেক রহমান, সাধারণ সম্পাদক।
এছাড়াও শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান এবং শহীদ তাহির জামান প্রিয়র মা শামসী আরা বেগম জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/আসাদ/নঈমুদ্দীন/সাইফ