নোয়াখালীতে বৃষ্টির পরিমাণ কমেছে। এর ফলে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনার কারণে পানি ধীরগতিতে নামছে। এ কারণে বৃষ্টি কমলেও শহরের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ কমেনি। জেলা শহর মাইজদীসহ বিভিন্ন উপজেলার নিচু এলাকার বেশির ভাগ রাস্তাঘাট এখনো পানির নিচে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহর মাইজদীর লক্ষ্মীনারায়ণপুর, সেন্ট্রাল রোড, জেলা জজ আদালত সড়ক, সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা, দরগাবাড়ি, সরকারি মহিলা কলেজ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এলাকায় জলাবদ্ধতা আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। তবে এখনো বেশির ভাগ সড়কে পানি আছে। এসব পানি মাড়িয়ে নিত্যদিনের কাজ করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা বের হচ্ছেন। বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতার কারণে সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙেছে। এতে গাড়ি চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা মোশারফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যার পর আজ সকাল পর্যন্ত তেমন বৃষ্টি হয়নি। তবে এখনো রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন বাসাবাড়ির আঙিনায় পানি আছে। এ কারণে তাঁদের দুর্ভোগ কমেনি। পানিতে ডুবে থাকা ভাঙাচোরা রাস্তায় চলতে গিয়ে তাঁদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

দরগাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা রোজিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে তিন দিন ঘর থেকে বের হতে পারেননি। অল্প বৃষ্টিতে তাঁদের এলাকায় পানি জমে। পানিও নিষ্কাশন হয়নি। এর ফলে এলাকার শতাধিক পরিবার কার্যত পানিবন্দী অবস্থায় আছে।

জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক মো.

আজরুল ইসলাম আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, লঘুচাপের প্রভাবে সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। এখন বৃষ্টিপাত কিছুটা কমবে। তবে বর্ষায় স্বাভাবিক যে বৃষ্টিপাত হয়, সেটি হবে। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত) জেলা শহর মাইজদীতে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে; যা আগের ২৪ ঘণ্টায় ছিল ২০৮ মিলিমিটার। তিনি বলেন, বৃষ্টি কমলেও জলাবদ্ধতা কমেনি। তাঁদের কার্যালয়ের সামনেও হাঁটুপানি।

জলাবদ্ধতার বিষয়ে জেলা পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক জালাল উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, জলাবদ্ধতা দূর করতে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পানি চলাচলের পথগুলো সচল করে দিয়েছেন। দ্রুতই জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে তিনি আশা করছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

উপদেষ্টাকে দুর্গত এলাকা সফর ক‌রে ব্যবস্থা নেওয়ার দা‌বি এবি পার্টির

দুর্যোগ ব‍্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীকের সাথে সাক্ষাৎ করে সাম্প্রতিক বন্যায় উদ্বেগ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সচিবালয়ে উপদেষ্টার দপ্তরে দেখা করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এই অনুরোধ জানান।

এই সময় ফেনী জেলার সদর উপজেলা, পরশুরাম, ফুলগাজী ও সোনাগাজী এবং নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও পিরোজপুর জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল এবং আকস্মিক বন‍্যা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে, দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

মজিবুর রহমান মঞ্জু ত্রাণ উপদেষ্টাকে দুর্যোগ কবলিত এলাকা পরিদর্শনের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “গত বছরের বন্যার পর যথাসময়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারলে এবার আকস্মিক বন্যার কবলে পড়তে হত না।”

মুছাপুর ক্লোজার এবং বল্লামুখা বাঁধ পুনর্নির্মাণে সরকারের অবস্থান জানতে চান মঞ্জু। এছাড়া পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত ও বাধাহীন করার ওপর গুরুত্ব দেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ও বন্যা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অনিয়ম হলে সেগুলো তদন্ত করে বের করা দরকার।”

২৪শের বন্যার পর সরকারের বরাদ্দ দেওয়া বিপুল অংকের টাকা যথাযথভাবে কাজে লাগানোর নিশ্চয়তা চান এবি পার্টির চেয়ারম্যান।

জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতায় কোন ঘাটতি নেই, উপজেলা পর্যায়ে যথেষ্ট ত্রাণসামগ্রী মজুত আছে।”

তিনি জেলা প্রশাসকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন এবং প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান। বাকি দাবিগুলোর সাথে একমত পোষণ করে উপদেষ্টা বলেন, “এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রধান উপদেষ্টার সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বৃষ্টি কমে আসলে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করে প্রয়োজনীয় পুনর্বাসন কার্যক্রম হাতে নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি। যাদের কৃষি জমি ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে ক্ষতিপূরণের বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ