এনসিসি’র জবাবদিহিতার সুনির্দিষ্ট কাঠামো নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ
Published: 18th, June 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, “জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলকে (এনসিসি) সাংবিধানিকভাবে বিপুল ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হলেও তাদের জবাবদিহিতার সুনির্দিষ্ট কাঠামো নেই, যা গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থি।”
বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “রাষ্ট্রপতিকে প্রধান করে ৯ সদস্যের জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত কাউন্সিল গঠনে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, উচ্চ ও নিম্নকক্ষের স্পিকার, বিরোধী দলের নেত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং বিরোধী দল মনোনীত ডেপুটি স্পিকারের অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠানে যদি অথরিটি ও ফাংশন থাকে কিন্তু জবাবদিহিতা না থাকে, সেই প্রতিষ্ঠান গণতন্ত্রবিরোধী হয়ে ওঠে। এই ফাংশনগুলো আলাদা করে নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরির মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভারসাম্য নষ্ট হবে।”
আরো পড়ুন:
কুমিল্লায় এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী বললেন, ‘আমি ৩৫ বছর ধরে বিএনপি করি’
ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি
বিএনপির এই নেতার মতে, রাষ্ট্র পরিচালনার ভারসাম্যমূলক কাঠামো গড়ে তুলতে হলে প্রথমে নির্বাহী বিভাগ এবং সংসদকে স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ থেকে বের করে আনতে হবে। এজন্য প্রয়োজন স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ও কার্যকর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার কথা জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকলে অতীতের অনেক নির্বাচনের অনিয়ম রোধ করা যেত। কেয়ারটেকার সরকার ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন থাকলেই নির্বাহী বিভাগ ও সংসদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা সম্ভব।”
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির অবস্থান:
বর্তমান সংসদীয় ব্যবস্থায়, জাতীয় সংসদের সদস্যদের ভোটেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মনে করে বিএনপি। ৭০ হাজার স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিকে ভোটার করে নির্বাচন করার প্রস্তাব তাদের কাছে এখনই গ্রহণযোগ্য নয়।
এবিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “ভবিষ্যতে যদি সংসদীয় আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সমঝোতা হয়, তখন তা বিবেচনার বিষয় হতে পারে।”
নির্বাচন কমিশন বিষয়ে সালাহউদ্দিন জানান, বর্তমানে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যে আইন রয়েছে, সেটি দুর্বল এবং অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের অনুপযুক্ত। সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন এখন কার্যকর হলেও ভবিষ্যতের জন্য শক্তিশালী আইন প্রণয়নের আহ্বান জানান তারা।
তিনি প্রস্তাব করেন, নির্বাচন কমিশনের জবাবদিহিতা আইনের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিশনারদের অপসারণের বিধান থাকলেও আরো কিছু খুঁটিনাটি আইন তৈরি করতে হবে, যেন মিসকন্ডাক্ট বা অপব্যবহারের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়।
মানবাধিকার কমিশন, দুদকসহ অন্যান্য সাংবিধানিক ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জন্যও শক্তিশালী, স্বচ্ছ ও কার্যকর আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
দুদকের বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, “বর্তমান আইনের দুর্বলতা ও রাজনৈতিক প্রভাবে দুদক দুর্নীতির অংশ হয়ে গেছে। সেজন্য তাদের জন্য পৃথক, শক্তিশালী ও স্বচ্ছ আইন দরকার।”
ঢাকা/রায়হান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র ষ ট রপত প রস ত ব ক উন স ল ব যবস থ ব এনপ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব