সেই সংঘর্ষের পর কুয়েটে ৫ মাস ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ
Published: 12th, July 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষকরা ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। টানা প্রায় পাঁচ মাস ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চতায় পড়েছে।
গত মার্চে ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার কথা ছিল। তারা সবাই এখন হতাশ। সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরাও। এরই মধ্যে উপাচার্য না থাকায় গত ২২ মে থেকে স্থবির আর্থিক কর্মকাণ্ড। ৪৬৬ শিক্ষক, ২৩২ কর্মকর্তা ও ৪২৯ কর্মচারীর কেউ মে-জুনের বেতন এবং ঈদ বোনাস পাননি। বিল আটকে থাকায় চলমান উন্নয়ন কাজ বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদাররা।
উপাচার্য নিয়োগের আগ পর্যন্ত আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলমান রাখার স্বার্থে বিকল্প নির্দেশনা চেয়ে শিক্ষা উপদেষ্টাকে গত ২২ জুন চিঠি দেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি।
সেশনজট নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীর পক্ষে আমরা বারবার শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। ভুল হলে সন্তান মাফ চাইলে বাবা কি করেন না? কিন্তু শিক্ষকরা তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। পাঁচ মাসের অচলাবস্থায় সেশনজট বাড়ছে। বুয়েট ও রুয়েট থেকে এগিয়ে থেকেও এখন পিছিয়ে পড়ছি।’
অনেক অভিভাবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুয়েটের অচলাবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে পোস্ট দিচ্ছেন। শিক্ষকদের অনেকেই ক্লাসে না ফিরতে শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্তকে অবিবেচনাপ্রসূত বলে মন্তব্য করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) শিক্ষক নেতাদের ক্লাসে ফেরার অনুরোধ জানালেও কাজ হয়নি।
জানতে চাইলে কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফারুক হোসেন বলেন, ‘কুয়েটে এখন কোনো অভিভাবক নেই। আমরা কার সঙ্গে দাবি নিয়ে আলোচনা করব? আগে উপাচার্য নিয়োগ হোক, এর পর শিক্ষক লাঞ্ছনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের শাস্তি কার্যকরে আলোচনায় অগ্রগতি হলে আমরা ক্লাসে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
কুয়েট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী বাদশা মো.
ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল নেতাকর্মী ও বহিরাগতদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক আহত হন। ওই রাতেই হামলাকারীদের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ তুলে তৎকালীন উপাচার্যসহ কয়েক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২৫ এপ্রিল উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ১ মে মন্ত্রণালয় চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক হযরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ দেয়।
লাঞ্ছনার ঘটনায় ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রমে না ফিরে শিক্ষকরা আন্দোলন শুরু করেন। পরে গত ২২ মে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক হযরত আলী পদত্যাগ করেন। এর পর থেকে উপাচার্য এবং ২৫ এপ্রিল থেকে উপ-উপাচার্যের পদ শূন্য রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপ চ র য ন য় গ প রক শ
এছাড়াও পড়ুন:
সেই সংঘর্ষের পর কুয়েটে ৫ মাস ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষকরা ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। টানা প্রায় পাঁচ মাস ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চতায় পড়েছে।
গত মার্চে ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার কথা ছিল। তারা সবাই এখন হতাশ। সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরাও। এরই মধ্যে উপাচার্য না থাকায় গত ২২ মে থেকে স্থবির আর্থিক কর্মকাণ্ড। ৪৬৬ শিক্ষক, ২৩২ কর্মকর্তা ও ৪২৯ কর্মচারীর কেউ মে-জুনের বেতন এবং ঈদ বোনাস পাননি। বিল আটকে থাকায় চলমান উন্নয়ন কাজ বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদাররা।
উপাচার্য নিয়োগের আগ পর্যন্ত আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলমান রাখার স্বার্থে বিকল্প নির্দেশনা চেয়ে শিক্ষা উপদেষ্টাকে গত ২২ জুন চিঠি দেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি।
সেশনজট নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীর পক্ষে আমরা বারবার শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। ভুল হলে সন্তান মাফ চাইলে বাবা কি করেন না? কিন্তু শিক্ষকরা তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। পাঁচ মাসের অচলাবস্থায় সেশনজট বাড়ছে। বুয়েট ও রুয়েট থেকে এগিয়ে থেকেও এখন পিছিয়ে পড়ছি।’
অনেক অভিভাবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুয়েটের অচলাবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে পোস্ট দিচ্ছেন। শিক্ষকদের অনেকেই ক্লাসে না ফিরতে শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্তকে অবিবেচনাপ্রসূত বলে মন্তব্য করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) শিক্ষক নেতাদের ক্লাসে ফেরার অনুরোধ জানালেও কাজ হয়নি।
জানতে চাইলে কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফারুক হোসেন বলেন, ‘কুয়েটে এখন কোনো অভিভাবক নেই। আমরা কার সঙ্গে দাবি নিয়ে আলোচনা করব? আগে উপাচার্য নিয়োগ হোক, এর পর শিক্ষক লাঞ্ছনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের শাস্তি কার্যকরে আলোচনায় অগ্রগতি হলে আমরা ক্লাসে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
কুয়েট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী বাদশা মো. হারুণ বলেন, ‘ঈদ বোনাস হয়নি। দুই মাসের বেতন বন্ধ থাকায় সবাই আর্থিক কষ্টে রয়েছে। ইউজিসি থেকে বলা হচ্ছে, দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ হবে। কিন্তু কবে নিয়োগ, কবে সংকট কাটকে, তা আমরা কেউই জানি না।’
ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল নেতাকর্মী ও বহিরাগতদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক আহত হন। ওই রাতেই হামলাকারীদের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ তুলে তৎকালীন উপাচার্যসহ কয়েক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২৫ এপ্রিল উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ১ মে মন্ত্রণালয় চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক হযরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ দেয়।
লাঞ্ছনার ঘটনায় ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রমে না ফিরে শিক্ষকরা আন্দোলন শুরু করেন। পরে গত ২২ মে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক হযরত আলী পদত্যাগ করেন। এর পর থেকে উপাচার্য এবং ২৫ এপ্রিল থেকে উপ-উপাচার্যের পদ শূন্য রয়েছে।